অবশেষে টেইলরের ব্যাটেই ভারতকে হারাল নিউজিল্যান্ড

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অপরাজিত রস টেইলরের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভারতকে হারিয়ে দুরন জয় তুলে নিয়ে এগিয়ে থাকল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। এর আগে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল কিউইরা।

৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) হ্যামিল্টনে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।

তবে ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডে এই ম্যাচ এখন দ্বিতীয় স্থানে আছে। এর আগে ২০১৯ সালে মোহালিতে ৩৫৯ রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।

এদিন টসে জিতে আগে ভারতকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় কিউইদের অধিনায়ক টম লাথাম। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৪৭ রান তুলে ভারত।

দলের হয়ে শ্রেয়াসের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি এবং লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলির ফিফটির ইনিংসে ভর করে বিশাল সংগ্রহ পায় ভারত। দুই অপেবার পৃথ্বী শ এবং মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ওপেনিং জুটিতে আসে ৫০ রান। এরপর ৪ রানের ব্যবধানে দুজনেই বিদায় নেওয়ার পর হাল ধরেন কোহলি ও আইয়ার।

ইশ সোদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে কোহলির ব্যাট থেকে আসে দারুণ এক ফিফটি। শুধু তাই না, ওয়ানডেতে নিজের ৫৮তম ফিফটির পথে তিনি ওয়ানডেতে ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলীকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে গাঙ্গুলীর ৫ হাজার ১০৪ রানের বিপরীতে কোহলির রান এখন ৫ হাজার ১২৩।

ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে কোহলি মাত্র ৮৭ ম্যাচেই গাঙ্গুলীকে ছাড়িয়ে গেছেন। এই সময়ে তার গড় প্রায় ৭৭ এবং সেঞ্চুরি ২১টি আর ফিফটি ২৩টি। ওয়ানডে অধিনায়কদের তালিকায় কোহলির বর্তমান অবস্থান সপ্তম হলেও ভারতীয়দের ক্ষেত্রে তার অবস্থান তিনে। তালিকায় তার আগে আছেন শুধু মহেন্দ্র সিং ধোনি ও মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন।

সবমিলিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে রানের তালিকায় শীর্ষে আছেন রকি পন্টিং (২৩০ ম্যাচে ৮ হাজার ৪৯৭ রান)। এরপর দ্বিতীয় স্থানে আছেন ধোনি (২০০ ম্যাচে ৬ হাজার ৬৪১ রান)। তৃতীয় স্থানে আছেন সাবেক কিউই অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং (২১৮ ম্যাচে ৬ হাজার ২৯৫ রান)।

তবে এদিন ভারতের হয়ে আইয়ার সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া এই ব্যাটসম্যান ১০৭ বলে ১১টি ও ১টি ছক্কায় ১০৩ রান করেছেন। তবে চমকে দিয়েছেন রাহুল। তাকে আজ পাঁচে নামানো হয়েছিল। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এখানেও সফল তিনি। ৬৪ বলে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৮ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন এই ডানহাতি। আর কেদার যাদব অপরাজিত ছিলেন ২৬ রান নিয়ে।

কিউইদের হয়ে টিম সাউদি নিয়েছেন ২টি, এবং গ্র্যান্ডহোম ও সোদি ১টি করে উইকেট নেন।

ভারতের দেওয়া ৩৪৮ রানের জবাবে রস টেইলরের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ভর করে ৪ উইকেট ও ১১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগিতক নিউজিল্যান্ড।

দলের হয়ে কিউইদের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস মিলে তুলে ফেলেছিলেন ৮৫ রান। ৪১ বলে ৩২ রান করে গাপটিল বিদায় নেওয়ার পর টম ব্ল্যান্ডেল (৯) যখন একই পথ ধরলেন কিউইদের মনে তখন হারের শঙ্কা ভর করল।

দলের বিপদে একবার ফের দাঁড়িয়ে গেলেন নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেইলর। নিকোলসকে নিয়ে শুরুতে ৬২ রান ও পরে টম ল্যাথামের সঙ্গে ১৩৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথ দেখান এই ডানহাতি। অধিনায়ক ল্যাথামের ব্যাট থেকে আসে ৪৮ বলে ৮ চার ২ ছক্কায় ৬৯ রান।

ল্যাথামের বিদায়ের পর জেমস নিশাম (৯) ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম (১) অল্পতেই বিদায় নেওয়ায় শেষদিকে আবার চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। দুই উইকেটই হারায় মোহাম্মদ শামির করা ইনিংসের ৪৬তম ওভারের। ফলে ফের একবার শেষের ভুলে হারের শঙ্কাও ভর করে কিউই শিবিরে।

তবে টানা উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে ২১তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাঁকানো টেইলর ঠিকই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। শেষদিকে ১ চার ও ১ ছক্কায় ৯ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মিচেল স্যান্টনার। আর টেইলর অপরাজিত থাকেন ৮৪ বলে ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৯ রান করে।

ভারত হয়ে কুলদীপ যাদব ২টি এবং মোহাম্মদ শামি ও শার্দূল ঠাকুর ১টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন রস টেইলর।

৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ইডেন পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল।