পুড়ছে অ্যামাজন, পুড়ছে ধরণীর ফুসফুস

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০১৯, ১২:২৭

'পৃথিবীর ফুসফুস' খ্যাত আমাজনে সৃষ্ট দাবানলের আগুন আরোও ভয়ংকর ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে অ্যামাজনের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ব্রাজিলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্পেস রিসার্স (আইএনপিই) এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি এক মিনিটে অ্যামাজনে পুড়ছে প্রায় ১০০০০ বর্গমিটার এলাকা।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ব্রাজিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৭২৮৪৩টি, যার প্রায় অর্ধেকের বেশী ঘটেছে শুধুমাত্র অ্যামাজনেই। আর এটি তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮০ শতাংশ বেশী। বিজ্ঞানীদের আশংকা, এ অবস্থা চলতে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী লড়াইয়ে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

বিভিন্ন পরিবেশবাদী দল ও গবেষকদের ধারণা, অ্যামাজন বনে সৃষ্ট এই দাবানলের পেছনে রয়েছে পশু শিকারি ও কাঠ সংগ্রহকারীদের ভূমিকা রয়েছে। তারা চায় বন উজাড় করে সেখানের জমি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে এবং পরিবেশবিদদের ধারণা এর পেছনে বড় দায় ব্রাজিলের অতি ব্যবসা ভাবাপন্ন প্রেসিডেন্টের।

ক্রিশ্চিয়ান পোইরের, নন-প্রোফিট অর্গানাইজেশন অ্যামাজন ওয়াচ এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। তিনি বলেন, এই দাবানলের পেছনে মানুষের ভূমিকাই প্রধান। শুষ্ক মৌসুমেও আমাজন থাকে খুবই আদ্র ফলে খুব সহজে প্রাকৃতিকভাবে আগুন লেগে যায়না ক্যালিফোর্নিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার মত।

আইএনপিই এর গবেষক আলবার্তো সেজার বলেন, ৯৯ শতাংশ আগুনের সূত্রপাত মানুষের দ্বারা ঘটানো হয়েছে, তা ইচ্ছাকৃতভাবেই হোক কিংবা দুর্ঘটনাই হোক। 

অ্যামাজন বন পৃথিবীর মোট অক্সিজেন চাহিদার ২০ ভাগ পূরণ করে। যার কারণে একে পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড এর তথ্য অনু্যায়ী, এই বনে সাম্প্রতিক দাবানলে যা ক্ষতি হয়েছে তা যদি কাটিয়ে ওঠা না যায়, তাহলে এখান থেকেই কার্বন নির্গমন শুরু হবে যা বৈশ্বিক জলবায়ুতে প্রভাব ফেলবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাও পাওলোর আকাশ কালো হয়ে গেছে, আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটা আসলে মেঘ নয়, হাজার কিলোমিটার দূরে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ধোঁয়া চলে এসেছে সেখানে। আগুনের ভয়াবহতা কতটা প্রকট হলে হাজার কিলোমিটার দূরের আকাশও কালো হয়ে যায় তা ধারণা করা যেতে পারে। সামাজিক মাধ্যমেও দানবীয় আকারের সেই ধোঁয়ার কুণ্ডলীর ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। সবুজ বনের ওপর দিয়ে লাল অগ্নিশিখা বয়ে বেড়াচ্ছে শুধু অন্ধকারই রেখে যাচ্ছে পেছনে। সেই ধোঁয়াই ১৭০০ মাইল পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছে সাও পাওলোতে।

এদিকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রন এটিকে 'আন্তর্জাতিক সংকট' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি এই সংকট সমাধানে জি৭ সম্মেলনে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তিনি এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, 'আমাদের ঘর পুড়ে যাচ্ছে।'

 

Our house is burning. Literally. The Amazon rain forest - the lungs which produces 20% of our planet’s oxygen - is on fire. It is an international crisis. Members of the G7 Summit, let's discuss this emergency first order in two days! #ActForTheAmazon pic.twitter.com/dogOJj9big

— Emmanuel Macron (@EmmanuelMacron) August 22, 2019
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত