ইসরাইলকে গোলান ছাড়ার আহ্বান জাতিসংঘের

সিরিয়ার গোলান মালভূমি থেকে ইসরাইলকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবে দেশটিকে অধিকৃত পুরো এলাকা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে।

গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দিনভর অধিবেশনে ইসরাইলের প্রতি এমন আহ্বান জানায় জাতিসংঘ।

ইসরাইলসংশ্লিষ্ট আরও চারটি পদক্ষেপ অনুমোদন করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। আইনগতভাবে এসব প্রস্তাব মানতে বাধ্য নয় তেলআবিব। তবে এসব প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব ও অবৈধ বসতি নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিরোধিতা জোরালো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

১৯৬৭ সালের জুনে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় সিরীয় ভূখণ্ড গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। এরপর সেখানে বসবাস করা সিরীয় আরব বাসিন্দাদের বেশির ভাগই পালিয়ে যায়।

১৯৭৩ সালে এটি পুনর্দখলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সিরিয়া। ১৯৮১ সালের ৪ ডিসেম্বর একতরফাভাবে ওই এলাকাকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে ইসরাইল। তবে এই দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গ্রহণ করা এক প্রস্তাবে ইসরাইলকে পূর্ব জেরুজালেম ও গোলান মালভূমিসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রাকৃতিক সম্পদের শোষণ বন্ধ করতে বলা হয়।

বুধবার সাধারণ পরিষদে সিরীয় গোলান মালভূমিসংক্রান্ত প্রস্তাবের পক্ষে ৯১টি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ৯টি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। আর ৬৫টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। এটিকে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের গ্রহণ করা অপর এক প্রস্তাবের বাস্তবায়ন বলে উল্লেখ করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, সিরীয় গোলান উপত্যকায় চলমান দখলদারিত্ব ওই এলাকায় বিস্তৃত ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তি স্থাপনের পথ রুদ্ধ করেছে। গোলান উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি লাইনের কাছে দখলকৃত সিরীয় ভূমিতে ইসরাইলি বসতি।

গোলান প্রস্তাব ছাড়াও বুধবার ইসরাইলসংশ্লিষ্ট আরও চারটি পদক্ষেপ নেয় সাধারণ পরিষদ। এর একটিতে ইসরাইলকে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমসহ দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরেকটিতে ইসরাইলকে অবৈধ বসতি নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। অপর এক পদক্ষেপে ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের বিভিন্ন দফতরের কাজের স্বীকৃতি দেয় সাধারণ পরিষদ। আর সর্বশেষ পদক্ষেপে ফিলিস্তিন সংক্রান্ত তথ্য ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে দিতে বিশেষ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

জাতিসংঘের মূল ছয়টি অঙ্গের একটি নিরাপত্তা পরিষদ। পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত ১০ সদস্য দেশের সমন্বয়ে মোট ১৫ সদস্যের এই পরিষদ কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে তা মানতে সদস্য দেশগুলো আইনগতভাবে বাধ্য। তবে সব সদস্য দেশের সমন্বয়ে গঠিত হলেও সাধারণ পরিষদ কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করলে তা মানতে আইনগতভাবে বাধ্য নয় কোনো সদস্য দেশ।

খবর- এএফপি