আজারবাইজান-তুরস্ক সন্ত্রাসী আক্রমণ চালাচ্ছে: আর্মেনিয়া

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২০, ২০:৩২

সাহস ডেস্ক

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, ‘আমরা আজেরি-তার্কিশ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী আক্রমণের মোকাবিলা করছি। আমার কাছে কোনো সন্দেহ নেই যে এটা আর্মেনীয় গণহত্যা চালানোর এবং তুরস্ক সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের নীতি।’

স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন পাশিনিয়ান।

পাশিনিয়ানের অভিযোগ, ‘তুরস্ক ও আজারবাইজান নাগোরনো কারাবাখ অঞ্চলে যে কার্যক্রম চালাচ্ছে, তা সন্ত্রাসী আক্রমণ। এটি আর্মেনীয় গণহত্যার ধারাবাহিকতার অংশ।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের যুদ্ধ ১০ম দিনে পড়েছে। এখনো পর্যন্ত যুদ্ধ থামার ইঙ্গিত মেলেনি।

মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আজারবাইজান চাইলে নাগোরনো কারাবাখ নিয়ে পারস্পরিক সমঝোতায় আসার কথা ভাবা যেতে পারে।’

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অটোমান তুর্কিদের হাতে বহু আর্মেনীয় নিহত হন। আর্মেনীয়রা একে গণহত্যা আখ্যায়িত করলেও তুরস্ক এ ব্যাপারে বরাবর তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে।

১৯১৪ সালে জার্মানি ও অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের পক্ষ নিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয় তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্য। যুদ্ধ চলাকালে অটোমান কর্তৃপক্ষ আর্মেনীয়দের ‘ঘরের শত্রু’ বলে প্রচারণা চালাতে থাকে। ১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল অটোমান সরকারের শত্রু বলে সন্দেহে আর্মেনীয় সম্প্রদায়ের কয়েক শ নেতা ও বুদ্ধিজীবীকে কনস্টান্টিনোপলে (বর্তমান ইস্তাম্বুল) বন্দী করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের বেশির ভাগকেই হত্যা ও নির্বাসিত করা হয়। আর্মেনীয়রা বলে থাকে, ১৯১৫ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে তাদের ১৫ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়।

তুরস্ক স্বীকার করে যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অটোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে লড়াইয়ে অনেক আর্মেনীয় নিহত হয়েছিলেন। তবে নিহতের সংখ্যা ও গণহত্যার বিষয়টি স্বীকার করেনি দেশটি।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়ার মিত্র আর্মেনিয়া ও তুরস্কের মিত্র আজারবাইজানের মধ্যে সংঘাত চলছে।

নাগোরনো কারাবাখ নিয়ে অনেক বছর ধরে বৈরী সম্পর্ক আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। পার্বত্য অঞ্চল নাগোরনো কারাবাখ সোভিয়েত আমলে আজারবাইজানের অংশ ছিল। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে এক যুদ্ধে আর্মেনিয়ার সহায়তায় জাতিগত আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অঞ্চলটি দখল করে নেয়। দুই দেশের সীমান্তে গত রবিবার ইয়েরেভান ও আজেরি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির পর পরিস্থিতি যুদ্ধাবস্থায় উপনীত হয়।

এর আগে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়া যৌথভাবে মধ্যস্ততার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সূত্র: স্কাই নিউজ, রয়টার্স ও বিবিসি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত