ধ্বংসস্তূপে বসে সিরিয়ানদের ইফতার
প্রকাশ | ২৫ মে ২০১৮, ১৮:০১
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দিক থেকে সমৃদ্ধ ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ সিরিয়ায় একসময় বেশ আনুষ্ঠানিকতা ও আগ্রহ উদ্দীপনার মাধ্যমে পালিত হতো রমজান মাস। কিন্তু গত ৭-৮ বছর ধরে চলমান যুদ্ধের ফলে রমজানের সেই আগের জৌলুশ এখন আর নেই।
বিপুলসংখ্যক মানুষের ভাগ্যে এখন ঠিকমতো খাবারই জোটে না। ঘরহীন হয়ে শরণার্থী শিবিরে কাটাতে হয় দিন। ক্ষুধা মেটানোর জন্য ত্রান সামগ্রীর দিকে তাকিয়ে থাকতে। সুতরাং রমজানের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন এখন সেখানে বিলাসিতাই বলা চলে।
তারপরও আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ হাত ছাড়া করেন না ধর্মপ্রাণ সিরিয়ানরা। অগ্নেয়াস্ত্র, গোলা-বারুদ দিয়েও যে সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভালোবাসা থামানো সম্ভব নয় তারই প্রমাণ এই সিরিয়ানবাসীরা।
রমজান মাসে সিরিয়ানরা পরিবারের জন্য আগে থেকেই একমাসের বাজার কিনে রাখেন। রাজধানী দামেস্কের মিষ্টির দোকানগুলো ভরে ওঠে খদ্দেরে। আরও বিক্রি হয় স্বাস্থ্যকর ফল মূল ও তাজা তরকারি।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রমজান মাসে সিরিয়ার একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এ মাসে আকাশছোঁয়া দামের কারণে হাজার হাজার পরিবার কিনতে পারেন না নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। এমনকি কিছু পরিবারের জন্য বেঁচে থাকার মৌলিক পণ্যগুলোও কেনা সম্ভব হয় না।
সিরিয়ানদের বন্ধু, আত্মীয়, প্রতিবেশী সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ইফতার করা একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। যুদ্ধের আগেও সিরিয়ানদের ইফতারের টেবিলে দেখা যেত মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহ্যবাহী খাবারদাবারের প্রাচুর্য। ইফতারে সিরিয়ানদের পছন্দ বিভিন্ন রকমের সালাদ, স্যুপ, রমজান উপলক্ষে বিশেষভাবে প্রস্তুত রুটি, ফল, কাবাব ও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী ডেজার্ট।
নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে ইফতার পাঠানো হতো। অনেক সময় দেখা যেত প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের বাড়ি থেকে পাঠানো ইফতারের আধিক্যে নিজ বাড়িতে রান্না ইফতার খাওয়ার সুযোগই মিলছে না।
সাহস২৪.কম/তানভীর/আল মনসুর