মিয়ানমার সামরিক নেতাদের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:১৩

সাহস ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের এক নির্বাহী আদেশকে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাইডেন এই প্রথম নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ প্রয়োগ করলেন।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় সামরিক নেতারা ছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসাও পড়বে। এছাড়া এই পদক্ষেপের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সরকারের এক বিলিয়ন তহবিলেও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হাত দেয়ার পথ বন্ধ করে দেয়া হল।

চলতি সপ্তাহেই নিষেধাজ্ঞার প্রথম লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করবে বাইডেন প্রশাসন জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা কঠোর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমার সরকারের সম্পদ জব্দ করতে যাচ্ছি। তবে স্বাস্থ্যসেবা, সুশীল সমাজসহ যেসব ক্ষেত্রের সঙ্গে মিয়ানমারের জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার বিষয় জড়িত রয়েছে, সেগুলোর প্রতি আমরা সমর্থন জানাব।’

প্রয়োজনে মিয়ানমারের সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বাইডেন।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার দায়ে ইতিমধ্যে মিয়ানমারের বেশ কিছু সামরিক কর্মকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্বহাল এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ বেসামরিক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে বাইডেন বলেন, মিয়ানমারের জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের এ প্রতিবাদ পুরো বিশ্ব দেখছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মিয়ানমারে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বাড়ছে। যারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করছে, তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানান বাইডেন।

বিধিনিষেধ, দমন–পীড়ন, গ্রেপ্তার সত্ত্বেও মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে টানা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অব্যাহত।

প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়া নারীর অবস্থা মুমূর্ষু। তিনি এখন রাজধানী নেপিডোর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। এই নারীর বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন তার বোন। গত মঙ্গলবার নেপিডোতে বিক্ষোভকালে গুলিতে আহত হন ১৯ বছর বয়সী মিয়া থতে থতে খাইং নামের এই নারী। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে।

এদিনের বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে আরও অনেক বিক্ষোভকারী গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। তবে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

বিক্ষোভ দমাতে দেশটির সেনাবাহিনী এখন বিক্ষোভকারীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করছে।

সবশেষ নির্বাচন কমিশনের জন্য কাজ করা কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকারের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার তথ্য পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান হয়। এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী। এই সামরিক অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

সূত্র: বিবিসি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত