যাদের এখন আর দাম নেই!

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:২৯

সাহস ডেস্ক

লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আধিপত্য নষ্ট করে দুই বছর আগেই ব্যালন ডি'অর জেতা লুকা মদরিচের সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের চুক্তির বাকি আছে আর মাত্র ছয় মাস। মদরিচ চাইলেই এই জানুয়ারিতে নিয়মানুযায়ী অন্য যেকোনো ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারবেন। তাঁদের প্রস্তাব যদি মদরিচের পছন্দ হয়, আগামী জুনে যোগ দিতে পারবেন তাঁদের হয়ে!

ভাবা যায়? যে তারকা রিয়ালের হয়ে দুই বছর আগেই ব্যালন ডি'অর জিতলেন, তাকেই রিয়াল ছেড়ে দিচ্ছে এভাবে? আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাটা এমনই, কেননা এখনো ৩৪ বছর বয়সী এই ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডারের সঙ্গে চুক্তি বৃদ্ধি বিষয়ক কোনো আলোচনা করেনি রিয়াল। আর রিয়াল যদি চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহ না দেখায়, তাহলে আসছে জুনে ফ্রি তেই অন্য ক্লাবে যোগ দেবেন মদরিচ।

দেখে নেই মদরিচের পাশাপাশি আর কে কে আগামী জুনে ফ্রি তে অন্য ক্লাবে যোগ দিতে পারেন-
১. ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন- ডেনমার্কের এই আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার বহুদিন ধরেই টটেনহাম হটস্পার ছাড়ার চেষ্টা করছেন। নতুন কোচ হোসে মরিনহো আসার পরেও এখনো এরিকসেনকে নতুন চুক্তি দেননি। ২৭ বছর বয়সী কুশলী এই মিডফিল্ডারকে দলে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইন্টার মিলান, রিয়াল মাদ্রিদ ও পিএসজির মতো দলগুলো।

২. উইলিয়ান- ব্রাজিলের এই রাইট উইঙ্গারকে পাওয়ার জন্য গত কয়েক মৌসুম ধরে চেষ্টা চালিয়ে গেছে বার্সেলোনা। কিন্তু চেলসি ছাড়েনি। সেই উইলিয়ানের চুক্তির এখন বাকি আছে মাত্র ছয় মাস। বার্সা চাইলে আগামী জুনে তাঁদের পরম প্রার্থিত এই উইঙ্গারকে আনতে পারে, কোনো খরচ ছাড়াই।

৩. টমাস মুনিয়ের- বেলজিয়ামের এই রাইটব্যাকের সঙ্গে চুক্তি বাড়ানোর ব্যাপারে পিএসজি আগ্রহ দেখায়নি এখনো। বিকল্প রাইটব্যাক হিসেবে আর্সেনাল, টটেনহামের মতো ক্লাবগুলোতে সামনের মৌসুমে দেখা যেতে পারে তাঁকে।

৪. এডিনসন কাভানি- পিএসজির এই স্ট্রাইকারের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে ডিয়েগো সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।

৫. ড্রাইস মার্টেনস- নাপোলির এই তারকা স্ট্রাইকারের চুক্তি প্রায় শেষের দিকে। মালিকপক্ষের সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছে না, অর্থাৎ নাপোলির সঙ্গে চুক্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে। সে ক্ষেত্রে মার্টেনসকে দলে নিতে পারে ইন্টার মিলান।

৬. নেমানিয়া মাতিচ- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডার কোচ ওলে গুনার সুলশারের পরিকল্পনায় নেই। ইতালির ক্লাব জুভেন্টাস হতে পারে মাতিচের নতুন ঠিকানা।

৭. মারিও গতসা- বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করা সেই গতসার ক্যারিয়ার সেই ম্যাচের পর থেকে যে নিম্নগামী হয়েছে, ওঠার নাম নেই আর। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে দ্বিতীয়বার গিয়ে আলো ছড়াতে পারেননি। জার্মান ক্লাব হার্থা বার্লিন দলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তাঁকে।

৮. হোসে কায়েহন- তাঁর অবস্থাও সতীর্থ মার্টেনসের মতোই। মালিকপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে চুক্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনা হারিয়েছেন। চীনের ক্লাব দালিয়ান ইফাং কিনতে পারে তাঁকে।

