রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানিতে অংশ নিতে নেদারল্যান্ডসের পথে সু চি

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:২১

সাহস ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, অত্যাচার ও ধর্ষণের অভিযোগে গত মাসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করেছিল পশ্চিম আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ গাম্বিয়া। রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-তে করা মামলার শুনানিতে অংশ নিতে নেদারল্যান্ডসে যাচ্ছেন মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো সরকারের প্রধান অং সান সু চি।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের এ সর্বোচ্চ আদালতের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন তিনি। আগামী ১০-১২ ডিসেম্বর এ শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আদালতের শুনানিতে তিনি রোহিঙ্গাদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যায়িত করে এ গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাইবেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। যদিও শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন ও গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। এবারও যথারীতি নিজেদের দোষ ঢাকারই চেষ্টা করছে সু চি'র দেশ।

এর আগে শনিবার নেপিদো-তে সু চি-র সমর্থনে হাজার হাজার মানুষের এক বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। তার জন্য প্রার্থনা অনুষ্ঠানেও হাজির হয় বিপুল সংখ্যক বর্মি নাগরিক। আগামী ১০-১২ ডিসেম্বর মামলার শুনানিকালে ফের এ ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছে সু চি-র সমর্থকরা।

এদিকে মামলায় পূর্ণাঙ্গ শুনানির আগে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় আপাত ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের ১৬ সদস্যের বিচারক প্যানেলের প্রতি আহ্বান জানাবে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

যে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে তিনি দুনিয়াব্যাপী নন্দিত হয়েছিলেন, এবার তার ইউরোপ সফরের উদ্দেশ্য তাদের গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাওয়া। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল’ করতেই নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ যাচ্ছেন তিনি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলার শুনানিতে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে সু চি থাকায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তিশালী যোগাযোগ রয়েছে সু চি-র এমন ঘনিষ্ঠজনরা এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছে, এতে করে বিদেশে তার ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণ্ন হতে পারে। তবে মিয়ানমারের বাস্তবতা একেবারেই উল্টো। সু চি-র সমর্থনে বিশাল মিছিল হয়েছে সেখানে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপে নিযুক্ত মিয়ানমারের পরামর্শক রিচার্ড হর্সে রয়টার্সকে বলেন, মিয়ানমারের অধিকাংশ মানুষ রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগকে পক্ষপাতমূলক ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বলে মনে করে। আর এর বিরুদ্ধে জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ ভূমিকা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন সু চি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত