ভারতে শুরু হয়েছে করোনার টিকাদান কর্মসূচি

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:২৮

সাহস ডেস্ক
দেশটির সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে ৩ হাজার ৬টি টিকাদান কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে শনিবার থেকে ভারতে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ ভ্যাকসিন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন, এই দুটি ভ্যাকসিন নিয়েই ভারতে শুরু হলো টিকাদান কর্মসূচি।

দেশটির সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে ৩ হাজার ৬টি টিকাদান কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম দফায় সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। প্রথম দিনেই ভ্যাকসিন নেবেন প্রায় ৩ লাখ স্বাস্থ্যকর্মী।

কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, টিকাদানে ‘কোউইন’ নামের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক যেখানে টিকা নেয়ার আগে নাম ও পরিচয় নথিভুক্ত করতে হবে সকলকে। ভ্যাকসিনের মজুত, এর প্রতিক্রিয়াসহ এ সংক্রান্ত সব তথ্য সংরক্ষণ এবং নজরদারি করা হবে ওই অ্যাপের মাধ্যমেই।

এছাড়াও ভ্যাকসিন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রদানের জন্য ২৪ ঘণ্টার একটি হেল্পলাইনও চালু করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

কম সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করে নজির গড়ায় গবেষক এবং বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ জানিয়ে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে ভিডিও বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, টিকাদান শুরু হলেও সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বিধিসহ আগের মতোই সকল সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমার অনুরোধ, টিকাদান শুরু হয়েছে বলে মাস্ক খুলে ফেলা বা সামাজিক দূরত্ব বিধি লঙ্ঘনের ভুল করবেন না আপনারা। টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পরেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ দ্বিতীয় ডোজ না নেয়া পর্যন্ত শরীরে পুরোপুরি প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে না।’

এর আগে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশাল টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৩ জানুয়ারি দুটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের প্রস্তুতকৃত এই ভ্যাকসিন দুটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা ডিসিজিআই এর শীর্ষ কর্মকর্তা ড. ভেনুগোপাল সোমানি জানান, উভয় ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজ দেয়া হবে।

২০২১ সালের আগস্টের মধ্যে প্রাথমিক টিকাদান পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, পুলিশ, প্রবীণ নাগরিক এবং অন্যান্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত রোগীসহ দেশটির ৩০০ মিলিয়ন মানুষকে টিকা দেয়া হবে।

ভারতসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই ভ্যাকসিনের এক বিলিয়ন ডোজ তৈরি করতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া। কোভ্যাক্সিন নামে অন্য ভ্যাকসিনটি ভারতেই তৈরি হয়েছে। দেশটির সরকারি চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থার সাথে যৌথ উদ্যোগে এই টিকা তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত