'বঙ্গবন্ধুর নীতির আলোকেই শান্তিরক্ষায় অবদান রাখছে বাংলাদেশ'

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৩৬

সাহস ডেস্ক

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসৃত বৈদেশিক নীতি ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়’ এবং আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এ দু’য়ের আলোকেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মূল্যবোধভিত্তিক অবদান রেখে চলছে বাংলাদেশ”।

সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে গত শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিশেষ কমিটি (সি-৩৪) এর সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অবদানসমূহের কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিরক্ষীদের যেকোনো ধরণের যৌন নির্যাতন ও এর অপব্যবহারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ মহাসচিব ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স নীতির প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল এবং এই নীতি অনুসরণ করেই বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীগণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘অ্যাকশন ফর পিসকিপিং এজেন্ডা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক শান্তিরক্ষার প্রতি বাংলাদেশের গভীর ও পূর্ণ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন”।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ আরও বলেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শান্তিরক্ষীদের যৌন নির্যাতন ও এর অপব্যবহার রোধে গঠিত ‘সার্কেল অব লিডারশীপ’ এর একজন সদস্য। তাছাড়া আমরা যৌন নির্যাতন ও এর অপব্যবহার বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবের স্ব-প্রণোদিত কম্প্যাক্টেরও সদস্য।’’

রাষ্ট্রদূত মাসুদ জাতিসংঘের শান্তিবিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি এবং মহাসচিবের ‘শান্তির কূটনীতি (surge in peace diplomacy)’ বিষয়ক পদক্ষেপসমূহের প্রতি বাংলাদেশের উচ্চকিত সমর্থনের উপস্থাপন করেন।

আজকের দিনে শান্তিরক্ষীগণ বিভিন্ন অ-রাষ্ট্রীয় অপশক্তির রীতি-নীতি বর্জিত ও অপ্রতিসম হুমকি ক্রমাগতভাবে মোকাবিলা করছে জানিয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এমন জটিল, তীব্র চাহিদাপূর্ণ ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ‘সি-৩৪’ কমিটিকে আরও কার্যকর করতে ‘সি-৩৪’ প্লাটফর্মের আওতায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভবিষ্যত দিক-নির্দেশনার বিষয়ে খোলামেলা আলোচনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের স্থায়িত্ব ও দক্ষতা নিশ্চিতে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। এগুলো হল: ১) লক্ষ্য নির্ধারণে সৈন্য ও পুলিশ সরবরাহকারী দেশসমূহ, নিরাপত্তা পরিষদ ও জাতিসংঘ সদরদপ্তরের মধ্যকার ত্রয়ী সম্পর্ক শক্তিশালী করা, ২) কর্তব্যরত শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার উন্নয়ন, ৩) শান্তি রক্ষীদের কর্মদক্ষতা ও মান নিরূপনে সমন্বিত মূল্যায়ন ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সম্পদ ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সুনিশ্চিতকরণ, ৪) সকল ধরণের যৌন নির্যাতন ও এর অপব্যবহার রোধে মহাসচিবের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ, ৫) নারী শান্তিরক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা গ্রহণ, ৬) শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের পরিবেশগত প্রভাব হ্রাসে নতুন ও উদ্ভাবনশীল পন্থা খুঁজে বের করা, ৭) প্রযুক্তির (ড্রোন ইত্যাদি) সতর্ক ব্যবহার যেন তা কোনোভাবেই স্বাগতিক দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি না হয়।

উল্লেখ্য যে, সাধারণ পরিষদের আওতায় সি-৩৪ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম রিভিউ এবং এর ভবিষ্যত দিক-নির্দেশনা প্রদানের মূল কমিটি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত