‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ তালিকায় খাসোগি

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৪৩

সাহস ডেস্ক

বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের এবারের ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ তালিকায় উঠে এসেছেন সৌদি যুবরাজ ও রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাংবাদিক জামাল খাসোগি।

সম্মানজনক এই তালিকায় আরো স্থান পেয়েছেন রাখাইন প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার ও পরে সাজাপ্রাপ্ত বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সের মিয়ানমারের দুই সাংবাদিক। এ ছাড়া একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে টাইম ম্যাগাজিন ‘বর্ষসেরা’র তালিকায় বেছে নিয়েছে বিশ্বখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল ইসলামকে।

এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে রয়টার্স বলছে, এর মাধ্যমে টাইম জানান দিল যে গণতন্ত্র ও সত্যের ধারণা একই সঙ্গে হুমকির মুখে রয়েছে।

সাপ্তাহিক এই ম্যাগাজিনের বুধবার প্রকাশিত সংখ্যায় ফিলিপাইনের কর্তৃত্ববাদী সরকারের রোষানলের শিকার হওয়া নিউজ পোর্টাল র‍্যাপলারের প্রতিষ্ঠাতা মারিয়া রেসের নামও ওই তালিকায় রয়েছে। টাইম ম্যাগাজিনের ৯৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম তাঁরা নিজেদের পেশার লোকজনের স্বীকৃতি দেওয়ার এমন আয়োজন করল।

টাইম প্রতিবছর দুনিয়াব্যাপী প্রভাব বিস্তারকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই তালিকা প্রকাশ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি নাগরিক অধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, রানি এলিজাবেথ ও জার্মানির নাৎসি পার্টির নেতা অ্যাডলফ হিটলারকেও এ সম্মাননা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে হিটলারকে সম্মাননা জানায় টাইম।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। সৌদি আরবে নিরাপত্তাহীনতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নেওয়া এই সাংবাদিক ক্ষমতাধর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক ছিলেন।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছিলেন মিয়ানমারের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সো ও (২৮)। রোহিঙ্গা নিধনের জন্য ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিযুক্ত করার পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের অভিযোগ, ওই দুই সাংবাদিকের কাছে মিয়ানমারের গোপনীয় রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র ছিল। তারা সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে স্পর্শকাতর তথ্য ও নথি সংগ্রহ করেছেন, যাতে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে।

তবে তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও অভিযোগের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে আদালত ওই দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। আজ বুধবার তাদের বন্দিদশার এক বছর পূর্ণ হবে।

২ অক্টোবর নিখোঁজের খবরে সৌদি কর্তৃপক্ষ এ সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে দাবি করলেও ধাপে ধাপে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই এমনকি পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয় বলে স্বীকার করে নেয় সৌদি সরকার। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়ে থাকতে পারেন বলেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর বরাত দিয়ে সর্বশেষ খবরে বলা হয়েছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে তার বিরুদ্ধে ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ আনা হয়। টানা ১০৭ দিন কারাবাসের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত