ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

সমতায় শেষ সিটি-লিভারপুলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ

প্রকাশ | ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৮:২৮ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৮:৩২

অনলাইন ডেস্ক

শেষ মুহূর্ত অর্থাৎ ম্যাচের ঊননব্বইতম মিনিটে রিয়াদ মহারেজের নেওয়া ফ্রি-কিকটা যখন সাইড বারে লেগে বেরিয়ে গেল, তখন পুরো ইতিহাদ স্টেডিয়াম যেন একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। শেষ মুহূর্তের ওই ফ্রি-কিক থেকে গোলটি আসলে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দীর্ঘশ্বাস নয় বরং গর্জনই শোনা যেত। কিন্তু সেটা আর হলো না। ম্যান সিটি পারল না পয়েন্ট ব্যবধান আরও বাড়াতে আর লিভারপুল পারল না এগিয়ে যেতে। রোমাঞ্চকর ম্যাচটিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিতে হয়েছে দুই দলকে।

রবিবার (১০ এপ্রিল) রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের হাইভোল্টেজ ম্যাচে লিভারপুলের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। সমান ৩১ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি এবং ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে দ্বিতীয়তে থাকা ইয়ুর্গের ক্লপের দল লিভারপুল। দুই দলেরই ম্যাচ বাকি আছে ৭টি।

এদিন শুরু থেকেই লিভারপুলের রক্ষণভাগকে অস্থির করে তোলে গার্দিওলার শিষ্যরা। যার ফলে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে সিটির হয়ে ম্যাচের প্রথম গোলটার মালিক হতে পারতেন রাহিম স্টার্লিং। কিন্তু সহজ সুযোগ নষ্ট করাই তার সভাব! পঞ্চম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার দুর্দান্ত পাস গ্যাব্রিয়েল জেসুসের পা ঘুরে তার কাছে যখন এল, সেটা শুধু ফাঁকা জায়গা দিয়ে জালে ঠেলে দিলেই হয়। স্টার্লিং সেই বলও লিভারপুল গোলরক্ষক আলিসনের কোলে তুলে দিয়ে এসেছেন।

তবে তার ভরসায় থাকলেক না ডি ব্রুইনা, নিজেই দায়িত্ব নিলেন গোলের। স্টার্লিংয়ের গোল মিসের ৩০ সেকেন্ড পরেই ফাবিনিওকে কাটিয়ে বেলজিয়ান প্লেমেকার ব্রুইনার নেওয়া শট মাতিপের পায়ে লেগে লিভারপুলের জালে জড়ায়। এতে ইতিহাদ স্টেডিয়াম উল্লাসে মেতে উঠে। এগিয়ে গেল ম্যানচেস্টার সিটি।

কিন্তু এ লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারল না গার্দিওলার শিষ্যরা। ম্যাচের ১৩তম মিনিটে শোধ করে দিলো ক্লপের শিষ্যরা। মো সালাহর শট বিপদমুক্ত করতে হেড করলেন জন স্টোনস, কিন্তু বল গেল অ্যান্ডি রবার্টসনের পায়ে। স্কটিশ ফুলব্যাক ক্রস বাড়ালেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আরনল্ডের জন্য। বল মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার আগে দৌড়ে এসে আরনল্ড আলতো ছোঁয়ায় দিলেন পেছনে থাকা দিয়েগো জোতার পায়ে। কিন্তু গোলটি শোধ করতে ভুল করলেন না জোতা।

এদিকে বছরের প্রথম দিনের পর এই প্রথম গেব্রিয়েল জেসুসকে সিটির একাদশে দেখা গেছে। তবে তাকে নিয়ে যে প্রশ্নটা জেগেছিল, তার সঠিক জবাবও তিনি দিয়েছেন। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে। জোয়াও ক্যানসেলোর পাস থেকে বল পেয়ে আলিসনকে ফাঁকি দেন জেসুস। গার্দিওলার আস্থার প্রতিদান দিয়ে সিটিকে এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

তবে প্রথমার্ধে গোলবারের নিচে বেশ পরীক্ষা দিতে হয়েছে আলিসন ব্রেকারকে। ডি ব্রুইনা-জেসুস জুটিকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। সে তুলনায় জোতার গোলের সময় এবং নিজেই আরেকটা গোল খাওয়ার চেষ্টা ছাড়া এদেরসনকে খুব একটা পরীক্ষা দিতে হয়নি। পরে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সিটি।

ফিছিয়ে থাকা লিভারপুল বিরতি থেকে ফিরেই সমতায় ফেরে। সেটাও আবার পুরো প্রথমার্ধে ছায়া হয়ে থাকা সাদিও মানের গোলে! ম্যাচের ৪৬তম মিনিটে সালাহর দারুন পাসে গোল করেন সাদিও মানে।

মানে তবু গোল করে মুখরক্ষা করেছেন, সিটির হয়ে ফোডেন-স্টার্লিংরা হতাশই করেছেন গার্দিওলাকে। স্টার্লিং অবশ্য ৬৩ মিনিটে লিভারপুলের জালে একবার বল পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় সেটা। পরে তাকে বদলে রিয়াদ মাহরেজকে নামিয়েও কোনো লাভ হয়নি। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ডিবক্সের বাইরে থেকে ওই শটটাই নেওয়া ছাড়া তেমন কোনো মুহূর্ত উপহার দিতে পারেননি।

সমান ৩১ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল ম্যানচেস্টার সিটি এবং ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়তে আছে লিভারপুল। ৩০ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়তে আছে চেলসি। ৩১ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে আছে টটেনহাম।