একবিংশ শতাব্দীর চিকিৎসকদের জন্য করণীয়
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৩, ১৩:১৮

আজকের চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র ছাত্রীদের একবিংশ শতকের চিকিৎসক হবার জন্য কিছু যা করতে হবে
১। আমাদের প্রয়োজন নেই বিশাল বড় এনাটমি বই বদলাতে হবে।আমরা চাই বদল যা হবে যুগ উপযোগী অনেক মেডিক্যাল ছাত্র ছাত্রী নানা দেশের এদেরকে কেমন পরিবর্তন চাই শিক্ষায় এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
এই একবিংশ শতকে মানব দেহ সম্বন্ধে জ্ঞান হবে ভার্চুয়াল রিএলিটির মাধ্যমে, পরিচিত হতে হবে ডিজিটাল হেলথের সাথে, এই শতকে যে প্রযুক্তি এনেছে এই অঙ্গনে পরিবর্তন। এর সাথে চলতে হবে। তাই প্রচলিত লেখা পড়াতে চাই সংস্কার।
আমাদের বর্তমান মেডিকেল কারিকুলাম কি তাল মিলাতে পারবে আগামির চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে ?
আগামি কয়েক বছরের মধ্যে সার্জারি অপারেশন থিয়েটারে সাধারন ভাবেই দৃশ্যমান হবে সারজিকেল রোবট। ইতিমধ্যে সারজিকেল রোবটের বিক্রি বেড়ে যাবে।
বছর দশেকের মধ্যে রেডিওলজি বিভাগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হবে জোরে শোরে। কয়েকবছরের মধ্যে হাসপাতাল ফার্মেসিতে আসবে থ্রি ডি প্রিন্টিং। পারসোনালাইজড ড্রাগ নিদৃষ্ট মত্রায়।
কিন্তু কবে মেডিক্যাল ছাত্ররা পরিচিত হবে এই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সার্জিকেল রোবট আর থ্রি ডি প্রিন্টিং এর সাথে?
এমন পরিচিতি ঘটানো দুর্লভ । হয়ত এই সময়ে জন হপকিন্স, মেয়ো ক্লিনিক বা ক্লিভ্ল্যান্ড ক্লিনিকে গেলে তারা দেখবে এদের চাক্ষুস কারণ এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে গবেষণায় আর পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিতে।
এর প্রথমদিন থেকে এসব প্রযুক্তিকে চিকিৎসা সেবার সাথে সমন্বিত করেছে। এ হয় খুব আশাবাদি কথা, তবে এ কথা সত্য বর্তমানের মেডিকেল কারিকুলাম আমাদের চিকিৎসা শিক্ষার্থীকে তৈরি করছেনা আগামি বিশ্বের চ্যালেঞ্জ নেবার জন্য ।
আমরা সেদিকে নিজের সাধ্যমত এগুতে পারি, যা পারি আর সে জন্য স্থবির বসে থাকা বোকামির কাজ। অগ্রগতি আর প্রগতি কাঙ্ক্ষিত হলে উপরের দিকে তাকাতে হয় নিচের দিকে নয়। আকাশে না পৌছাতে পারলেও ঘরের ছাদ পর্যন্ত পৌছানো অসম্ভব নয়।
১। চিকিৎসা প্রশাসনে নেই প্রশিক্ষণ। মেডিক্যাল ডাক্তারদের কর্ম ক্ষেত্রে বেশ প্রশাসনিক কাজ করতে হয়। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজে সেসব সম্বন্ধে কোন ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়না।
২। এসেন্সিয়াল স্কিল শেখানোর ক্ষেত্রে খামতি। প্রযুক্তি এত বেশি অগ্রসর যে এদের চালানো না শিখিয়ে বরং তাদের শিখাতে হবে অত্যাবশ্যকীয় দক্ষতা। যাতে করে এরা আগামিতে নিজেদের জ্ঞান আর প্রাথমিক অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করে যেকোন অগ্রসর প্রযুক্তি চালাতে পারে।
৩। অনেক দেশে রোগী থাকে আড়ালে। আজকালকার কারিকুলাম রোগীর চাহিদার দিকে কম দৃষ্টিপাত করে। অবশ্য আমাদের দেশে রোগীর কাছে শিক্ষার্থীদের যাবার সুযোগ বেশি। এই হল আমাদের বড় শক্তি।
৪। কারিকুলাম অনেকে সেকেলে। এখন রোগীদের অনেক ক্ষমতায়ন হয়েছে , চিকিৎসা সেবা সমৃদ্ধ হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি তে।
৫। এই কারিকুলাম জীবন ভর শেখাকে উদ্ধুদ্ধ করেনা।
প্রযুক্তির প্রসার হচ্ছে আর নতুন উদ্ভাবন এত হচ্ছে কারো চাকরি বা প্রাকটিস নতুন অগ্রগতির সাথে হাল নাগাদ না হলে মুল ধারা থেকে ঝরে পড়বে অনেকে।
নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিত না হলে কি করে এমন দৃষ্টিভঙ্গি শেখানো হবে মেডিক্যাল কলেজে? তাহলে কি করা উচিত পরিবর্তন ?
