কোভিড, মাঙ্কিপক্স, যুদ্ধ নিয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বিশ্ব : ডব্লিউএইচও

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২২, ১৬:৩৪

সাহস ডেস্ক

মহামারি করোনা, ইউক্রেন যুদ্ধ ও মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্ব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। রবিবার (২২ মে) জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্থার প্রধান এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিই এখন শুধু বিশ্বের একমাত্র সংকট নয়।’

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা আফ্রিকার বাইরে ১৫টি দেশে মাঙ্কিপক্স দেখা দেওয়ায় এ নিয়ে জেনেভায় ডব্লিউএইচওর প্রধান আসন্ন চ্যালেঞ্জের বিষয়ে মন্তব্য করেন। টেড্রোস বলেন, 'অবশ্যই করোনা মহামারি বিশ্বের একমাত্র সমস্যা নয়। জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে রোগ, খরা, দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধের এক ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা।' 

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘কঙ্গোতে ইবোলার প্রাদুর্ভাব, মাঙ্কিপক্স এবং আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইউক্রেন ও ইয়েমেনে জটিল মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশগুলোতে ক্ষুধা, দারিদ্র্যসহ চরম মানবিক সংকটের মধ্য যাচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে শিশুরা।’ এছাড়াও মাঙ্কিপক্স সমকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্স একটি বিরল ভাইরাল সংক্রমণ। যা সাধারণত মৃদু হয়। বেশিরভাগ আক্রান্ত ব্যক্তি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। ভাইরাসটি খুব সহজে মানুষের মধ্যে ছড়ায় না এবং ব্যাপক হারে মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব কম।

এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের নির্দিষ্ট ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতিও নেই। পরিসংখ্যান অনুসারে, স্মলপক্সের টিকা ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে কাজ করে।

এরই মধ্যে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলে ৯০ জনেরও বেশি মানুষ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে জনসাধারণের জন্য এখনও ব্যাপক কোনো ঝুঁকি নেই বলেই বলা হচ্ছে।

এদিকে বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন বলেছে, তাদের দেশে মাঙ্কিপক্সের বৃহত্তর প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি কম। ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘মাঙ্কিপক্স’ সংক্রমণের ক্ষেত্রে এমনিতে আইসোলেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে কোভিড সংক্রমণের পর এখন অনেকেরই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। তাই সতর্ক থাকা উচিত।

‘মাঙ্কিপক্স’ মূলত গুটিবসন্ত বা চিকেনপক্স গোত্রেরই রোগ। তবে, এটি গুটিবসন্তের থেকে কম মারাত্মক, মৃত্যুর হার ৪ শতাংশেরও নিচে। বেশিরভাগ রোগীই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে, এর আগে কখনও আফ্রিকার বাইরে মহামারি আকারে এই রোগ ছড়াতে দেখা যায়নি।

ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার পর রবিবার (২২ মে) এই রোগ শনাক্ত করা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যেও। আফ্রিকার বাইরে ‘মাঙ্কিপক্সের’ এই অস্বাভাবিক বিস্তারই উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের। 

সাহস২৪.কম/এআর/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত