হাইতির প্রেসিডেন্ট হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যদাতা

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৫:৩৯

সাহস ডেস্ক

হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িসকে হত্যার অভিযানে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন আগে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা যায়।

গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ময়িস হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে সন্দেহজনক গ্রেপ্তার করেছে হাইতির কর্তৃপক্ষ। এ দুজন হাইতিয়ান মার্কিন নাগরিক জোসেফ ভিনসেন্ট (৫৫) ও জেমস সোলাগেসকে (৩৫)। এরা আরও ২৬ কলম্বিয়ানের সঙ্গে যোগ দিয়ে ময়িসের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তারা কলম্বিয়ান ভাড়াটে সেনা যাদের যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাভিত্তিক একটি নিরাপত্তা কোম্পানির মাধ্যমে ভাড়া করা হয়েছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জোভেনেল ময়িস হত্যার সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া একজন হাইতিয়ান মার্কিন নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ডিইএ) সাবেক তথ্যদাতা ছিলেন। তথ্যটি রয়টার্সকে সোমবার ডিইএর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এক ইমেইলের মাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিইএ'র এক কর্মকতা জানান, ময়িস হত্যাকাণ্ডের এক সন্দেহভাজন ডিইএর গুপ্ত তথ্যদাতা ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর ওই সন্দেহভাজন ডিইএর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং ডিইএ তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল।

তবে আটক দুই মার্কিন ব্যক্তির মধ্যে কে ডিইএর তথ্যদাতা ছিলেন তা জানাতে রাজি হননি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মার্কিন কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কে বিবৃতিতে ডিইএ বলেছে, হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িসের হত্যাকাণ্ডের একজন সন্দেহভাজন এক সময় ডিইএর গুপ্ত তথ্যদাতা ছিল। তবে কোনো হামলাকারীই সেই সময় তাদের সংস্থার হয়ে কাজ করছিল না। প্রেসিডেন্ট ময়িসের হত্যাকাণ্ডের পর ওই সন্দেহভাজন তার সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ডিইএতে কর্মরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ডিইএর হাইতি বিষয়ক দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ওই সন্দেহভাজনকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছিল আর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে সে হাইতির সরকারকে তথ্য সরবরাহ করে যা তার আত্মসমর্পণের পাশাপাশি আরেক সন্দেহভাজন ও অন্য আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে সহায়তা করে।

হামলার সময় কিছু হত্যাকারী নিজেদের 'ডিইএ'র এজেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছিল এমন প্রতিবেদনগুলোর বিষয়ে তারা জ্ঞাত আছে বলেও জানান ডিইএ।

প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িসকে হাইতির স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতে তার ব্যক্তিগত বাসভবনে গোপন অভিযান চালিয়ে হত্যা করা হয়। এতে অন্তত ২৮ জন জড়িত ছিলেন বলে হাইতির কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে। 

১২ জুলাই (সোমবার) সংবাদ সম্মেলনে হাইতির পুলিশ প্রধান লিওন চার্লস জানান, ময়িস হত্যার সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ক্রিস্টিয়ান ইমানুয়েল সানোন (৬৩) জুনের প্রথমদিকে একটি ব্যক্তিগত বিমানে সেই ভাড়াটে নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে হাইতিতে আসনে এবং তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন।

জানা যায়, সানোনই ফ্লোরিডাভিত্তিক সিটিইউ সিকিউরিটিকে ভাড়া করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে সানোনকে নিরাপত্তা দিতে সিটিইউয়ের যোগাড় করা রক্ষীদের ভাড়া করা হলেও পরে তাদের লক্ষ্য পাল্টে যায়।

এছাড়াও তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করা ওই ব্যক্তিরা জ্ঞাতসারে তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে জেনেই এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিলেন কিনা তা পরিষ্কার হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত