বৈরুত বিস্ফোরণে ১৪১ ফুট গভীর গর্ত

প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২০, ১৭:৪৫

সাহস ডেস্ক

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে রাসায়নিক দ্রব্যের বিস্ফোরণে ১৪১ ফুট (৪৩ মিটার) গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার (৯ আগস্ট) এক বিবৃতিতে শহর নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।

ফ্রান্সের গবেষণা দলের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি। বিধ্বস্ত এলাকায় ফ্রান্সের বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষার রিপোর্ট তুলে ধরে লেবাননের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘বিস্ফোরণ বন্দরে ৪৩ মিটার গভীর খাদ রেখে গেছে।’ বিস্ফোরণস্থলে ফ্রান্সের পাশাপাশি কাজ করছেন কাতার, জার্মানি ও রাশিয়ার উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।

গত মঙ্গলবার বৈরুতের এক গুদামে রাখা ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটে আগুন লেগে এ বিস্ফোরণ হয়। এতে রাজধানী বৈরুতের প্রায় অর্ধেক ধ্বংস হয়ে গেছে।

বিস্ফোরণটি এতই শক্তিশালী ছিল যে ১৬০ কিলোমিটার দূরের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসেও তা অনুভূত হয়েছে। মার্কিন ভূপদার্থ ইন্সটিটিউটের তথ্যমতে, এই বিস্ফোরণে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বৈরুতের এই বিস্ফোরণে ৬ হাজারেরও অধিক মানুষকে আহত করেছে। কেড়ে নিয়েছে ১৫৮ জনের প্রাণ। নিখোঁজ আছে ৬০ জন। শহরের ৩ লাখ মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করছেন।

২০০৫ সালে সাবেক লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরিকে এক ভয়াবহ বোমা হামলায় হত্যা করা হয়। সেই বিস্ফোরণে ১০ মিটারের গর্ত সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনা তার থেকেও কয়েকগুণ শক্তিশালী।

ব্রিটিশ একদল গবেষকের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার ১০ শতাংশ শক্তিশালী ছিল।

সমসাময়িক ইতিহাসে পারমাণবিক বোমা ছাড়া এত বড় বিস্ফোরণ দেখেনি বিশ্ব। এতে যে শক ওয়েভ তৈরি হয়েছে, তা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ শক্তিশালী ছিল।

দুই হাজার টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সংরক্ষণের গুদামে বিস্ফোরণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষুব্ধ বহু লেবানিজ নাগরিক। এই বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ছয় বছর আগে একটি জাহাজ থেকে জব্দ করা হয়েছিল, তবে কখনও স্থানান্তর করা হয়নি।

বন্দরের এই বিস্ফোরণ শহরের একটি অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে, যা সরকারের প্রতি মানুষের অবিশ্বাসকে আরও গভীর করে তোলে।

সূত্র: এএফপি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত