শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে রাজশাহীর নাটকীয় জয়

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৫৩

সাহস ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের আজ উদ্বোধনীর দিনে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বেক্সিমকো ঢাকাকে হারিয়ে নাটকীয় জয়ে শুভ সূচনা করেছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকাকে মাত্র ২ রানে হারিয়েছে রাজশাহী।

এদিন টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শেখ মেহেদি হাসান ও নুরুল হাসানের সুবাদে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

রাজশহীর দুই ওপেনার শান্ত ও আনিসুল ইসলাম ইমন ৩১ রান যোগ করেন। শান্ত ৩১ রান করে আউট হন। এরপর রনি তালুকদার ৬, মোহাম্মদ আশরাফুল ৫, ফজলে মাহমুদ শূন্য ও ইমন ৩৫ দ্রুত বিদায় নিলে ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রাজশাহী।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে নুরুল হাসান সোহান ও শেখ মেহেদি হাসান দলকে চাপ মুক্ত করার দায়িত্ব নেন। তাদের ঝড়ো গতির ব্যাটিং সেই কাজটি সহজ করে দেয়। ৮৯ রানের জুটি গড়েন তারা। মেহেদি ৩১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। দলীয় ১৫৪ রানের মাথায় সোহান ২০ বলে ৩৯ রান করে আউট হন। মেহেদি অবশ্য ইনিংস আর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। ৫০ রান করেই আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান করে রাজশাহী।

ঢাকার হয়ে বল হাতে মুক্তার আলী ৩টি এবং মেহেদি হাসান রানা, নাসুম আহমেদ ও নাঈম হাসান ১টি করে উইকেট নেন।

রাজশাহীর দেওয়া ১৭০ রানের টার্গেটে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রানে থেমে যায় ঢাকার ইনিংস। দলের হয়ে প্রথম বলেই মেহেদি হাসানের অফস্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ইনসাইড আউট শটে এক্সট্রা কভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান বিশ্বজয়ী যুব দলের বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। পরের ওভারে এবাদত হোসেনকে পরপর দুই বলে হাঁকান চার ও ছক্কা। কিন্তু বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি জুনিয়র তামিম। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে রানআউটে কাটা পড়েন। রাজশাহী অধিনায়ক নাজমুল শান্ত সরাসরি থ্রো'তে বিদায়ঘণ্টা বাজান ১১ বলে ১৮ রান করা তানজিদ তামিমের। হতাশ করেন আরেক ওপেনার ইয়াসির আলি রাব্বি। পঞ্চম ওভারে ফেরার আগে দুই চারের মারে ৮ বলে করেন ৯ রান। তিন নম্বরে নামা নাইম শেখ ফিরেন ১৭ বলে দুটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৬ রান করে।

তবে চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন ঢাকার অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ও বিশ্বজয়ী যুব দলের অধিনায়ক আকবর আলি। দুজন মিলে ৫৩ বলে যোগ করেন ৭১ রান। আকবর-মুশফিকের জুটিতে জয়ের পথে এগুচ্ছিল ঢাকা। শেষের পাঁচ ওভারে তাদের করতে হতো ৪৭ রান। রানের চাপ যেন পেয়ে বসে আকবরের ওপর, ফরহাদ রেজার করা ১৬তম ওভারে বড় শট খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন মুগ্ধর হাতে। আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৪ রান।

আকবর ফিরে গেলেও মুশফিক উইকেটে থাকায় চিন্তার কারণ ছিল না ঢাকার। পঞ্চম উইকেটে তার সঙ্গী হয়ে আসেন সাব্বির রহমান। কিন্তু সাব্বিরকে নিয়ে বেশিক্ষণ খেলতে পারেননি মুশফিক। এবাদতের স্লোয়ার ডেলিভারিতে স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন উইকেটরক্ষক নুরুল সোহানের হাতে। মুশফিক ৩৪ বলে ৪১ রান করে ফিরে গেলে পরাজয়ের শঙ্কা ঘিরে ধরতে শুরু করে ঢাকাকে। তবু আশার প্রতীক হয়ে ছিলেন সাব্বির।

মুশফিক ফিরে যাওয়ার সময় ঢাকার সমীকরণ ছিল ১৭ বলে ৩৬ রান। যা করতে উইকেটে ছিলেন দুর্দান্ত বোলিং করা মুক্তার আলি ও সাব্বির। মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে সাব্বিরের পরিচিত থাকলেও ঝড়টা তোলেন মুক্তারই। শেষ দুই ওভারে বাকি ছিল ৩০ রান। ফরহাদ রেজার করা ১৯তম ওভারে তিন ছক্কা হাঁকান মুক্তার, সমীকরণ নিয়ে আসেন নিজেদের পক্ষে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাকি থাকে ৯ রান।

রাজশাহীর পক্ষে শেষ ওভারে ৯ রান ঠেকানোর দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যাট হাতে ম্যাচের একমাত্র হাফসেঞ্চুরিয়ান মেহেদি হাসানকে। শেষ ওভারের প্রথম তিন বল ডট দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মেহেদি। তবে চতুর্থ বলে চার মেরে দেন মুক্তার। সমীকরণ যখন ২ বলে ৫ রান, তখন আবার পঞ্চম বলটি হয় নো। বেশ কিছুক্ষণ সময় ধরে রিপ্লে দেখে সেটিকে নো বল কল করেন থার্ড আম্পায়ার।

ফলে সমীকরণ নেমে আসে ২ বলে ৪ রানে। কিন্তু এটি নিতে পারেননি আগের ওভারে তিন ছক্কা হাঁকানো মুক্তার। পঞ্চম বল ডট খেলার পর শেষ বলে ১ রান নেন তিনি। জাদুকরী শেষ ওভারে দলকে ২ রানে জেতার মেহেদি। নিজের ৪ ওভারের মাত্র ২২ রান খরচ করে একটি উইকেটও নেন মেহেদি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত