১৩ স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ৯ সন্তানের জন্ম

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩:৩৬

অনলাইন ডেস্ক

৫ বছর ধরে ১৩ স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন ইন্দোনেশিয়ার এক বোর্ডিং স্কুলশিক্ষক। ১৩ ভুক্তোভুগিদের মধ্যে ৮ জন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন। তারা ৯ সন্তানের জন্ম দেন। এ ঘটনায় ওই স্কুলশিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির পশ্চিম জাভার বান্দুং জেলা আদালতের একটি বেঞ্চ এই রায় দেয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম হ্যারি উইরাওয়ান। তার বয়স ৩৬ বছর। তিনি ওই স্কুলের মালিক। তিনি ধর্ম পড়াতেন।

২০১৬ সাল থেকে ১১ থেকে ১৬ বছরের ১৩ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন উইরাওয়ান। তাদের মধ্যে আটজন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন। তারা ৯ সন্তানের জন্মও দেন। খবর- বিবিসি।

গত বছরের মার্চে বিষয়টি নজরে আসে। সে সময় অভিভাবকরা বুঝতে পারেন তাদের মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। সব শুনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সে বছর মামলা করেন ভুক্তভোগীদের অভিভাবকরা।

আদালতে আইনজীবীরা জানান, উইরাওয়ান দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি আর নানা প্রণোদনার প্রলোভন দেখিয়ে তার স্কুলে ভর্তি হতে উৎসাহিত করতেন। ওই স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ছাত্রীরা পরিবার থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। কারণ বছরে শুধু একবারই তাদের বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি ছিল। এ ছাড়া তাদের মোবাইল ফোনও জব্দ করে রাখা হতো।

আইনজীবীরা এসব অভিযোগের প্রমাণ দেখিয়ে ওই শিক্ষকের মৃত্যুদণ্ড চান। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ বাবদ ২১ হাজার ডলারের আর্জি জানান। তবে আদালত তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। আর ভুক্তভোগীদের ৫ হাজার ৯৪৫ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেয়।

উইরাওয়ানের মামলাটি ইন্দোনেশিয়ায় যৌন সহিংসতা এবং নারী নির্যাতন প্রশ্নে নতুন ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে যৌন সহিংসতা রোধে আইন কঠোর করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ জন্য একটি বিলের খসড়াও হয়েছিল ২০১৬ সালে। কিন্তু ধর্মীয় নেতাদের বাধার মুখে তা পাস হয়নি। তাদের দাবি, আইনটির অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

ইন্দোনেশিয়ায় ২৫ হাজারের বেশি বোর্ডিং স্কুল আছে। এসব স্কুলে ৫০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।

গত বছর দক্ষিণ সুমাত্রার একটি বোর্ডিং স্কুলের দুই শিক্ষক গ্রেপ্তার হন ২৫ ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে। পূর্ব জাভায় ২০২০ সালে ১৫ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে এক শিক্ষকের ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সূত্র: নিউজ বাংলা।