- বিশাল বইএর পাঠাগারে মাথা গুজে পড়া আর বইএর আর তথ্যের ভারে তাদের নূ্যব্জ না করে , উপাত্ত মুখস্থ না করে তাদের কে যথাযথ ডিজিটাল লিটারেসি স্কিল শেখার সুযোগ দিতে হবে।
- আর ডিজিটাল হেলথ সম্বন্ধে দিতে হবে ধারনা এতে তারা যোগ্য হবে আগামির চিকিৎসা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়।
- শিক্ষা বছরে আর রেসিডেন্সি সময়ে ফরমাল শিখা আর অভিজ্ঞতা যথেষ্ট নয় অগ্রসর হেলথ কেয়ার সিস্টেমে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।
এখন প্রযুক্তি এত অগ্রসর, যা বলার নয় আমরা কি শিক্ষার্থীদের অয়ারেবল ডাটা সম্বন্ধে জানাচ্ছি?
- রোগী এসব ব্যবহার করে ডাক্তারের চেয়ে অগ্রসর ধারনা নেবে প্রথম দিন থেকে এসবে ধারনা চায় ডাক্তারদের।
- এখন থেকে প্রযুক্তির সাথে সমতালে চলা আর রোগীর পাশে বসে শিক্ষার অভিজ্ঞতা অর্জন প্রয়োজন প্রথম দিন থেকে be in close proximity to real patients.
- আমাদের দেশে শক্তি হলা আমাদের সে সুযোগ আছে আর তাই বিদেশ থেকে শিক্ষার্থী এসে এদেশে সাব্যাটিকাল করে কয়েক মাস
সত্যই তাদের মুখ থেকে তাদের দুর্ভোগের কথা শোনা আর তাদের বক্তব্য শোনা আবশ্যক হবে।
- রোগী হল উন্মুত্ত বই চিকিৎসা পিতা অস লারের এই কথা সর্বকালে সত্য।
ডিজাইন থিঙ্কিং
- প্রযুক্তি বান্ধব প্রাপ্যতার সাথে রোগীর চাহিদা ম্যাচিং এতে ব্যবসা ক্ষেত্রেজ্ঞান বাড়বে।
- ডিজিটাল হেলথ টেকনোলোজি উপলব্ধি আর এর মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন।
- আগামি দিনে তাদের হেলথ কেয়ারে প্রয়োজন এমন প্রযুক্তির সাথে পরিচয়।
- আরটিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স/। ভি আর / এ আর, ৩ ডি প্রিন্টিং রোবটিক্স আর চিপ জেনম সিকুএন্সিং এদের সাথে পরিচয়।
রোগীর ক্ষমতায়ন সম্বন্ধে ধারনা
- আজকাল এরা ব্যবহার করেন হেলথ সেন্সর,ট্রাকারস , আর তথ্য পান অনলাইন থেকে ।
- আজকাল এম্পাওয়ারড রোগী এসব জেনে ডাক্তারের মুখামুখি হবেন আর ডাক্তারদের তাদেরর সম অংশীদার ভাববেন চিকিৎসা পপ্লানিং আর থেরাপি নেয়ার জন্য আর তারা বুঝে শুনে নেবেন\
তাই আগের সিনারিও বদলে যাবে।
নতুন প্রযুক্তি আগমনে আসবে ইথিকেল ইসু্য
- নব প্রযুক্তি আসায় অনেক গুলো ইথিকেল ইসু আসবে। বুকের এক্স রে তে একটি নডুল যদি চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় মেশিন লার্নিং এলগারিথম কে দায় নেবে ?
জেনম এডিটিং পদ্ধতি কত কার্যকর হবে প্রয়োগে
- নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগে আসবে অনেক ইথিকেল ইসু আর নবীন ডাক্তারদের এসব বোঝা আর দ্বন্দ্বগুলো কি করা সমাধান হবে তা বোঝা দরকার
অগ্রসর মেডিক্যাল কমিউনিকেশন আর সে সঙ্গে মেডিক্যাল লিটারেসি
- চিকিৎসা প্রাক্টিস কমিউনিকশনের ভিত্তির উপর নির্ভর।আজকালের যোগাযোগে যেহেতু সামাজিক মাধ্যম আর অনান্য মাধ্যমের অনেক গুরুত্ব তাই মেডিক্যাল কারিকুলাম অবশ্য থাকতে হবে ডিজিটাল লিটারেসি।
- সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা মেডিক্যাল এডুকেশনে থাকতে হবে নতুন প্রযুক্তি। হললেন্স প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারচুয়ালি তারা শিখবে এনাটমি এরকম নানা ডিভাইস হবে অবলম্বন মৌলিক বিজ্ঞান শিক্ষায়\ক্লিনিকেল স্কিল রুম ইতিমধ্যে এসেছে সিমুলেশন পদ্ধতি এর পর রিয়াল ম্পেসেন্ট এক্সপিরেন্সের জুড়ি নেই।
গ্যামিফিকেশন ভিত্তিক লারনিং
- আমাদের যে মুল্যবান তথ্য আছে আগের অনেক বিজ্ঞতথ্য সেগুলো যেমন পড়াউচিত তেমনি কিছু কিছু জিনিস গ্যামিফিকেশন পদ্দতিতেও শেখা যায় যেমন google- read along app আছে আবার knowledge testing site আছে সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রফেসর-স্টুডেন্ট ইকুয়াল লেভেল পাটনারশিপ
- আজকাল যেভাবে রোগী ডাক্তার সম্পর্ক হায়ারারকিয়াল বা অনুক্রম বিন্যাস বা অসম সম্পর্ক থেকে অংশিদারিত্বে এসে ঠেকেছে তেমনি প্রফেসর ছাত্রের মধ্যে সম্পর্ক বা যোগাযোগ তেমন হতে পারে ।
প্রকৃষ্ট জ্ঞান অন্বেষণে অধ্যাপক অন্তিম দ্বার রক্ষিতা হবে কেন?
- তিনিও শিখতে পারেন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এরকম কিছু আবিষ্কার অনেক সময় হয়েছে মেডিক্যাল সায়েন্সে।
যেমন ঘটেছে ইন্সুলিন আবিষ্কারের সময় শিক্ষক ছাত্র মিলে আবিষ্কার। মনে হবে এ খুব উচ্চাভিলাষী ধারনা কি ন্তু সমসাময়িক অগ্রসর চিন্তা আর অগ্রগতি সম্বন্ধে না জানলে আগামিতে এমন পরিবর্তনের চিন্তা হবে না মন মননে ।
- একদিন হয়ত থমকে যেতে না হয় আমাদের নবীন ডাক্তারদের এসব প্রযুক্তি নির্ভর জগতে ।না যেন হতে হয় এলিস ইন দা অয়ান্ডার ল্যান্ডের অভিজ্ঞতা।
- আর সেজন্য যেন না হতে হয় পর নির্ভর ।যেন না হতে হয়
আরেক ধরনের নতজানু পরনির্ভরতা জ্ঞান বিজ্ঞানের জগতে ।
প্রফেসর (অব:) ডা শুভাগত চৌধুরি। একজন চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিদ্যার শিক্ষক হিসেবে স্বনামেই তিনি পরিচিত। জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি জাতীয় পত্রিকাগুলোতে নিয়মিত লিখছেন। তাঁর প্রকাশিত স্বাস্থ্য বিষয়ক গ্রন্থগুলো ব্যাপক পাঠক সমাদৃত এবং স্বাস্থ্যসচেতনতার দলিল হিসেবে পরিগণিত। তিনি বাংলা একাডেমি পুরষ্কারপ্রাপ্ত সন্মানিত লেখক।