গণপরিবহনে কথা না বলার পরামর্শ

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ০০:৪৪

সাহস ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী মহমারি সৃষ্টিকারি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার হ্রাসে গণপরিবহনে কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন ফ্রান্সের চিকিৎসকরা। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) ফ্রেঞ্চ একাডেমি অব ডক্টরস এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে।

এতে বলা হয় সাবওয়ে, বাস বা অন্যান্য গণপরিবহন যেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হয় না, সেখানে কথা বলা বা ফোন কল করা এড়িয়ে চলা উচিত। গত মে মাস থেকে মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হলেও ভ্রমণকারীরা প্রায়শই ফোনে কথা বলার সময় মাস্ক আলগা করে বা সরিয়ে ফেলেন।

সেই সাথে ফ্রান্সে তৃতীয় দফা লকডাউনসহ আরও কঠোর পদক্ষেপের উপর জোর দিচ্ছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

প্রেসিডেন্ট এমমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দেশটিতে দ্বিতীয় লকডাউনের কার্যকর করলেও ফ্রান্সের হাসপাতালগুলোতে এখন অক্টোবরের তুলনায় আরও বেশি কোভিড রোগী রয়েছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা দেশের অর্ধেকেরও বেশি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) দখল করে রেখেছে।

চলতি মাসে ফ্রান্সে সংক্রমণের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি শনাক্ত হচ্ছেন। বর্তমানে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ অব্যাহত রয়েছে। গত অক্টোবর থেকে রেস্তোঁরা এবং পর্যটন এলাকাগুলো বন্ধ রয়েছে।

দেশটির সরকার এখনও পর্যন্ত নতুন করে সম্পূর্ণ লকডাউন এড়িয়ে চলার চেষ্ঠা করে যাচ্ছে। কারফিউ তুলে নিতে শনিবার ফ্রান্সে বিক্ষোভ দেখা গেছে এবং ভাইরাসের মোকাবিলায় কড়াকড়ি আরোপের পরও টেকনো রাভ পার্টি করার গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ আরও জোড়ালো হতে পারে।

এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ভাইরাসজনিত কারণে ৭২ হাজার ৬৭৪ জন মারা গেছেন।

এদিকে, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ২১ লাখ ৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সেই সাথে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯ কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার অতিক্রম করেছে।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২১ লাখ ৫ হাজার ৫৬ জনে।

এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৩৯৪ জনে।

চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ পর্যন্ত দেশটিতে ২ কোটি ৪৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৪ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৪ লাখ ১৩ হাজার ৯২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত রয়েছে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে। ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকলেও সর্বাধিক মৃতের সংখ্যায় রয়েছে দ্বিতীয়তে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে মোট আক্রান্ত প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩২ জন। ব্রাজিলে মোট শনাক্ত রোগী ৮৭ লাখ ৫৩ হাজারের অধিক এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ২৪৩ জনের।

রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে তালিকার পরবর্তী কয়েকটি দেশ হলো- রাশিয়া (৩৬ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি), যুক্তরাজ্য (প্রায় ৩৫ লাখ ৯৪ হাজার), ফ্রান্স (৩০ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি) ও স্পেন (২৪ লাখ ৯৯ হাজারের বেশি)।

মৃতের দিক দিয়ে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে আছে মেক্সিকো (১ লাখ ৪৬ হাজার ১৭৪ জন)। এরপর যুক্তরাজ্যে ৯৬ হাজার ১৬৬ জন, ইতালিতে ৮৪ হাজার ৬৭৬ জন, ফ্রান্সে ৭২ হাজার ৭৮৮ জন ও রাশিয়ায় ৬৭ হাজার ৩৭৬ জন মারা গেছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত