ভারতে হিমবাহ ধসে নিহত ১৪, নিখোঁজ ২০০

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৫৭

সাহস ডেস্ক

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডে হিমালয়ের হিমবাহ ধস থেকে সৃষ্ট পানি ও কাদার তোড়ে দুটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রমাণ এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং আরও দুই শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।

রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালের এ ঘটনায় নিখোঁজদের মধ্যে আছেন ১১ জন গ্রামবাসী এবং দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করা প্রায় ১৯০ জন কর্মী। আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ১৭০ জন।

বছর সাতেক আগে ক্লাউড বার্স্ট বা মেঘ ভেঙে বন্যা ও ধসে ভেসে গিয়েছিল উত্তরখণ্ডের একটি বড় এলাকা। এবার মেঘ ভাঙা নয়, হিমবাহ ধসে ভেসে গেলো উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের বিস্তীর্ণ এলাকা। চামোলি জেলার জোশীমঠে অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদীর পানিতে ভেসে গেছে বহু গ্রাম, জনপদ, ব্রিজ, এনটিপিসি-র তপোবন-বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ঋষিগঙ্গায় একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র।

ভিডিওতে দেখা যায়, কর্দমাক্ত ও ধূসর রঙের বানের পানি উপত্যকা দিয়ে গড়িয়ে এসে বাঁধে আঘাত করছে। পরে বাঁধটিকে সহজেই টুকরো করে দিয়ে সেই পানির তোড় নিচে নেমে যায়। এ বন্যার তাণ্ডবে পুরো এলাকা ছাই রঙে ঢেকে যায়।

পর্বতারোহণে বিশেষজ্ঞ সেনাসহ দুই হাজারের অধিক সামরিক, আধাসামরিক ও পুলিশ সদস্য অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন। তারা রাতের বেলাতেও কাজ করছেন।

রবিবার সকালে নন্দা দেবী হিমবাহের একটি অংশ ধসে গেলে এর পেছনে আটকে থাকা পানি ছুটে গিয়ে এ বন্যার সৃষ্টি হয়। পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির ধ্বংসলীলা থেকে বাঁচতে অলকানন্দ ও ধউলিগঙ্গা নদীর তীরের অনেক গ্রাম খালি করে ফেলা হয়।

আধাসামরিক বাহিনী ইন্দো তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশের মুখপাত্র বিবেক পান্ডে জানান, অলকানন্দ নদীর ওপরে থাকা একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস এবং ধউলিগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হিমালয় পর্বতমালা থেকে নেমে আসা এ দুটি নদী এক হয়ে গঙ্গা নদীর সাথে মিশেছে।

বিবেক পান্ডে বলেন, ধউলিগঙ্গা প্রকল্পের দুটি সুড়ঙ্গে কমপক্ষে ৪২ শ্রমিক আটকা পড়েন। একটি সুড়ঙ্গ থেকে ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়। আরেকটির ভেতরে কমপক্ষে ৩০ জন আটকে আছেন।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত  বলেন, উদ্ধারকারীরা সুড়ঙ্গের মুখে যাওয়ার জন্য দড়ি ও শাবল ব্যবহার করেন। তারা কাদামাটি খুঁড়ে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করেন। তবে তারা এখনও আটকা পড়া লোকদের কাছে যেতে পারেননি।

মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াত জানান, কর্তৃপক্ষ সময়মতো ফটক খুলে পানি ছেড়ে দিয়ে ভাটির দিকে থাকা একটি বিদ্যুৎ ইউনিট রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। বানের পানিতে ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সরকারের মুখপাত্র রবি বিজারি জানান। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বিস্তারিত সংখ্যা এবং কোনো বাসিন্দা হতাহত হয়েছেন কি না তা তিনি উল্লেখ করেননি।

রাইনি গ্রামের বাসিন্দা দীনেশ নেগি ফোনে বলেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, পুরো বিষয়টা সকাল ১০টার দিকে শুরু হয়। আমরা দুম করে একটা শব্দ শুনলাম যা আমাদের গ্রাম কাঁপিয়ে দেয়। আমরা বুঝলাম যে খারাপ কিছু একটা হয়েছে। আমরা নদীর ফুঁসে উঠা দেখতে পেলাম।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত