বাবার হত্যাকারী তিন বোনের মুক্তি দাবিতে উত্তপ্ত রাশিয়া

গত বছরের জুলাই মাসে রাশিয়ার মস্কোয় কিশোরী তিন রোন ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তাদের বাবাকে ছুরি দিয়ে হত্যা করে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও তা নিয়ে রাশিয়ায় উত্তপ্ত বির্তক শুরু হয়েছে।

তিন বোনের ওপর তাদের বাবার বছরের পর বছর শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ করে তাদের মুক্তি দেওয়ার আহবান জানিয়ে তিন লাখ মানুষ স্বাক্ষরিত একটি পিটিশন মস্কোর উচ্চ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, মেয়েদের বাবা বছরের পর বছর ধরে তাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে পীড়ন করে আসছিলেন।

৫৭ বছরের মিখাইল খাচাতুরিয়ান তার তিন মেয়ে ক্রিস্টিনা, অ্যাঞ্জেলিনা এবং মারিয়াকে একে একে ডেকে পাঠান। তিন জনই সে সময় ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। ফ্ল্যাট পরিষ্কার-পরিছন্ন করে না রাখার জন্য তিনি তাদের বকাঝকা করেন এবং মুখে পেপার গ্যাস স্প্রে করেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে মেয়েরা ছুরি, হাতুড়ি আর পেপার স্প্রে নিয়ে তার ওপর হামলা করে। তারা মাথায়, গলায় এবং বুকে মারাত্মক আঘাত করে। পরবর্তীতে তার শরীরে ৩০টির বেশি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এরপর মেয়েরা পুলিশে খবর দেয় এবং ঘটনাস্থলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তদন্ত করতে গিয়ে ঐ পরিবারের মধ্যে চরম নির্যাতন ও সহিংসতার ইতিহাস বেরিয়ে আসে। খাচাতুরিয়ান গত তিন বছর ধরে তার মেয়েদের নিয়মিত মারধর করতেন, নির্যাতন করতেন, দাসী করে রেখেছিলেন এবং যৌন নিপীড়নও করতেন। তিন বোনই তাদের বাবার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করে যে, এই বোনরা কোনো অপরাধী নয়, বরং ভুক্তভোগী। কারণ নির্যাতনকারী পিতার কবল থেকে বাইরে গিয়ে সাহায্য চাওয়ার কোনো জায়গা বা সুরক্ষার কোনো উপায় তাদের ছিল না।

আইনজীবীরা বলছেন, এই বোনরা “নিয়মিত অপরাধের” শিকার এবং এ কারণেই তাদের খালাস দেওয়া উচিত। তারা আশা করছেন, মামলাটি বাতিল করা হবে, যেহেতু তদন্তকারীরা দেখতে পেয়েছেন যে, ২০১৪ সাল থেকেই এই বোনরা বাবার হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।