৯. ইয়ান ভার্তোনে- টটেনহামের এই বেলজিয়ান সেন্টারব্যাকের সঙ্গে এখনো চুক্তি বাড়ায়নি ক্লাবটি। নতুন কোচ হোসে মরিনহো ভার্তোনের রক্ষণ সঙ্গী টোবি অল্ডারভেইরেল্ডের চুক্তি বাড়ালেও ভার্তোনের ভবিষ্যৎ এখনো ঝুলিয়ে রেখেছেন সুতোয়। সুযোগ বুঝে ভার্তোনেকে দলে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে তাঁর সাবেক ক্লাব আয়াক্স ও নাপোলি।

১০. ব্লেইজ মাতুইদি- বিশ্বকাপজয়ী এই মিডফিল্ডার জুভেন্টাসে এখন আর অস্পর্শনীয় নন। চুক্তির বাকি আছে আর মাত্র ছয় মাস। তবে জুভেন্টাস তাঁর সঙ্গে ২০২২ সাল পর্যন্ত চুক্তি বাড়াতেও পারে।

১১. পেদ্রো- চেলসির এই উইঙ্গারের চুক্তিও প্রায় শেষের দিকে। আপাতত ইউরোপের কোনো ক্লাব তাঁর প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। ইন্টার মায়ামি ও নিউ ইয়র্ক সিটির মতো এমএলএস এর কিছু ক্লাব দলে চাইছে তাঁকে।

১২. আলেক্সান্ডার নিউবেল- জার্মান এই তরুণ গোলরক্ষককে বলা হচ্ছে 'নতুন ম্যানুয়েল নয়্যার'। শালকের সঙ্গে চুক্তি শেষে এই গোলরক্ষক বায়ার্নে যোগ দিচ্ছেন ফ্রি তে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

১৩. নাচো ফার্নান্দেজ- বহু বছর ধরে রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগের বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে খেলে গেছেন নাচো। সে নাচোর চুক্তিও প্রায় শেষের দিকে। নাচোকে যে দলে নিতে পারবে, সে ক্লাব একই সঙ্গে সেন্টারব্যাক, লেফটব্যাক ও রাইটব্যাক, তিন জায়গারই খেলোয়াড় পেয়ে যাবে।

১৪. ডেভিড সিলভা- গত দশ বছরে প্রিমিয়ার লিগের শ্রেষ্ঠতম এই মিডফিল্ডারকে এবারই ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি গায়ে সর্বশেষ দেখা যাচ্ছে। পরে কোন ক্লাবে যাবেন, এখনো জানা যায়নি।

১৫. ফার্নান্দিনহো- সিলভার মতো সিটির আরেক পুরোনো পোড় খাওয়া যোদ্ধা ফার্নান্দিনহো। তিনিও সিটির জার্সি গায়ে শেষ মৌসুম খেলছেন এইবার।

১৬. অলিভিয়ের জিরু- বিশ্বকাপজয়ী এই ফরাসি স্ট্রাইকারকে দলে আর রাখবে না চেলসি। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিরুর জন্য প্রচুর প্রস্তাব আসলেও জাতীয় দলের কোচের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে দেখা যেতে পারে অলিম্পিক লিওঁর মতো শীর্ষ লিগের কোনো ক্লাবে।

১৭. থিয়াগো সিলভা- পিএসজির বহুদিনের পোড় খাওয়া এই ডিফেন্ডারের বয়স হয়ে গেছে। তবে পিএসজি তাঁর সঙ্গে আরও এক বছরের চুক্তি নবায়ন করতে পারে।

এরা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য যেসব তারকা খেলোয়াড় চাইলেই আগামী জুনে ফ্রি তে যাওয়ার জন্য অন্যান্য ক্লাবের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারেন, তারা হলেন- রায়ান ফ্রেজার (স্কটল্যান্ড, বোর্নমাথ), এরিক বাইয়ি (আইভোরি কোস্ট, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), জাকোমো বোনাভেন্তুরা (ইতালি, এসি মিলান), আর্তেম জিউবা (রাশিয়া, জেনিত সেইন্ট পিটার্সবার্গ), লেভিন কুরজাওয়া (ফ্রান্স, পিএসজি), চার্লস আরাঙ্গিজ (চিলি, বেয়ার লেভারকুজেন), ইয়োসিপ ইলিচিচ (স্লোভেনিয়া, আটালান্টা), এভার বানেগা (আর্জেন্টিনা, সেভিয়া), অ্যাডাম লালানা (ইংল্যান্ড, লিভারপুল), ওয়াল্টার বেনিতেজ (আর্জেন্টিনা, নিস), সেড্রিক সোয়ারেস (পর্তুগাল, সাউদাম্পটন), আলেক্সান্দার কোলারভ (সার্বিয়া, এএস রোমা), এজেকিয়েল গ্যারায় (আর্জেন্টিনা, ভ্যালেন্সিয়া)

সূত্র: প্রথম আলো

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত