বিশ্বকাপ নয়, র‌্যাংকিংয়ে ১৫০ নিচে থাকার প্রতিশ্রুতি সালাউদ্দিনের

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:২০

সাহস ডেস্ক

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন ২০১২ সালে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে। এই প্রতিশ্রুতির ৮ বছর পেরিয়ে ২০২২ সন্নিকটে, অথচ এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বও বাংলাদেশের কাছে অনেক দূরের ব্যাপার। তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত বাফুফে সভাপতি এবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বিশ্বকাপ নয়, ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ১৫০ নিচে থাকবে বাংলাদেশ।

রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে নতুন নির্বাচনের ইশতেহার গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন সম্মিলিত পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

বাফুফের সভাপতি হিসেবে ১২ বছর অতিক্রান্ত করেছেন সালাউদ্দিন। এই এক যুগে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অনেক কিছুকে লক্ষ্য বানিয়েছেন। কিন্তু সে সব প্রতিশ্রুতির খুব কমই বাস্তবায়ন করতে দেখা গেছে।

আগামী ৩ অক্টোবরের বাফুফে নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ ৩৬ দফার ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ। ১৮৭ তম স্থানে থাকা বাংলাদেশকে আপাতত ১৫০-এর নিচে নামিয়ে আনাকেই সালাউদ্দিন মনে করছেন বড় লক্ষ্যই। তার সময়ই যে ফিফার তালিকায় ১৯৭-এ নেমে গিয়েছিল বাংলাদেশ।

গতবার ২৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিল কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পরিষদ। এবার তাতে যোগ হয়েছে বাড়তি ১১ দফা। এবারের ইশতেহারে জাতীয় দলের জন্য ‘দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবসম্মত’ পরিকল্পনা, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা পুনরুদ্ধার, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ নিয়মিত আয়োজন, এসএ গেমসের শিরোপা জয়, মেয়েদের লিগের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা এবং ফিফা র‍্যাংকিংয়ে উন্নতির জন্য পরিকল্পনা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

ঘরোয়া ও বয়সভিত্তিক ফুটবলের উন্নয়নে ‘সুনির্দিষ্ট পঞ্জিকা’ প্রণয়ন, নির্ধারিত সময়ে দলবদল, জেলা ফুটবল লিগগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়োজন, প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় বিভাগ লিগে অংশ নেওয়া দলগুলোকে লাইসেন্সের আওতায় আনা ও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলো আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন স্টেডিয়ামের সংখ্যা বাড়ানো, দেশের চারটি স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজন, টার্ফগুলোর পুনঃউন্নয়ন, ঘরোয়া ফুটবলের দলগুলোর হোম ভেন্যুর প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানের জিমনেশিয়াম তৈরির উদ্যোগের কথাও বলা হয়েছে ইশতেহারে।

সালাউদ্দিনকে আজ মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে খেলার সেই লক্ষ্যের কথা। তিনি অবশ্য আজ বলেছেন, ‘এখানে আপনাদের একটা কনফিউশন আছে। আমি বিশ্বকাপ খেলব বলিনি। কোয়ালিফাই করার চেষ্টা করব বলেছি। এই টার্গেট নিয়েই তো এগোতে হবে। আমি যখন আসি তখন আমরা ১৮০তম স্থানে ছিলাম। এখন আছি ১৮৭তম স্থানে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সও কিন্তু শীর্ষে নাই।’

তিনি বলেন, ‘র‍্যাংকিংয়ে এগোতে হলে ফিফার প্রীতি ম্যাচগুলো গুরুত্বপূর্ণ। বেশি বেশি ম্যাচ খেললে এগুনোর সুযোগ থাকে। আমাদের আর্থিক সংকট ছিল, যে কারণে আমরা অত বেশি ম্যাচ খেলতে পারিনি। এদেশে একটা পরিপূর্ণ ফুটবল স্টেডিয়াম নাই। এ ব্যাপারে সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে।’

কাজী সালাউদ্দিন আরও বলেন, ‘আগামী অক্টোবর ২০২৪ এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের উন্নতির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। যাতে করে ফিফায় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে ১৫০ এর নিচে নিয়ে যাওয়া যায়।’

কাতার বিশ্বকাপকে লক্ষ্য বানানোর সময় সালাউদ্দিন দ্বিতীয় মেয়াদে ছিলেন বাফুফের মসনদে। এরপর ২০১৬ সালে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে সে মেয়াদও শেষ করেছেন। এবার চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচন করবেন বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।

এক নজরে সম্মিলিত পরিষদ

সভাপতি: কাজী মো. সালাউদ্দিন

সিনিয়র সহ-সভাপতি: আবদুস সালাম মুর্শেদী

সহ-সভাপতি: ইমরুল হাসান, কাজী নাবিল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম বাবু, আতাউর রহমান মানিক

সদস্য: অমিত খান শুভ্র, ইকবাল হোসেন, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, মো. জাকির হোসেন, মাহফুজা আক্তার কিরণ, হারুনুর রশিদ, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইলিয়াছ হোসেন, বিজন বড়ুয়া, আসাদুজ্জামান মিঠু, কামরুল হাসান হিলটন, সৈয়দ রিয়াজুল করিম, ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ ও নুরুল ইসলাম নুরু।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত