হজের ব্যয় বাড়ছে ২০ হাজার টাকা

প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:১০ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৪৫

অনলাইন ডেস্ক

২০ হাজার টাকা ব্যয় বাড়িয়ে এ বছরের হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। হজ প্যাকেজ ১-এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। আগের বছরের চেয়ে যা ২০ হাজার ৫৭১ টাকা বেশি। প্যাকেজ ২-এ ১২ হাজার ৬৪১ টাকা বাড়িয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস চার্জ ও ভাড়া বাড়ানোর কারণে এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।

হজের ব্যয় বাড়ছে প্রতি বছরই। বিগত ৫ বছরে জনপ্রতি হজের ব্যয় বেড়েছে ৬৩ হাজার ৭৫৫ টাকা। প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে ১২ হাজার ৭৫১ টাকা। 

বাড়তি ব্যয়ের হজ প্যাকেজ অনুমোদনের জন্য আজ (সোমবার) অনুষ্ঠিতব্য মন্ত্রিসভা বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া, জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও প্রাণিকল্যাণ আইন অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব। এছাড়া বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

জানা গেছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৭ হাজার ১৯৮ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়। বাকিরা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন।

এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য প্যকেজ ১-এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। প্যাকেজ ২-এর মূল্য ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের হজ প্যাকেজের দাম সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের প্যাকেজ ২-এর টাকার কম হতে পারবে না। গত বছর প্যাকেজ-১ ছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকা। প্যাকেজ-২ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা। গত বছর তা ছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ৩৫৯ টাকা।

বিগত কয়েক বছরের হজ প্যাকেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৫ বছরে জনপ্রতি হজের ব্যয় বেড়েছে ৬৩ হাজার ৭৫৫ টাকা। আর প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে ১২ হাজার ৭৫১ টাকা। প্যাকেজ ১-এ ২০১৭ সালে ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৫ টাকা। যা চলতি বছরের চেয়ে ৬৩ হাজার ৭৫৫ টাকা কম।

প্যাকেজ ২-এ ২০১৭ সালে ছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৪০ টাকা, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা এবং ২০১৫ সালে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। যা চলতি বছরের তুলনায় ৪৭ হাজার ৭৯৪ টাকা কম।

চলতি বছর উভয় প্যাকেজেই বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১০ হাজার ১৯১ টাকা কম। গত বছর বিমানের ভাড়া ছিল এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছিল।

এ বছর মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৬৭ হাজার ৯৬২ টাকা। সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি ও ভাড়ার ওপর কর আরোপ করায় গত বছরের তুলনায় বাড়ি ভাড়া ১০ হাজার ৩৪৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মক্কা-মদিনা-মুজদালিফা-মিনা-আরাফাহ যাতায়াতের বাস ভাড়া ৪০ হাজার ৮৮২ টাকা। গত বছরের তুলনায় এটি ১৫ হাজার ৩২৬ টাকা বেশি। জমজমের পানির খরচও বেড়েছে এক টাকা ৮৭ পয়সা। গত বছর এই খরচ ছিল ২৫৮ টাকা।

সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৫০ সৌদি রিয়াল এবং জেনারেল কার সিন্ডিকেটের অনুকূলে আরও ১৮ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ এক হাজার ৫৩০ টাকা পরিশোধ করবেন প্রতি যাত্রী। সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ সরকার এ অর্থ দেবে।

ট্রেন সার্ভিস যারা গ্রহণ করবেন, তাদের অতিরিক্ত ২৪ হাজার ৯৮১ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য হজযাত্রীর ক্ষেত্রে ১৯ হাজার ৩৫ টাকা সার্ভিস চার্জ ও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।