‘করোনা হালকাভাবে নিলে আফসোস করার জন্য জীবিতই থাকবেন না’

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২০, ১৮:৪০

সাহস ডেস্ক

নিউইয়র্কের তরুণদের উদ্দেশ্য করে রাজ্য গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই, নিলে আফসোস করার জন্য হয়তো জীবিতই থাকবেন না।’

কুমো বলেন, ‘পানশালা ও রেস্টুরেন্টে ভিড় কমাতে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। অঙ্গরাজ্য পুলিশ টাস্কফোর্স গঠন করে রাজ্যের মাদক সংস্থার সমন্বয়ে অনুসন্ধান করবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন অমান্যকারী পানশালা ও রেস্টুরেন্ট বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

করোনা পরিস্থিতিতে নিউইয়র্ক নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তরুণদের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জানিয়ে কুমো বলেন, ‘এখন অন্য এক নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তা হচ্ছে তরুণদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেছে।’ বিষয়টিকে হুমকি হিসেবে দেখছেন তিনি।

গভর্নর জানিয়েছেন, অঙ্গরাজ্যে এখন করোনায় সংক্রমিতের হাসপাতালে ভর্তি আরও হ্রাস পেয়েছে। রাজ্যের হাসপাতালগুলোয় এখন ৭০৬ জন করোনা রোগী ভর্তি আছে। গত ১৮ মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত নিউইয়র্কের হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা কোনো সময়ই এত কম ছিল না।

২২ জুলাই অঙ্গরাজ্যজুড়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন ২১ জুলাই নয় জনের মৃত্যু হয়েছে। আর করোনায় তিন দিনের গড় মৃত্যু ছিল ৮ জন। যেখানে এই অঙ্গরাজ্যে গত এপ্রিল মাসে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে গড়ে দৈনিক ৭৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল, ২২ জুলাই ৬৯ হাজার ৬৯৮ জনের পরীক্ষা করে ৮১১ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ সংক্রমণের হার এখন ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।

২৩ জুলাইর ব্রিফিংয়ে কুমো বলেন, ‘আমাদের সব কটি সংখ্যা ভালোই দেখাচ্ছে। এখন আমাদের জন্য হুমকি হচ্ছে অন্য অঙ্গরাজ্যের করোনা পরিস্থিতি। ৩৯ অঙ্গরাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিউইয়র্ক এই মুহূর্তে দ্বিতীয় একটি হুমকিও পর্যবেক্ষণ করছে। তা হচ্ছে কম বয়সীদের মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়া।’

কুমো বলেন, ‘বয়স অনুযায়ী সংক্রমণের হার লক্ষ করলে দেখা যায়, ২১ থেকে ৩০, এই বয়স ছাড়া বাকি সব বয়সীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ কমেছে অথবা প্রায় অপরিবর্তিত থেকেছে। কিন্তু এই বয়স গ্রুপটিতে উল্লেখযোগ্য ভাবে ৪ শতাংশ বেড়ে গেছে।’

এই বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কুমো বলেন, ‘তরুণেরা মাস্ক ছাড়া একত্র হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। শারীরিক দূরত্ব মেনে চলছেন না।’

রাজ্যের তরুণ ও যুবকদের উদ্দেশ করে গভর্নর আরও বলেন, ‘পার্টি করার অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনের সময় এখন নয়। অবশ্যই পার্টি করা যাবে। কিন্তু বাঁচার জন্য এ বিষয়ে চালাক হতে হবে। একটি মনোভাব এমন যে বয়স কম হলে অনাক্রম্য বা নিরাপদ। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। এই ভাইরাস এ বয়সেও প্রাণঘাতী। আর তা প্রমাণিত হচ্ছে।’

গত দুই সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের নিউইয়র্কবাসীর মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার ৯ দশমিক ৯ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে। পক্ষান্তরে ওই দুই সপ্তাহে ১১ থেকে ২০ বছর বয়সীদের সংক্রমণ ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ২ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে। একই সময়ে ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের নিউইয়র্কের নাগরিকের মধ্যে এই হার ১২ দশমিক ৯ থেকে কমে হয়েছে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০-এর মধ্যে যাঁদের বয়স, তাঁদের সংক্রমণের হার ১০ দশমিক ৬ থেকে কমে হয়েছে ৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আবার ৫১ বছরের ঊর্ধ্বে যাদের বয়স, তাঁদের সংক্রমণের হার এ সময়ে ৬২ দশমিক ২ থেকে কমে হয়েছে ৬২ শতাংশ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত