নেইমারের ঝলকেই ব্রাজিলের জয়

কোপা আমেরিকায় নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও নেইমারের শেষ ঝলকে কলোম্বিয়াকে হারিয়ে জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক ব্রাজিল। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) রিও ডি জেনিরোর স্তাদিও অলিম্পিকো নিলতন সান্তোসে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে তিতের শিষ্যরা।

এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই নেইমারকে স্বাভাবিক ছন্দময় ফুটবল খেলতে দেয়নি কলম্বিয়া। বোতলবন্দি করে রাখা হয়েছে নেইমারকে। বক্সের সামনে বল পেলেই তাকে ঘিরে ধরেছে দু-তিনজন। কখনো নেইমারের ওপর চাপ তৈরি করে বল কেড়ে নিয়েছে তারা, কখনো বা ফাউল করে তাকে থামিয়েছে।

মাঠের খেলায় হয়তো নেইমারকে আটকে রাখা সম্ভব। কিন্তু কর্নার, ফ্রি-কিকেতো তাকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। আর সেই কর্নার থেকেই ঝলক দেখিয়েছেন নেইমার। ম্যাচের একদম শেষ মুহুর্তে অর্থাৎ ৯০+১০ মিনিটে দুর্দান্ত একটি কর্নার কিক করলেন নেইমার। তার সেই কর্নার কিক থেকে হেডে গোল দিয়ে ব্রাজিলকে জয় এনে দেন কাসেমিরো।

কাসেমিরো

এর আগে শুরুতে কলম্বিয়ার রক্ষণ ভাঙতে যখন ব্যস্ত নেইমার, তখন দুর্দান্ত এক প্রতি আক্রমণে প্রথমে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। গোল খাওয়ার পর ব্রাজিলকে সমতায় ফেরানো গোলটি করেছেন বদলি হিসেবে নামা রবার্তো ফিরমিনো। ম্যাচের ১০ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে কলম্বিয়ার এক মিডফিল্ডার বল দেন ডান প্রান্তে থাকা কুয়াদ্রাদোকে। ব্রাজিলের একজনকে কাটিয়ে তিনি ক্রস করেন বক্সে। দুর্দান্ত এক অ্যাক্রোবেটিক শটে ব্রাজিলের জালে বল পাঠান লুইস দিয়াস। এতে ১-০তে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া।

এই এক গোলে এগিয়ে গিয়ে নিজেদের রক্ষণভাগে দেয়াল তৈরি করে কলম্বিয়া। এই দেয়াল ভাঙতেই পারছিলনা নেইমাররা। সাথে কোনো সুযোগও তৈরি করতে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড জেসুস। অবশেষে এই ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।

বিরতি থেকে ফিরে এসে গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে ব্রাজিল। তবে বিরতির পর ফিরমিনোকে নামান কোচ তিতে। আর সেই কাজটিই সারলেন ফিরমিনো। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে রেনান লোদির ক্রসে বক্সের মধ্য থেকে হেডে গোলটি করেন ফিরমিনো। এতে সমতায় ফেরে ব্রাজিল। তবে এ নিয়ে জোর আপত্তি তুলেছে কলম্বিয়া দল। লোদি ক্রস করার আগে বল রেফারির গায়ে লেগেছিল, এখানেই আপত্তি তাদের।

রবের্তো ফিরমিনো

রেফারি অনেকক্ষণ ধরে বিষয়টি নিয়ে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির দায়িত্বে যিনি আছেন তার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় দুই দলের খেলোয়াড়েরাই তাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য গোলের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।

তবে এরে আগে গোল পেতে পারতেন নেইমার। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে কলম্বিয়ার রক্ষণে ধূলো দিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন নেইমার। ফিরমিনোর দুর্দান্ত ফ্লিক থেকে পাওয়া বলটি কলম্বিয়ার গোলকিপার ওসপিনার কাছ থেকে দূরেও ঠেলে নেন নেইমার। কিন্তু ডানপ্রান্ত থেকে কোনাকুনি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে এই ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।

এই জয়ে ৩ ম্যাচের ৩টিতেই জিয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে আছে ব্রাজিল। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়তে আছে কলম্বিয়া। ৩ ম্যাচ খেলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়তে আছে পেরু। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থস্থানে আছে ইকুয়েডোর। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে আছে ভেনেজুয়েল।