লেবাননের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার সমন্বয় হওয়া উচিত: ম্যাক্রন

প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২০, ১৮:১১

সাহস ডেস্ক

গত মঙ্গলবার লেবাননের বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আজ পর্যন্ত ১৫৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ছয় হাজারের বেশি মানুষ। আড়াই লাখ মানুষের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।

এ বিস্ফোরণের দুদিন পর গত বৃহস্পতিবার বৈরুত সফরে যান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। সেখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর দ্রুত দেশটির দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে গতকাল রবিবার অনলাইনে সম্মেলন আয়োজন করেন তিনি।

রবিবার (১০ আগস্ট) জরুরি দাতা সম্মেলনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে উদ্বোধনী বক্তব্যে ম্যাক্রন বলেন, ‘জাতিসংঘের মাধ্যমে লেবাননের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার সমন্বয় হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের কাজ হল যত দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সম্ভব মাঠ পর্যায়ে সাহায্যের সমন্বয় করা, যাতে যথাসম্ভব শিগগিরই তা লেবাননের জনগণের কাছে পৌঁছানো যায়।’

বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের জন্য বন্দরের গুদামঘরে দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুদ রাখাকে দায়ী করা হয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ ভয়ানক দাহ্য পদার্থ ছয় বছরেরও বেশি সময় শহরের কেন্দ্রে কোনো নিরাপদ ব্যবস্থা ছাড়াই গুদামঘরে কীভাবে রাখা হল তা নিয়ে দেশটির জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে।

অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের উৎসের নাম প্রকাশ করছে না সরকার। বিবিসি জানায়, মলদোভিয়ান পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি রোসাস ২০১৩ সালের নভেম্বরে ঠিক ওই পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়ে বৈরুতে নোঙর করেছিল। রাশিয়ার মালিকানাধীন জাহাজটি জর্জিয়ার বাটুমি থেকে যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে। সেটির গন্তব্য ছিল মোজাম্বিকের রাজধানী বেইরা। জাহাজটিতে ছিল দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।

পূর্ব ভূমধ্যসাগর দিয়ে যাওয়ার সময় রোসাস জাহাজটিতে কিছু ‘কারিগরি ত্রুটি’ ধরা পড়ে এবং বৈরুত বন্দরে নোঙর করতে বাধ্য হয়। ২০১৫ সালে শিপিংঅ্যারেস্টেডডটকম নামে একটি নিউজলেটারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

ওই প্রতিবেদন লিখেছিলেন জাহাজের কর্মীদের পক্ষের লেবানিজ আইনজীবীরা। বৈরুত বন্দরের কর্মকর্তারা জাহাজটি পরিদর্শন করেন এবং সেটিকে ‘সমুদ্রযাত্রার জন্য নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেন। জাহাজের বেশিরভাগ কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

পাঠানো হয়নি শুধু জাহাজের রুশ ক্যাপ্টেন বরিস প্রোকোশেফ এবং আরও তিনজনকে, যারা ইউক্রেনিয়ান। প্রোকোশেফ বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, ‘জাহাজে লিকেজের সামান্য সমস্যা হচ্ছিল, কিন্তু সমুদ্রযাত্রার জন্য কোনো সমস্যা ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘জাহাজটির মালিক বৈরুত থেকে ভারি যন্ত্রপাতির বাড়তি কিছু মাল আনার জন্য এটি পাঠান। কিন্তু জাহাজের কর্মীরা ওইসব ভারি যন্ত্রপাতি নিরাপদে জাহাজে তুলতে পারেননি। এরপর জাহাজের মালিক বন্দরের ভাড়া দিতে ব্যর্থ হলে লেবানন কর্তৃপক্ষ জাহাজটি জব্দ করে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত