মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের রেকর্ড জুটিতে বাংলাদেশের ৪৬৮

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ২০:০৪

সাহস ডেস্ক

টেষ্টে ফিরেই ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলে ফেললেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো দেড় শ রান করেলেন তিনি। তারই সাথে নমব ব্যাটসম্যান হিসেবে নামা তাসকিন আহমেদও খেলেছেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। দুই জনেরই সেরা ইনিংস দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। জিম্বাবুয়ে বোলারদের স্বস্তি দিয়ে ৪৬৮ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ।

আজ বৃহস্পতিবার হারারে স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৪৬৮ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের আজ সেরা ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিজের সর্বোচ্চ রেকর্ড ভেঙেছেন। করেছেন ১৫০ রান। এর আগে সর্বোচ্চ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টনে ১৪৬ করেছিলেন। আজ নিজের রেকর্ড ভেঙেও অপরাজিতই থেকে গেলেন টাইগারদের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

এদিকে, টেস্ট ক্রিকেট তো দূরে থাক, স্বীকৃত কোনো ক্রিকেটেই সর্বোচ্চ ৩৮ রানের বেশি করতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। আজ দেখালেন তার নতুন চমক। পেয়ে গেলেন জীবনের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। শুধু তাই নয়, প্রথম সেঞ্চুরির পথেও এগিয়ে গিয়েছিলেন অনেক দূর। কিন্তু জীবনের প্রথম সেঞ্চুরিটির দেখা আর পেলেন না। ৭৫ রানেই থেমে গেলে তিনি। মিলটন শুম্বার বলে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৭৫ রান করতে ১৩৪ বল খেলেছেন তাসকিন, মেরেছেন ১১টি বাউন্ডারি।

তাসকিন আহমেদ

তবে তাসকিন আউট হওয়ার আগে নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েছেন জুটির রেকর্ড। দুজনে করেছেন ১৯১ রানের জুটি। তাদের এই জুটিটি আজ রেকর্ড গড়েছে। বিশ্ব রেকর্ড না ভাঙলেও বাংলাদেশের রেকর্ড ভেঙেছেন তারা দুজন। তাদের এ জুটিই এখন বাংলাদেশের হয়ে ৯ম উইকেটে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের রেকর্ড জুটিটি ছিল ১৮৪ রানের। আবুল হাসানের সঙ্গে সে জুটিতে একপাশে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে আরেকটি প্রথম কীর্তি হয়েছে মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের। ৬ষ্ঠ উইকেটের পর এক ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি জুটি এবারই প্রথম পেল বাংলাদেশ। তাসকিনের আগে লিটন দাসের সঙ্গে ৭ম উইকেট জুটিতে ১৩৮ রান যোগ করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্ট ইতিহাসে এর আগে শেষ চার জুটিতে দুটি সেঞ্চুরির জুটি ছিল মোটে ১০টি।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তাসকিন আহমেদ

৯ নম্বরে নেমে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরও গড়েছেন তাসকিন। এর আগে ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাপস বৈশ্য করেছিলেন ৬৬ রান। ৯ নম্বরে নেমে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোর আবুল হাসানের, খুলনায় ২০১২ সালে তিনি করেছিলেন ১১৩ রান। এ পজিশনে আবুল হাসান ছাড়া সেঞ্চুরি আছে আর মাত্র তিনজনের-ইংল্যান্ডের ওয়াল্টার রিড, অস্ট্রেলিয়ার রেজি ডাফ ও দক্ষিণ আফ্রিকার সিমকক্সের।

তাসকিন অবশ্য একটা জায়গায় ঠিকই ছাড়িয়ে গেছেন আবুল হাসানকে। ৯ নম্বরে নেমে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি বল খেলেছেন তিনি। তাসকিন এদিন খেলেছেন ১৩৪ বল, আবুল হাসান তাঁর সেঞ্চুরি ইনিংসে খেলেছিলেন ১২৩ বল।

গতকাল বুধবার শুরু হওয়া টেষ্টের প্রথম দিনে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। ব্যাট করতে নেমে ২৯৪ রানের মাথায় ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। গতকালই অপরাজিত থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তাসকিন আহমেদ আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করে। দুজনে মিলে একটি রেকর্ড জুটি গড়ে দলকে পাহাড় সমান রান তুলে দেন মাহমুদউল্লাহ-তাসকিন। এরপর তাসকিন আউট হলে নামেন শেষ উইকেট ইবাদত হোসেন। শূন্য রানে ইবাদত ফিরলেও ১৫০ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

প্রথম ইনিংসের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অধিনায়ক মুমিনুল হক ৯২ বল খেলে ১৩ চারে ৭০ রান করেছেন। লিটন দাস ১৪৭ বল খেলে ১৩ চারে ৯৫ রান করেছেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২৭৮ বল খেলে ১৭ চার ও ১টি ছক্কায় ১৫০ রানে অপরাজিত আছেন এবং ১৩৪ বল খেলে ১১ চারে ৭৫ রান করেছেন তাসকিন আহমেদ।

জিম্বাবুয়ের হয়ে মুজারাবানি ৪টি, ত্রিপানো ও নিয়াচি ২টি করে এবং এনগারাভা ও মিল্টন সাম্বা ১টি করে উইকেট নেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত