ক্রীড়াজগতেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:২৬ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:৪৯

অনলাইন ডেস্ক

করোনাভাইরাসে আতঙ্ক চীন ছাপিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে সবাই। শঙ্কিত ক্রীড়াজগতও। শুধু চীনেই করোনাভাইরাসে হাজারো মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর এ কারণে করোনাভাইরাস আতঙ্কে বেশকিছু আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসর এবং অলিম্পিক বাছাইপর্ব টুর্নামেন্ট হয় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, নয়তো অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

২৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) চীনে বসতে চলা প্রো লিগের এবারের আসর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন (এফআইএইচ)।

ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া টোকিও অলিম্পিকের ফুটবল, বাস্কেটবল এবং বক্সিং বাছাইপর্বের খেলা চীন থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আগামী ৮-৯ ফেব্রুয়ারি বেলজিয়ামের বিপক্ষে দুটি ফিল্ড হকি ম্যাচ খেলার কথা ছিল চীনা নারী দলের। ম্যাচগুলো পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এফআইএইচ জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী।

আগামী ২৪ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া টোকিও অলিম্পিককে সামনে রেখে ফেব্রুয়ারি থেকে বাছাইপর্ব শুরু হবে। কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে নারীদের ফুটবল ও বাস্কেটবল খেলা অস্ট্রেলিয়া ও সার্বিয়াতে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ফুটবল ম্যাচগুলো ইউহান, যেখান থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে, সেখানে আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে বক্সিংয়ের এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের বাছাইপর্ব চীনের নানজিং থেকে জর্ডানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৩-১৫ মার্চ নানজিংয়ে শুরু হওয়ার কথা ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের ইনডোর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, যা এখন হুমকির মুখে।

এমনকি ই-স্পোর্টস প্রতিযোগিতাও করোনাভাইরাস শঙ্কায় আক্রান্ত হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চীনের লিগ অব লিজেন্ড প্রো লিগ স্থগিত করা হয়েছে। খেলোয়াড়দের সুরক্ষিত রাখতেই এ সিদ্ধান্ত।

চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। এর মধ্যে ১ হাজার আক্রান্তের অবস্থা বেশ সঙ্গিন। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ার কারণ এই ভাইরাস খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্তের পরিবার কিংবা তাদের সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্যকর্মীরাই আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।

চীন থেকে করোনাভাইরাস এখন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং জার্মানিতেও পৌঁছে গেছে। এসব দেশে চীন থেকে ফিরে আসা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে এজন্য এয়ারপোর্টগুলোতে চীনফেরত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সর্বশেষ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৩২ জন মারা গেছেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে শুরুতে উপসর্গ হিসেবে ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর এমন সব অসুখ দেখা দেয়। কিন্তু এর ফলে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

শুরুতে করোনাভাইরাস ইউহানের বাজারে বিক্রি হওয়া কোনো বন্য প্রাণীর মাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১০০ পার হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এর কারণে শহরের ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। এর মধ্যে বহু বিদেশিও আছেন।

সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম