ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে নারীদের অনুপ্রেরণা

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:০৮

সাহস ডেস্ক

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আজ বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ভারত। তাই উত্তেজনাটা বোধ হয় একটু বেশিই। টি-টোয়েন্টিতে বড় দলগুলোর বিপক্ষে ভারত আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই সবচেয়ে বেশি, ২টি করে জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। 
এর মধ্যে ভারতের বিপক্ষে জয় দুটি বাংলাদেশের কাছে বিশেষ কিছুই। হওয়াটাই স্বাভাবিক, কারণ ভারতকে হারিয়েই যে ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ জিতেছিল মেয়েরা। অন্য জয়টিও ওই এশিয়া কাপেই। তাই আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে এশিয়া কাপের দুটি জয় বড় অনুপ্রেরণা হয়েই থাকছে।

আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) বিকেল ৫টায় পার্থে ভারতের মুখোমুখি হবে টাইগ্রেসরা।

ভারতকে দুইবার হারানোর পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও দুটি জয় এসেছে বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চার জয়ের সঙ্গে আরও দুটি জয় এসেছে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এই জয়গুলো প্রমাণ করে মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের উঠে আসার ব্যাপারটি। আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগে জয়ের মধুর স্মৃতিগুলো খুব করেই মনে পড়বে সালমা-জাহানারাদের।

প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ, সেপ্টেম্বর ২০১২, ঢাকা
সে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই জয়ের স্বাদ পান বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পুরো ২০ ওভার খেলে ৬ উইকেটে ১০৬ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২১ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়ে সেদিন বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন সালমা খাতুন। একটি করে উইকেট পান খাদিজাতুল কুবরা ও রুমানা আহমেদ। তিথি সরকারের ক্ষিপ্রতায় রানআউট হয় দুটি। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টি-বাধার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। তাও সেদিন জয়ের পথে বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ৭৩ রান। অধিনায়ক সালমা খাতুনের ঝড়ে (১৪ বলে ২৭, ৪টি চার ও এক ছক্কা) ১২.১ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ, অক্টোবর ২০১২, গুয়াংজু
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার মেয়েরা। গোটা ইনিংস জুড়েই ব্যাটিং বিপর্যয়ে ছিল বাংলাদেশ। ৩৩ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থেকে এক রুমানা আহমেদই দলের সংগ্রহকে ৬২-তে নিয়ে যান। এক ওভার বল করে কোনো রান না দিয়ে তিন উইকেট নেন শ্রীলঙ্কার সান্দামালি দোলাওয়াত্তা। পরে বাংলাদেশের মতো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে লঙ্কানরাও। মাত্র ছয় রানে চার উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস একাই ধসিয়ে দেন সালমা খাতুন। ৫৭ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ পায় ৫ রানের এক অসাধারণ জয়।

প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, নারী ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি, এপ্রিল ২০১৪, সিলেট
বাংলাদেশের পরের বড় জয়টাও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সালমা খাতুন। শারমিন আখতারের ১৮, সালমার ২২ ও রুমানা আহমেদের ৪১ রানের সুবাদে ২০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান তোলে বাংলাদেশ। পরে ব্যাট করতে নেমে ১১২ রানেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ৩ রানে জেতে বাংলাদেশ। চার ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন পান্না ঘোষ। একটি করে উইকেট নেন রুমানা, সালমা ও জাহানারা।

প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ, জুন ২০১৮, কুয়ালালামপুর
টসে জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক সালমা খাতুন। ২০ ওভার ব্যাটিং করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান তুলতে পারে পাকিস্তানের মেয়েরা। দুটি উইকেট নেন নাহিদা আখতার। একটি করে উইকেট নেন সালমা-রুমানা ও ফাহিমা খাতুন। পরে ব্যাট করতে নেমে শামীমা সুলতানা (৩৩ বলে ৩১) ও নিগার সুলতানার (৩৫ বলে ৩১) ব্যাটে চড়ে ১৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরা হন ফাহিমা খাতুন।

প্রতিপক্ষ ভারত, নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ, জুন ২০১৮, কুয়ালালামপুর
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কাউর। হরমনপ্রীত (৩৭ বলে ৪২), দীপ্তি শর্মা (২৮ বলে ৩২) ও পূজা বস্ত্রকারের (২০ বলে ২০) তিনটি ইনিংসের ওপর ভর করে বিশ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রানের বড় স্কোর গড়ে ভারতের মেয়েরা। ২১ রানে ৩ উইকেট নেন রুমানা। একটি উইকেট নেন সালমা। পরে ব্যাট করতে নেমে শামীমা সুলতানা (২৩ বলে সাত চারে ৩৩), ফারজানা হক (৪৬ বলে পাঁচ চার ও এক ছক্কায় ৫২) ও রুমানা আহমেদের (৩৪ বলে ৬টি চারে ৪২) ব্যাটে ভর করে অনায়াসে জিতে যায় বাংলাদেশ, দুই বল হাতে রেখেই।

প্রতিপক্ষ ভারত, নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ ফাইনাল, জুন ২০১৮, কুয়ালালামপুর
ফাইনালে ভারতের স্কোর আগের ম্যাচের মতো অত বেশি ছিল না। টসে জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ১১২ রানেই আটকে দেয় বাংলাদেশের মেয়েরা। দুটি করে উইকেট নেন খাদিজাতুল কুবরা ও রুমানা আহমেদ। একটি করে উইকেট নেন সালমা ও জাহানারা। পরে ব্যাট করতে নেমে লেগ স্পিনার পুনম যাদবের তোপে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র নয় রানে চার উইকেট নেন পুনম। টপ অর্ডারের চারজন পুনমের শিকার হলেও বাকি ব্যাটসম্যানদের ছোট অথচ কার্যকরী সংগ্রহে জয়ের লক্ষ্যটা কখনো নাগালের বাইরে যায়নি। নিগার সুলতানা (২৪ বলে ২৭) ও রুমানা আহমেদের (২২ বলে ২৩) ব্যাটে চড়ে এশিয়া সেরার মুকুট পরে বাংলাদেশ।

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত