বাবরি মসজিদের জায়গায় মন্দির, মসজিদ অন্যত্র

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:৩৮

সাহস ডেস্ক

ভারতের উত্তর প্রদেশে আলোচিত অযোধ্যার বিরোধীপূর্ণ বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে মন্দির নির্মাণে হিন্দুদের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আর নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে মুসলমান সম্প্রদায়কে শহরেই আলাদা একখণ্ড পাঁচ একরের জমি বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আজ ৯ নভেম্বর (শনিবার) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ভারতের বহুল আলোচিত এই মামলার রায় পড়া শুরু করেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বে গড়া পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। এ রায় ঘোষণাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ২০ অক্টোবর থেকে অযোধ্যা শহরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।

২ দশমিক ৭৭ একর বিরোধপূর্ণ জমির উপর ছিল বাবরি মসজিত। সেখানে হিন্দুদের দেবতা রামের জন্মভূমি বলে দাবি করা হয়েছে। এবং রামের জন্মভূমি ট্রাস্ট এখন জমিটির অধিকারীই হবে।

আদালতের রায়ে বলা হয়, মসজিদের নিচে স্থাপনা থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে এটি মন্দির কি না, তা নিশ্চিত নয়।

কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বিশ্বাস, উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ভগবান রামচন্দ্র জন্মেছিলেন। তাঁর জন্মস্থান বলে চিহ্নিত জায়গায় ষোড়শ শতকে মোগল সম্রাট বাবরের আমলে একটি মসজিদ তৈরি হয়। নাম দেওয়া হয় বাবরি মসজিদ। মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি নিয়ে সেই থেকে হিন্দু-মুসলিম যে বিরোধ চলছিল, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর তা অন্যদিকে বাঁক নেয়। ওই দিন কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেন। এ নিয়ে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অন্তত দুই হাজার লোক নিহত হয়। সেই থেকে বাবরি মসজিদের ২ দশমিক ৭৭ একর জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধিতা শুরু হয়।

এলাহাবাদ হাইকোর্ট ওই জমি বিবদমান তিন পক্ষ রাম লালা, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও নির্মোহী আখড়ার মধ্যে সমানভাবে ভাগ করার নির্দেশ দেন। তবে সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ হয় সুপ্রিম কোর্টে।

আগামী ১৭ নভেম্বর অবসরের আগে কয়েক দশকের এই আইনিবিরোধীদের নিষ্পত্তি করলেন রঞ্জন গগৈ।

বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি এসএ বোবডি, ডিওয়াই চন্দ্রাচুড, অশোক ভুষান ও এস আবদুল নাজের।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, মসজিদটি ফাঁকা জায়গায় নির্মাণ হয়নি। এর নিচে অন্য কাঠামো ছিল। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার খননের ফলে যেসব জিনিস পাওয়া গেছে, এতে বোঝা গেছে সেগুলো ইসলামি নয়। অযোধ্যায় বিকল্প স্থানে মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মন্দিরের জন্য সরকারকে ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ট্রাস্ট গঠন করতে হবে। বিরোধপূর্ণ জমি চলে যাবে ট্রাস্টের কাছে।

রায়ে আরো বলা হয়, বাবরি মসজিদ ভাঙার মধ্য দিয়ে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত