ফিলিস্তিনের জন্যও ভালোবাসা বুকে পুষেছিলেন ম্যারাডোনা

প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৪৮

সাহস ডেস্ক

কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে গোটা পৃথিবী যখন শোকে মুহ্যমান, তখন ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তার সরব সমর্থনের জন্যও বহু লোক তাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। আর্জেন্টিনার প্রাক্তন এই খেলোয়াড় ও বিশ্বকাপজয়ী তারকা কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৬০ বছর বয়সে মারা যান তিনি। কিছুদিন আগে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের একটি হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার দুই সপ্তাহ পরে তার মৃত্যু ঘটে।

জীবদ্দশায় ম্যারাডোনা সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, বামপন্থী সমাজতান্ত্রিক হিসাবে প্রশংসিত হন। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল আন্দোলনের সমর্থক। তিনি যাদেরকে বন্ধু হিসেবে ভাবতেন, তাদের মধ্যে ছিল ভেনেজুয়েলার প্রয়াত নেতা হুগো শ্যাভেজ, কিউবার প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ফিদেল কাস্ত্রো ও বলিভিয়ার ইভো মোরেলেসের নাম।

শ্যাভেজের সঙ্গে একাধিক অনুষ্ঠানে জর্জ বুশবিরোধী জামা পরিহিত অবস্থায় ম্যারাডোনাকে দেখা গেছে। যে বাঁ পায়ের জাদুতে তিনি বিশ্বজুড়ে তুলেছিলেন আলোড়ন, সেই পায়ে খোদাই করেছিলেন ফিদেলের ট্যাটু। আর তার হাতে ছিল বিপ্লবী আর্নেস্তো চে গেভেরার ট্যাটু।

ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি ম্যারাডোনার পরিবার ও ভক্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে। তিনি লিখেছেন, ‘অন্যতম সেরা ফুটবলার ম্যারাডোনার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে ব্যথিত, যিনি ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্য সমর্থনের জন্য পরিচিত ছিলেন।’

২০১২ সালে ম্যারাডোনা নিজেকে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের এক নম্বর ভক্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তাদেরকে সম্মান করি এবং তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমি কোনো ভয় ছাড়াই ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি।’

দুই বছর পর, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গ্রীষ্মকালীন যে আক্রমণে কমপক্ষে ৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল, ম্যারাডোনা তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন এবং ইসরায়েলের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যা করেছে, তা লজ্জাজনক।’

এক বছর পর, গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে, ২০১৫ এএফসি এশিয়ান কাপ চলাকালীন ফিলিস্তিন জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে ম্যারাডোনার।

২০১৮ সালের জুলাইতে রাশিয়ার মস্কোয় একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তার দীর্ঘদিনের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন।

আব্বাসকে জড়িয়ে ধরার একটি ভিডিও ক্লিপ ম্যারাডোনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘মনে মনে আমি একজন ফিলিস্তিনি।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত