বর্ণমালা রূপান্তর করছে কাজাখস্তান

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০১৯, ১৫:৪৭

সাত বছরের চেষ্টায় ৩২টি বর্ণ নিয়ে নতুন বর্ণমালা তৈরি করেছে কাজাখস্তান। আধুনিক বিশ্বের সাথে নিজেদের নতুন সম্পর্ক স্থাপনই এর মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে দেশটি।

সোভিয়েত ছায়াতলে থাকা দেশটি এতদিন যাবৎ 'সিরিলিক' বর্ণমালায় চলে আসলেও এবারে তারা যাচ্ছে 'লাতিন' বর্ণমালায়। নতুন এ বর্ণমালায় ২৩টি লাতিন বর্ণ রয়েছে। তবে তাজাখদের মুখের ভাষার সাথে মিল রেখে আরোও ৯টি বর্ণ তৈরি করতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্ণমালা রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো ২০১৭ সালে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নুরসুলতান নজরবায়েভ ফরমান জারি করে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। কাজাখাস্তানের 'আধ্যাত্মিক আধুনিকায়নে' এই পরিবর্তনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দেশটির নতুন শাসক প্রেসিডেন্ট কাসিম-জমার্ট তোয়াকেভও৷

কাসিম-জমার্ট তোয়াকেভ মত দিয়েছেন, বিশ্বের ৯০ ভাগ তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে লাতিন বর্ণে, সেখানে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখার সুযোগ নেই৷

দেশটির গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জার্মান ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, এই রূপান্তরে বাজেট ধরা হয়েছে ৫০৫ মিলিয়ন ইউরো৷ এর মধ্যে গত এপ্রিলে নতুন বর্ণমালা খচিত কয়েন ছেড়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ ২০২১ সালের মধ্যে, এটিকে দেশটির অফিসিয়াল বর্ণমালা ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার৷ শুরু হয়েছে বিশাল কর্মযজ্ঞ৷

তবে শহুরে জীবনে বর্ণমালার এই রূপান্তর খুব বেশি সমস্যা তৈরি না করলেও প্রান্তিক অঞ্চলে বেশ জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন দেশটির ভাষা বিশেষজ্ঞরা।

তবে এক্ষেত্রে সমস্যা নিরসনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকসহ সমাজের সকল স্তরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে বলেছেন তারা। তবে তারা এই রূপান্তরকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

শিক্ষাবিদ তাবিজখান তাতোকানোভিচ বলেন, ''আমি মনে করি, এটি সময়ের দাবি৷ তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে এটা খুবই ইতিবাচক পরিবর্তন৷ তাঁর মতে, লাতিন বর্ণমালার কারণে শিক্ষার্থীরা খুব সহজে ইংরেজি ভাষাটাও শিখে ফেলতে পারবে৷ ফলে, বিজ্ঞানের পড়াশোনা আর সাহিত্য পাঠ সহজ হবে বলেও মনে করেন তিনি৷

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্যোগ রাশিয়ান ব্লক থেকে কাজাখস্তানকে একটু দূরে সরিয়ে আনার ইঙ্গিত বহন করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আইডস স্যারাম এই রূপান্তরকে 'কাজাখ ভ্যালু' প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন৷ তাঁর মতে, সিরিলিক থেকে ফিরে আসার এই সিদ্ধান্ত দেশটির জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ৷ আইডস স্যারাম বলছেন, কয়েক বছর ধরে দেশটিতে কাজাখ ভাষায় কথা বলা লোকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে৷ আর তাই দেশটির সরকারও এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

তথ্য: ডয়চে ভেলে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত