হিন্দুদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে আরসা : অ্যামনেস্টি

প্রকাশ : ২৩ মে ২০১৮, ১৫:৩১

সাহস ডেস্ক

রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমারে গত অগাস্টে আক্রমণ চালিয়ে কয়েক ডজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করেছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তদন্ত করে এই তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আরসা রাখাইনে একটি অথবা দু’টি গণহত্যা চালিয়ে শিশুসহ ৯৯জন হিন্দুকে হত্যা করেছে। যদিও আরসার পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

এদিকে গত বছরের আগস্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীর হামলার মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। এদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ সময়  মুসলিমদের পাশাপাশি কিছু হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষও সহিংসতার মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। পরে তাদের মধ্যে কিছু লোক ফিরেও যায়।

অ্যামনেস্টি জানায়, গত ২৬ অগাস্ট সকালে আরসা সদস্যরা রাখাইনের মংডুর উত্তরাঞ্চলের আহ নুক খা মং সেইক গ্রামে হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালায়। তারা কালো পোশাক পরে এসেছিল। তাদের সঙ্গে স্থানীয় মুসলিম  রোহিঙ্গারাও ছিল। এদের সবার হাতে ছিল ছুরি আর লোহার রড। তারা গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে। ৫৩ জন হিন্দুকে ধরে গ্রামের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের হত্যা করা হয়। আটজনকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য চাপ  দেওয়া হয়। পরে তারা পালিয়ে অন্যদের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে সেখানকার বাসিন্দা এক নারী (২২) তার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেন, তাদের কাছে ছুরি ও বড় লোহার রড ছিল। আমাদের হাত, চোখ সবসময় বেঁধে রাখা হতো। তারা বলছিল, ভিন্ন  ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমরা রাখাইনে বাস করতে পারব না। আমাদের কয়েকদিন ধরে মারধর করা হয়। কারও কারও থেকে টাকা ও সোনার গহনা নিয়ে নেয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে আহ নুক খা মং সেইক গ্রামের পাশের আরেকটি গ্রাম ইয়ে বাউক কিয়ার গ্রামে। সেখানকার চারটি গণকবর থেকে ৪৫  জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আরও মানুষ আরসার গণহত্যার শিকার হতে পারে বলেও ধারণা করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আরসার এই অপরাধকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেই মনে করছে অ্যামনেস্টি  ইন্টারনাশনাল। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মতো এদেরও এই বর্বরতার জবাবদিহি করা জরুরি বলে মনে করে এই মানবাধিকার সংস্থাটি।

সাহস২৪.কম/তানভীর/আল মনসুর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত