ইউরো ২০২০

৫৩ বছর পর রোম রাজ্যে ইউরো কাপ

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০২১, ০৫:৪৮

হলো না ইটস কামিং হোম, অবশেষে রোমেই গেলো ট্রফি। টাইব্রেকারে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরল ইতালি। বাংলাদেশ সময় আজ রবিবার দিবাগত রাতে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র করে গ্রেথ সাউথগেট ও রবের্তো মানচিনির শিষ্যরা।

এদিন প্রথমার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে ইংল্যান্ড এগিয়ে গেলে দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে ইতালি। পরে এই সমতা নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষ করলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়েও কোনো গোল না হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারের শেষ শটটি ঠেকিয়ে দিলেন ইতালির গোলরক্ষক ডোনারুমা

টাইব্রেকারে ইতালির প্রথম শটে গোল করেন ডোমেনিকো বেরারদি। ইংল্যান্ডের প্রথম শটে গোল করেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। ইতালির দ্বিতীয় শটে ব্যর্থ হন আন্দ্রে বেলোত্তি। ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় শটে গোল করে দলকে ১-২ করেন হ্যারি মাগুইরে। ইতালির তৃতীয় শটে গোল করে ২-২ গোলে সমতায় ফেরান লিওনার্দো বনুচ্চি। ইংল্যান্ডের তৃতীয় শটে ব্যর্থ হন মার্কাস রাশফোর্ড। গোল বারে লেগে বল বেড়িয়ে যায়। এতে ৩-৩ শটে ২-২ গোলে সমতায় থাকে দুই দল। এরপর ইতালির চতুর্থ শটে গোল করে দলকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন ফেডেরিকো বার্নার্ডেশি। ইংল্যান্ডের জ্যাডন সানচোর চতুর্থ শটটি ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষ ডোনারুমা। এতেও ৩-২ গোল। ইতালির হয়ে নন জর্জিনহোর পঞ্চম তথা শেষ শটটি ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। এতে ৫-৪ শটে ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকে ইতালি। এরপর ইংলিশদের শেষ শট। গোল হলেই আবারও গড়াবে টাইব্রেকারে। ইংলিশদের হয়ে শেষ শটটি নেন বুকাইয়ো সাকা, কিন্তু তার শটি ঠেকিয়ে দেন ইতালির গোলরক্ষক ডোনারুমা। এতে ৩-২ ব্যবধানে নাটকীয় জয় পায় ইতালি।

শেষ শটটি ঠেকিয়ে দেওয়ার পর ডোনারুমাকে নিয়ে উদযাপন

১৯৬৮ সালে প্রথম ইউরো ট্রফি জিতেছিল ইতালি। দীর্ঘ ৫৩ বছরের অবসান ঘটিয়ে আবারো ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরল আজ্জুরিরা।

এদিন শুরুটা স্বপ্নের মতো হয়েছিল ইংল্যান্ডের। খেলার শুরু দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। সেন্টার লাইনের নিচ থেকে লুক শ পাস দেন কেইনকে, কেইন এরপর লং পাস ডান পাশে থাকা ট্রিপিয়ারের দিকে। বল পেয়ে অসাধারণ ক্রস করেন ট্রিপিয়ার, পোষ্টের সামনে হাজির হওয়া লুক শ দুর্দান্ত ভলিতে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। ইউরো ফাইনালের পরেরদিন লুক শয়ের জন্মদিন। ওয়েম্বলিতে নিজের উপলক্ষটা রাঙানোর সুযোগটা পেয়ে গেলেন তিনি।

গোলের পর লুক শ’র উদযাপন

এর আগে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে কোনও গোল করতে পারেননি লুক শ। এদিন ওয়েম্বলিতে নিজ দর্শকদের সামনে যে গোলটা করলেন, সেটিও রেকর্ড গড়ে। ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের মাথায়ই লুক শ করেছিলেন নিজের প্রথম গোলটা। এত কম সময়ের মধ্যে ইউরো ফাইনাল এর আগে কোন গোল দেখেনি। পরে প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে এই ১-০তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংলিশরা।

গোল করে ইতালিকে সমতায় ফিরিয়ে সমর্থকদের সামনে বনুচ্চির উদযাপন

লুক শ’র গোলে ইংল্যান্ড যখন এগিয়ে গিয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল ট্রফিটা ইটস কামিং হোমেই থাকবে। কিন্তু সেই আনন্দটা দ্বিতীয়র্ধেই থামিয়ে দেয় ইতালিয়ানরা। ম্যাচরে ৬৮ মিনিটে ভেরাত্তির হেড পোষ্টে লেগে ফিরে আসলে সিক্স-ইয়ার্ড বক্সে গোলের সামনেই থাকা বনুচ্চি বল পেয়ে যান। সেখান থেকে ইংল্যান্ডের জালে বল জড়িয়ে দলকে সমতায় ফেরান বনুচ্চি।

বনুচ্চির গোলে কোচ রবের্তো মানচিনি

এরপর দ্বিতীয়ার্ধের বাকি সময়ে গোলের সুযোগ পেলেও আর কোনো গোল করতে পারেনি দুই দল। এতে ১-১ গোলে খেলা অমীমাংসিত হলে গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে ডিফেন্সিভ দিক দিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা দুটি দলের খেলায় সেসময়ও কোনও ব্যবধান গড়ে দিতে পারেনি। অবশেষে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এই টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ইউরোর ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ইতালি।

খেলা শেষে ইতালির উৎসব