সু চিকে আটক রাখার মেয়াদ বাড়ল

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:২১

সাহস ডেস্ক

মিয়ানমারের সামরিক নেতারা ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির আটকের মেয়াদ বাড়িয়েছে। তার রিমান্ডের সময় সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শেষ হওয়ার কথা ছিল। চলতি মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে লোকজনের যে বিক্ষোভ চলছে তার অন্যতম দাবি হলো সু চির মুক্তি।

সু চি এখন ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রিমান্ডে থাকবেন বলে সু চির দল থেকে তার জন্য নিয়োগ করা আইনজীবী খিন মং জ জানিয়েছেন। তিনি রাজধানী নেপিডোর এক আদালতের বাইরে সংবাদিকদের আটকাদেশ বাড়ানোর এ তথ্য জানান।

সু চিকে আটক রাখার মেয়াদ বাড়ানোর ফলে সেনাবাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মাঝে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। বিক্ষোভকারীরা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এবং বিক্ষোভ দমাতে বড় শহরগুলোতে নিরাপত্তা টহল বৃদ্ধির পরও দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

‘আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দিন’, ‘কে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে?’ এবং ‘মধ্যরাতে অবৈধভাবে জনগণকে গ্রেপ্তার বন্ধ করুন’সহ বিভিন্ন পোস্টার-প্লাকার্ড নিয়ে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডলে’র রাস্তায় মিছিল করেছেন হাজার হাজার প্রকৌশলী।

ইন্টারনেট বন্ধ করায় এবং রাস্তায় সামরিক যান নামার খবরে সোমবার দেশটির সর্বাধিক জনবহুল শহর ইয়াঙ্গুনেও জড়ো হন প্রতিবাদকারীরা।

মিয়ানমারের সেন্ট্রাল ব্যাংক ভবনের বাইরেও জড়ো হন কয়েক শতাধিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারী, যেখানে সেনা সদস্য ও দাঙ্গা পুলিশের পাশাপাশি জল-কামানের ট্রাকও রাখা ছিল। বিক্ষোভকারীরা এ সময় ‘#সাপোর্ট সিডিএম #সেভমিয়ানমার’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আটক হওয়া দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং অন্য বেসামরিক নেতাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য সামরিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা।

মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি বিশেষ অধিবেশনে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উপস্থাপিত মূল প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। কোনো বিরোধিতা ছাড়াই প্রস্তাবটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে পাস হওয়ার পর চীনা রাষ্ট্রদূত চেন জু বলেন, আমাদের সুপারিশগুলো গ্রহণ করার জন্য অংশীদারদের ধন্যবাদ।

তবে চীন এখনও এই পদক্ষেপ থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া সর্বসম্মতিতে গৃহীত এ প্রস্তাবের সাথে সম্পৃক্ত হয়নি চীন ও রাশিয়া। কাউন্সিলের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা না থাকলেও তারা অধিকার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে।

বিশেষ অধিবেশন চলাকালীন মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রস্তাবে বলা হয়, মিয়ানমারে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের ছেড়ে দেয়াসহ নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) প্রধান অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত