মুমিনুলেন সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের পৌনে ৫শ’

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২১, ১৮:৩১

ক্রীড়া ডেস্ক

শান্তর পর ফিরছে মুমিনুলও। অবশেষে দুজনকেই ফেরাতে সক্ষম হয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে সেঞ্চুরি করেই ফিরেছে মুমিনুল হক। দেশের বাইরে সেঞ্চুরি করতে না পারার দুর্নামটাও মুছে দিলো টেস্ট অধিনায়ক।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে সেঞ্চুরি করে সাজঘরে ফেরে মুমিনুল হক।

অধিনায়কত্বের ভার কাঁধে ওঠার পর থেকে টেস্টে ভরাডুবিই বেশির ভাগ সময় সঙ্গী হয়েছে মুমিনুলের। এ ছাড়া দেশের মাঠ ছাড়া সেঞ্চুরি করতে পারে না-এমন একটা ‘দুর্নাম’ও লেগেছে তার নামের পাশে। পাল্লেকেলেতে সেঞ্চুরি করে সেই দুর্নাম দূর করল এবং নিজের অধিনায়কত্বে টেস্টে একটা ভালো মুহূর্তও পেল।

বুধবার ১৫০ রানের জুটি নিয়ে প্রথম দিন শেষ করে শান্ত ও মুমিনুল। আজ দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ২৪২ রানের বিশাল জুটি ভাঙে তাদের। দেড়শতাধিক রান করে সাজঘরে ফিরে যায় শান্ত। কিন্তু শ্রীলঙ্কান বোলারদের সামনে তখনো ‘দেয়াল’ হয়ে ছিল মুমিনুল। নাজমুলের বিদায়ের পর তার সঙ্গী হয় মুশফিকুর রহিম। ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে প্রথম দিন শেষ করে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ১৫০ বলে ৬ চারে ৬৪ রান করেছিল তিনি। সেটি ছিল তার ১৪তম হাফসেঞ্চুরি।

মুমিনুল হক

কিন্তু নিজের হাফসেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করার ক্ষেত্রে একটা পরিসংখ্যানগত সুনাম মুমিনুলের বরাবরই ছিল। সেটা আজ করে ফেলল। ২২৪ বল খেলে ১০টি বাউন্ডারিতে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১তম সেঞ্চুরিটি করে ফেলল মুমিনুল হক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি তার চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। আর এটিই যেকোনো বিচারেই মুমিনুলের জন্য বিশেষ কিছুই। সেঞ্চুরির পরে আর বেশি দূর এগোতে পারেনি তিনি। ৩০৪ বলে ১১ চারে ১২৭ করে ধনাঞ্জয় ডি সিলভার শিকার হয় মুমিনুল হক। লাহুরি কুমারার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরে তিনি।

মুমিনুল হক আউট

এর আগে বুধবার টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ দল। দীলয় ৮ রানের মাথায় বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে সাইফ হাসানের উইকেটটি যখন হারায় তখন ভরসা হয়ে নামে নাজমুল হাসান শান্ত। এক প্রান্ত থেকে ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকা তামিমকে ধীর গতিতে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিল শান্ত। করে দুজনে ১৪৪ রানের জুটি। দলীয় ১৫২ রানের মাথায় বিশ্ব ফার্নান্দোর শিকার হয় তামিম। তখন শান্তকে সঙ্গ দিতে নামে অধিনায়ক মুমিনুল হক।

তবে আউট হওয়ার আগে তামিম ওয়ানডে মেজাজে খেলে ৫৩ বলেই তুলে নেয় নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম ফিফটি। এর মধ্যে ৪০ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। তবে মাত্র ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরিটি করতে না পারাটা তার জন্য দঃখজনক। প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে লঙ্কানদের গুড লেন্থের সামনে নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি তিনি। ১০১ বলে ১৫টি চারের মাধ্যমে ৯০ রান করে বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরে দেশসেরা বাঁহাতি এই ওপেনার।

তামিম ইকবাল

তবে তামিম আউট হওয়ার আগেই নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরিটি করে ফেলেছিল শান্ত। ১২০ বলে ৭ চারে হাফসেঞ্চুরিটি করেন তিনি। এরপর মুমিনুলকে নিয়ে ধীর গতিতে এগোতে থাকা শান্ত গতকালই টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পায়। শুধু টেস্ট ক্যারিয়ারই নয়, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেই এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি।

ইনিংসের ৭৪তম ওভারে সেঞ্চুরিটির দেখা পায় শান্ত। ২৩৫ বলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় সেঞ্চুরিটি সাজায় শান্ত। চার বছর চলছে শান্তর টেস্ট ক্যারিয়ার। এর মধ্যে অবশ্য বেশি টেস্ট খেলতে পারেনি। মাত্র ৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে এর আগে একবারই ফিফটি পেয়েছিল। গত বছর ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, করেছিল ৭১। পরে ২৮৮ বলে ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১২৬ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করে তিনি।

আজ দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে নাজমুলের চোয়ালবদ্ধ ইনিংসের সমাপ্তিটা ঘটে। দুদিন ধরে ইনিংসটাকে যেভাবে গুছিয়েছিল, তার শেষটা ঠিক তেমনভাবে হয়নি। লাহিরু কুমারার বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়েছে নাজমুল। শটটা একটু আগেভাগেই খেলে ফেলেছিল তিনি। তারপরেও নাজমুল দারুণ একটা ইনিংস খেলেই আউট হয়েছে ৩৭৮ বলে ১৭টি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কায় সাজায় ১৬৩ রানের ইনিংস। নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটি বড় করে সেটির উদযাপনটা ভালোই হলো নাজমুলের। দলীয় ৩৯৪ রানের মাথায় সাজ ঘরে ফেরে নাজমুল।

নাজমুল হাসান শান্ত

নাজমুল ফেরার পর মুমিনুলের সঙ্গী হয় মুশফিকুর রহিম। তবে শান্তর পর মুমিনুলও ফিরে গেলে নামে লিটন কুমার দাস। আপাতত বৃষ্টির কারণে আজ দ্বিতীয় দিন আগে ভাগেই শেষ হয়ে গেল। ১০৭ বলে ৪ চারে ৪৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছে মুশফিক এবং ৩৯ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ২৫ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন লিটন। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৭৪ রান করেছে বাংলাদেশ।

অপরাজিত মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত