স্প্যানিশ সুপার কাপ

সৌদির জেদ্দায় পাড়ি জমিয়েছে বার্সা, রিয়াল

প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:০২

সাহস ডেস্ক

স্প্যানিশ সুপার কাপে (সুপারকোপা দে এস্পানা) অংশ নিতে সৌদি আরবের জেদ্দায় পাড়ি জমিয়েছে বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ এবং ভ্যালেন্সিয়ার মতো স্প্যানিশ ফুটবলের সব জায়ান্টরা।

৮ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে ৪০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যমানের সুপারকোপার প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৯ জানুয়ারি অ্যাতলেটিকোর মুখোমুখি হবে বার্সা। ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।

এরইমধ্যে বার্সেলোনা বনাম অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। আর রিয়াল মাদ্রিদ বনাম ভ্যালেন্সিয়ার মধ্যকার ম্যাচের মাত্র ১০ হাজার টিকিট বাকি আছে।

প্রত্যেক দল ১২ হাজার করে টিকিট পেয়েছে সমর্থকদের কাছে বেচার জন্য, যা এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ম্যাচগুলো উপভোগ করতে পারবেন নারী ফুটবলপ্রেমীরাও। তবে স্টেডিয়ামের নির্দিষ্ট অঞ্চল তাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এমনটা কয়েক মাস আগেও ভাবা যেতো না। কিন্তু সৌদি সরকার এ ব্যাপারে উদারনীতি বেছে নিয়েছে।

স্প্যানিশ ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্কিত অনেকেই সুপারকোপার সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি ভ্যালেন্সিয়ায় বিক্ষোভ-আন্দোলনও হয়েছে। কিন্তু স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন এই আয়োজন সফল করতে ৬ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে যাচ্ছে।

স্প্যানিশ সুপার কাপ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকছে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের। শিরোপা জয়ী দল ১১.৫ মিলিয়ন ইউরো পকেটে পুরবে। তবে বাকিরাও একইভাবে লাভবান হতে পারে। কারণ বার্সা-রিয়ালের কারণেই এই সুপার কাপের মূল্যমান ৪০ মিলিয়ন ইউরো।

সুপার কোপার গত আসর বসেছিল মরক্কোয়। মূলত সেবারই প্রথম স্পেনের বাইরে আয়োজিত হয় এই টুর্নামেন্ট। ইবনে বতুতা স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচে সেভিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় বার্সেলোনা। কাতালান জায়ান্টরা প্রতিযোগিতার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দলও (১৩ বার)।

এই টুর্নামেন্টটি নিজেদের দেশে আয়োজন করতে অবশ্য সৌদিকে বিশাল অঙ্কই খরচ করতে হয়েছে। আয়োজনে আগ্রহীদের তালিকায় ছিল চীন, কাতার ও ভারত। তবে বিডিংয়ে তাদের হারিয়ে ১২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আসরটি আয়োজনের স্বত্ত্ব পায় সৌদি আরব।

জেদ্দার স্টেডিয়ামে গত বছর সুপারকোপ্পা ইতালিয়ানার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল দুই ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্টাস ও এসি মিলান। এছাড়া ২০১৯ সালের শেষদিকে এই মাঠেই এক প্রীতি ম্যাচে মোকাবিলা করেছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা।

জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামের মোট দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৬২ হাজার। ২০১৪ সালের মে মাসে মোট ৫৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। স্টেডিয়ামটি সৌদি আরবের ফুটবল ইতিহাসের এক বিশাল পরিবর্তনের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। চার দলের এই টুর্নামেন্টের আগামী তিন আসর সৌদি আরবের মাটিতেই বসবে।

সৌদি আরবের ফুটবল সমর্থকরা অবশ্য পাঁচ শীর্ষ তারকা: বার্সেলোনার গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান, মিডফিল্ডার আর্থার মেলো, ফরোয়ার্ড উসমানে দেম্বেলে, রিয়াল মাদ্রিদের ইডেন হ্যাজার্ড এবং ভ্যালেন্সিয়ার রদ্রিগো মোরেনো সবাই ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের খেলা উপভোগ করতে পারছেন না। তবে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলোর মহাতারকা যেমন মেসি, লুইস সুয়ারেস, করিম বেনজেমা, সার্জিও রামোস, আঁতোয়া গ্রিজম্যান, রদ্রিগো, হুহাও ফেলিক্সদের খেলা উপভোগ করতে পারবেন জেদ্দাবাসী।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ মক্কায় অবস্থিত জেদ্দা শহরটি লোহিত সাগর দিয়ে ঘেরা। এই শহরে রয়েছে অসংখ্য রিসোর্ট আর বিলাসবহুল হোটেল। মুসলমানদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই শহরের গুরুত্ব অনেক। তবে সৌদি আরবের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশের বাকি জায়গার মতো এই শহরকেও বিশ্বের কাছে পর্যটন নগরী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।

পার্শ্ববর্তী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে জেদ্দা নগরে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন। ‘কিংডম টাওয়ার’ (১০০০ মিটার) নামের এই ভবনটি উচ্চতার দিক থেকে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা’কে (৮২৮ মিটার) বড় ব্যবধানে ছাড়িয়ে যাবে।

সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত