ট্রাম্পের হুশিয়ারি:

মার্কিন মদদপুষ্ট কুর্দিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে তুরস্ক

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:১৬

সাহস ডেস্ক

‘আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব’- বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন।
তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে কুর্দিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আঙ্কারা।

১৪ জানুয়ারি (সোমবার) তুরস্ক জানায়, মার্কিন মদদপুষ্ট কুর্দিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে আঙ্কারা।

এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এক টুইটবার্তায় বলেছেন, জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট এবং কুর্দি পিপলস ইউনিট (ওয়াইপিজে) জঙ্গিদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।

এর আগে ১৩ জানুয়ারি (রবিবার) ট্রাম্প এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘কুর্দিদের আক্রমণ করা হলে তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করা হবে।’ এর পরই ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে কালিন বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আপনার অংশীদার ও মিত্র হতে পারে না।’

এরদোগানের মুখপাত্র বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প সমীকরণে বড় ধরনের ভুল করেছেন সিরিয়ান কুর্দিদের সঙ্গে পিকেকে মিলিয়ে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছে এবং এর শাখা পিওয়াইডি/ওয়াইপিজে।’

পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে আঙ্কারা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত। কিন্তু সম্প্রতি বছরে সিরিয়ায় ওয়াইপিজে বাহিনীকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। বলা হচ্ছে- এ প্রশিক্ষণ ইসলামিক এস্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে কাজ করছে।
মার্কিন সহযোগিতা ওয়াইপিজের বড় একটি উৎস। আর এমন সহযোগিতা তুরস্কে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘গত মাসে দুই হাজার মার্কিন সেনা সিরিয়া থেকে প্রত্যাহার পর অবস্থা উন্নতি হয়েছে।’

এর আগে রবিবার এক টুইটবার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কুর্দিদের আক্রমণ করা হলে তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়া হবে।’ যখন ২০ মাইল নিরাপত্তা অঞ্চল তৈরি নিয়ে দাবি উঠেছে, তখনই এমন হুশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প নিরাপত্তা অঞ্চলের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প তুরস্ককে কোনো ধরনের সুযোগ না দিতে কুর্দিদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তুরস্ককে উত্তেজিত করা যাবে না।’

ট্রাম্প বলেন, ‘সিরিয়া থেকে উগ্রপন্থী আইএস জঙ্গিদের ধ্বংস করার মার্কিন নীতিতে রাশিয়া, ইরান ও সিরিয়া বড় ধরনের লাভবান হয়েছে। আমরাও লাভবান হয়েছি, আমাদের সেনা দেশে ফিরিয়ে এনে।’ এর পর টুইটে লেখেন- ‘শেষ যুদ্ধ বন্ধ করুন’।

এদিকে সিরিয়া সীমান্তে নতুন করে আরও সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম বৃদ্ধি করেছে তুরস্ক। তুর্কি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সিরিয়ার নিকটবর্তী তুরস্ক সীমান্তে ট্যাংক ও ভারী অস্ত্রসহ সেনা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত কয়েক দিন আগেও সিরিয়ার উত্তরের ইদলিবের সীমান্তঘেঁষে তুর্কি সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশ বিদ্রোহীদের শেষ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। খবর আল অ্যারাবিয়া।

সৌদিভিত্তিক ওই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গত কয়েক বছরে সিরিয়ার বিভিন্ন শহর এবং জনপদ থেকে বিতাড়িত হয়ে বিদ্রোহীরা এখানে এসে জড়ো হয়েছে। এদিকে কয়েক দিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল পম্পেও বলেছেন, তিনি তুর্কি ও সিরিয়ার কুর্দিদের সম্পর্কে একটি ভালো সম্পর্কের অপেক্ষা করছেন। সিরিয়ার অবস্থা ভালো হওয়ার ব্যাপারেও তিনি আশাবাদী।

তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকারের বরাত দিয়ে তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিভাগ জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান ও গোয়েন্দাপ্রধান সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সৈন্যদের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন। সীমান্তে যেন কোনো উত্তেজনা তৈরি না হয় এ ব্যাপারে তুরস্ক সরকার সর্বদা চেষ্টা করছে।

তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার বলেন, ‘ইদলিবে শান্তিরক্ষায় তুরস্ক সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।’

সূত্র: ডন ও দি গার্ডিয়ান

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত