গাজায় ইসরাইলী হামলায় ২০ জন নিহত

প্রকাশ : ১১ মে ২০২১, ১৩:১৫

সাহস ডেস্ক

ইসরাইল গাজায় সোমবার ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত এবং আরো ৬৫ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নয় শিশু ও সিনিয়র হামাস কমান্ডার রয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষ এ খবর জানায়।

ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসসহ অন্যান্য প্রতিরোধ যোদ্ধারা গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে একের পর এক রকেট ছুঁড়ে মারলে পাল্টা জবাবে ভয়াবহ এ বিমান হামলা চালায় দেশটি।

ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তারা সীমা লংঘন করায় তার দেশ শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এর জবাব দিয়েছে।

নিরাপত্তা প্রধানদের সাথে বৈঠককালে তিনি বলেন, আমাদের মাটি, আমাদের রাজধানী ও আমাদের নাগরিকদের ওপর কোন ধরনের হামলা আমরা সহ্য করবো না। যারা হামলা চালাবে তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।

ইসরাইলী সেনাবাহিনী বলছে, গাজা থেকে ১৫০টি রকেট হামলা চালানো হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

সেনাবাহিনী আরো বলছে, তারা হামাসের দুটি রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র, দুটি সামরিক স্থাপনা, একটি টানেলসহ আরো কিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।

এদিকে হামলায় হামাসের একজন কমান্ডার মোহাম্মদ ফায়িদ নিহত হয়েছে বলে তারা নিশ্চিত করেছে।

গত শুক্রবার থেকে আল আকসা মসজিদকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। মূলত এ থেকেই সংঘাতের সূত্রপাত। আল আকসা প্রাঙ্গণে গত কয়েক দিনে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩শ’রও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানায়, গত কয়েক দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ১৫৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ জেলা থেকে ৭০টির বেশি ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তা নিয়েই সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা শুরু হয়। সোমবার ভোরে আবারও ইসরায়েলি বাহিনী আল আকসায় ঢুকে পড়ে। সেখানে তারা ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও বোমা ছুঁড়েছে। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।

ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের একটি সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের পক্ষে রায় দিয়েছিলো ইসরায়েলি আদালত। এর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টে আপিল শুনানিকে সামনে রেখে দুই পক্ষেও মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে রোববার ওই মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন তারিখ দেওয়া হবে।

পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত। তবে এটি ইহুদিদের কাছেও একটি পবিত্র স্থান, যাকে তারা টেম্পল মাউন্ট হিসেবে জানে।

এদিকে ইসরাইল ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখলে নেয় এবং এই দখলদারিত্ব আরো সম্প্রসারণ করে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মিশর ও কাতার পরিস্থিতি শান্ত করতে উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এর আগেও ইসরাইল হামাস সংঘর্ষ বন্ধে তারা কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছিল।

এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এন্টনি ব্লিংকেন হামাসের রকেট হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা বন্ধের কথা বলেছেন।

তিনি উভয়পক্ষের প্রতি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে গাজার কর্তৃত্বে থাকা হামাস সোমবার মসজিদ প্রাঙ্গন ও পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারা থেকে ইসরাইলী সৈন্য সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা কাশেম ব্রিগেডের এক মুখপাত্র বলছেন, শেখ জারা ও আল আকসা প্রাঙ্গনে ইসরাইলী কর্মকান্ডের জবাবে তারা রকেট হামলা চালাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত