জনগণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহার করছে চীন

প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২০, ১৮:০৭

সাহস ডেস্ক

চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) চীনের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যবেক্ষণে সক্ষম প্রযুক্তি উৎপাদন ও ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কংগ্রেস কমিশন।

ফক্স নিউজে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ইউএস-চায়না ইকোনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের চেয়ারম্যান রবিন ক্লেভল্যান্ড এবং ভাইস চেয়ারম্যান ক্যারোলিন বার্থোলোমিউ বলেন, ‘প্রযুক্তিকে দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার যে পদক্ষেপ চীন নিয়েছে, তা কমিউনিস্ট পার্টিকে টিকিয়ে রাখতে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’

চীন সরকার অত্যাধুনিক নজরদারি ক্যামেরার মাধ্যমে বেইজিংয়ের প্রতিটি কোণ পর্যবেক্ষণ করছে। ফলে ব্যক্তিগত আড্ডায় একটি আধা-রাজনৈতিক পোস্টের কারণেও কেউ একজন তার চাকরি হারাতে পারেন। নিজ বাড়ির সামনেই কোনো কাজের জন্য ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির কারণে পড়তে পারেন আইনি জটিলতায়।

সরকারের উত্সাহের পাশাপাশি বাজারের চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশটিতে নজরদারি প্রযুক্তি পণ্যের উৎপাদনে এগিয়ে এসেছে, যা অন্যতম লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে একাধিক মানবাধিকার কর্মী বলেছেন, বিশেষ করে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর দমন ও নিপীড়নের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এ প্রযুক্তি।

ইন্টেগরেটেড জয়েন্ট অপারেশন্স প্ল্যাটফর্ম (আইজেওপি) নামে একটি সিস্টেম ব্যবহার করছে বেইজিং, যা দেশটির গোটা জনসংখ্যা নিরীক্ষণ করতে সক্ষম।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সামরিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি করপোরেশন এ সিস্টেমটি ডেভেলপ করেছে। ইরাক এবং আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মার্কিন সামরিক বাহিনী তথ্য সংগ্রহ করেছিল, তার অনুকরণে চীন এ প্রযুক্তি তৈরি এবং উন্নত করেছে।

এ প্রযুক্তির সাহায্যে ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিদের বিদেশ ভ্রমণ, মোবাইলে ইন্সটল করা অ্যাপলিকেশন্স, ব্যক্তিগত বার্তায় ব্যবহৃত শব্দ কিংবা কথোপকথন নিরীক্ষা করে তাদের আটক করে রাখতে পারে চীন সরকার।

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইগুর ও অন্য সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীকে নিরীক্ষণ ও নিপীড়নেরও এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেইজিং। এভাবে গোটা জনসংখ্যা পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে যেন স্বাধীনভাবে চিন্তা করেন এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে লক্ষ্যবস্তু বানানো যায়।

এসব প্রযুক্তি মানুষের চেহারা ও মুখের অভিব্যক্তি চিহ্নিত করতে সক্ষম। এতে অনেক ক্ষেত্রেই ডিপ ম্যাশিন লার্নিং এবং সুপারকম্পিউটার টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়।

সূত্র: এএনআই

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত