উড়ে যাক করোনার কালো মেঘ

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২০, ১৯:২২

করোনাভাইরাসের কারণে আজ এক কঠিন সময় পার করছে পৃথিবী। মাত্র চার মাসেরও কম সময়ে সমগ্র বিশ্বের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। থেমে গেছে মানুষের আনাগোনা। বন্ধ হয়েছে অর্থনীতির চঞ্চল চাকা। মানুষ ফিরে গেছে সেই আদিম জীবনে। গোটা পৃথিবীর নগর থেকে নগরে আজ লকডাউন। বাংলাদেশ পৃথিবীর বাইরের দেশ নয়। অন্যদেশ থেকে সংখ্যায় কম হলেও এদেশেও হু হু করে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। সময় যতো যাচ্ছে, অঙ্ক ততো বাড়ছে। আর ততোই বেড়ে চলেছে উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘৬০ দিন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় উলম্ফন থাকে।’ তাই আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে করোনার ব্যাপক বিস্তৃতির শঙ্কা রয়েই যায়। মন ভালো না থাকলে মানুষ ভালো থাকে না। করোনাকালে মন ভালো করা খবর দিয়েছেন সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের একদল গবেষক। করোনার স্থায়িত্বের বিষয়ে পূর্বাভাসে জানিয়েছেন- মে মাসেই বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে করোনাভাইরাস। আর বিশ্ব থেকে এই ভাইরাস বিদায় নেবে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে। নি:সন্দেহে এ মুহুর্তে খবরটা গৃহবন্দি ১৮ কোটি বাঙালির মনে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেবে বৈকি! 

একথা ঠিক, বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ে শিশু-কিশোরসহ বয়স্ক মানুষের মনে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা, উৎকণ্ঠা, ভয় আর উদ্বেগ। উদ্বেগ থাকবে না কেনো? এমনিতেই রোগ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, জীবাণূ, মৃত্যু এসব শব্দ কানে এলে কার না মনে জাগে  উদ্বেগ? ভয়ের আরও কারণ হলো, বাংলাদেশে করোনার সামাজিক সংক্রমণ ঘটে গেছে। এই ভাইরাস মোকাবেলায় ভ্যাক্সিন বা ওষুধ না থাকায় ভয়-আতঙ্ক আরও বেশি চরমে উঠেছে। ভ্যাকসিনের জন্য চাতক পাখির মতো তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বের মানুষ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করার জন্য অপেক্ষায় সবাই। এদিকে করোনা সেকেন্ডের জন্যও থেমে নেই। বিস্ফোরণের মতো ছড়িয়ে পরিস্থিতি কঠিনতর করে তুলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘এ মুহুর্তে কোন ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও ১৮ মাস সময় লাগবে ভ্যাকসিন বানাতে। তারপর উৎপাদিত ভ্যাকসিন বিপণন হয়ে মানুষের শরীরে প্রয়োগ করতে করতে চলে যাবে আরও সময়।’ এটাই শেষ কথা নয়। সুইজারল্যান্ডের বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক রিচার্ড নেহের ‘দ্য সায়েন্টিস্ট’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘করোনাভাইরাস খুব দ্রুত জেনেটিক কোড পরিবর্তন করে থাকে। বিগত চার মাসে প্রায় আট বার নিজেকে পাল্টেছে। প্রচন্ড গরমেও সক্রিয় থাকে করোনা। ১৫ দিনেরও কম সময় এভাবে নিজেকে পাল্টায় বলে এই ভাইরাস মহামারির রূপ নিয়েছে।’ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ইমিউনোলজি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ বিভাগের গবেষক স্টিফেন কিসলার বলেন, ‘এখন যেমন ‘ফ্লু’ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেভাবে করোনাভাইরাস পুরোপুরি নির্মূল করা যাবে না। আক্রমণের ধরন-ধারণ দেখে মনে হচ্ছে এটা প্রতিবছর আক্রমণ করবে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। ক্রমাগত এভাবে করোনার জেনেটিক কোডে পরিবর্তন হতে থাকলে নতুন করে বারবার ভ্যাকসিন বানাতে হবে। তাই আগামী দিনে বাঁচতে হলে হয়তো প্রতিবছর নতুন নতুন ভ্যাকসিন নিতে হতে পারে মানুষকে।’ আর তাই বিশ্বের তাবৎ বিজ্ঞানী, গবেষকদের এখন অবাক দীর্ঘশ্বাস! এমন নিয়ত পরিবর্তনশীল প্রাণভোমরা যে প্রতিটা পরিবর্তনেই আরও সাংঘাতিক হয়ে উঠবে, সে কথা তো বিজ্ঞান আগে বলেনি? তাই সমাজ-সভ্যতা এই আতঙ্কের দোরগোড়ায়। 

গবেষকদের মতে, ‘করোনাভাইরাস মানুষের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সাপ-লুডু খেলছে। যদি সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থেকে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে কেবল সাময়িক কিছুটা ভাটা পড়বে মহামারী। দেখা দেবে স্বাভাবিক অবস্থার আভাস। তার মানে এই নয় যে, করোনা শেষ হয়ে গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত কোথাও একটা ভাইরাস থাকবে ততক্ষণ নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে।’ ক’দিন আগে চীন ও সিঙ্গাপুর ভেবেছিলো, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। কিন্তু আবার নতুন করে আক্রান্তের খবর আসছে এখন। এ মুহুর্তে তাই কেউই বলতে পারছে না এই সংক্রমণ থেকে আমরা কবে মুক্তি পাবো? কীভাবে পাবো? করোনাযুদ্ধের মাঝখানে দাঁড়িয়ে সর্বশেষ পরিণাম কী? তা এখনও আমাদের অজানা। স্বাভাবিক কারণে মনের ওপর তৈরি হয়েছে অজানা ভয় আর উদ্বেগ।

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক সবই যেহেতু করোনার জন্য। সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে মানা ছাড়া করোনাকে পরাস্ত করার কোন উপায় যেহেতু নেই। তাই সংক্রমণের ভয়ে সৃষ্ট আশংকায় কর্মব্যস্ত মানুষদের প্রায় সকলেই এখন দিনরাত বাসায় বসে রয়েছেন। করোনার লকডাউনের এক একটা দিন অফুরন্ত অবসর নিয়ে যেনো গিলে খেতে এসেছে। প্রথম প্রথম কিছুদিন হঠাৎ ছুটি ছুটি মনে করে ব্যাপারটা খারাপ না লাগলেও দীর্ঘ দিন গৃহবন্দি থাকায় মনের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছে। টিভি দেখা আর ওয়াইফাই স্মার্টফোনে ডিজিটাল বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে সময় কাটানো, বাসার টুকটাক কাজ করেও সময় যেনো কাটে না.. বড় অস্থির অস্থির লাগে। সময়কে মনে হয় ‘জিস রাত কি সুবাহ্ নিহি’র চাইতেও ভয়ানক কালান্তক। যা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন লকডাউনে গৃহবন্দি ১৮ কোটি বাঙালি। অন্যদেশের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বভাবগতভাবেই অনেক বেশি সামাজিক ও মিশুক। প্রতিদিনের চেনা মানুষগুলোকে না দেখলে ভাত হজম হয়না। দেখা সাক্ষাৎ, কথাবার্তা বন্ধ থাকাটাও বাঙালির কাছে রোজগারহীনতার মতোই অন্যরকম দারিদ্র্যতা ভর করেছে। যা রীতিমতো কষ্টকর। করোনাকালে মহল­ার প্রাত্যহিক চায়ের দোকানের আড্ডা থেমে গেছে। গ্রামে, হাটের ভীড়-আড্ডা, সবই বন্ধ হয়ে গেছে। অভ্যস্ত হওয়া এই জীবনযাত্রা থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণে সাময়িক উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। এটাই তো স্বাভাবিক। সত্যিই তো? লকডাউনে কত দিন, আর কত দিন? শুধু উদ্বেগ আর আশঙ্কা বুকের ভিতরে চেপে একটা একটা করে দিন কাটানো যায়? 

বাংলাদেশে শুরুতে ছিলো সংক্রমণের উদ্বেগ। তারপর যতো দিন গড়াচ্ছে, ততো নতুন নতুন ভয় উদ্বেগ ছায়া ফেলছে মনে। করোনা সংকটের অর্ধশত দিন পার হয়েছে বাংলাদেশে। ৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হবার পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা গুণিতক হারে বাড়ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো ক’দিন আগে করোনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিটসও ছিলোনা বাংলাদেশের হাতে। টেস্টিং কিটস ও পিপিই’র স্বল্পতার কারণে টেস্ট করার গতি ছিলো ধীর। ভ্যাক্সিন হিরো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্রুত পদক্ষেপের ফলে টেস্টিং কিট, পিপিই আমদানী হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর পৃষ্টপোষকতায় ইতোমধ্যে কম মূল্যের দ্রুত করোনা নির্ণয়ক কিট আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র অনুমোদন পেলে তা এদেশে কাজে লেগে যেতে পারে। এছাড়াও নমুনা টেস্টের হার ও টেস্ট কেন্দ্রের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বাড়ানো হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৯ ল্যাবে এখন করোনাভাইরাস পরীক্ষা হচ্ছে। এখন প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজারের মতো টেস্ট করা হচ্ছে। রোগীর সংস্পর্শে আসা সমস্ত ব্যক্তিকে খুঁজে খুঁজে বের করে তাদেরও টেস্ট করার কাজ পালাক্রমে চলছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২০ গুণের বেশি। এই টেস্ট যতো বাড়বে, ততো বোঝা যাবে অবস্থা। জানা যাবে, করোনা সংকট বাংলাদেশে কোন পর্যায়ে রয়েছে? কিন্তু ১৮ কোটি জনসংখ্যার সবাইকে অল্প সময়ে করোনা টেস্ট করা যেমন কঠিন, তেমনই জটিল কাজ। তবুও প্রত্যাশা- এই টেস্ট একদিন ‘জিরো ট্রান্সমিশনে’ পৌঁছবে। এ সময়ে প্রতি মুহুর্তে মানুষকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে বিচিত্র উদ্বেগ। এতো উদ্বেগের মধ্যেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ এলে বাস্তব ক্ষতিকে ছাড়িয়ে যেতে চায়। খবর আসছে, ভাইরাস টেস্টে পজিটিভ ধরা পড়ার পর, কিংবা সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে এই আশঙ্কায়, বিদেশে অনেকে আত্মহত্যা করছেন। দীর্ঘ লকডাউনের ফলে আর্থিক পরিস্থিতির কতটা অবনতি হবে, সেই আশঙ্কা থেকে জার্মানির অঙ্গরাজ্য হেগ-এর অর্থমন্ত্রী টমাস শেফার আত্মহত্যা করেছেন। করোনায় সুস্থ্য হবার পরও যুক্তরাষ্ট্রে এখনো অনেকে আত্মহত্যা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং বলেছেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক অবরোধ চললে আত্মহত্যা বাড়তে পারে।’ বাংলাদেশে কোয়ারেন্টাইন রোগী ভয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তৈরি হচ্ছে ভয়ানক আতঙ্ক। কারণ করোনা সংক্রমিত রোগী একস্থান থেকে আরেক স্থানে যাতায়াতের সময় জ্বালিয়ে দেয় ভয়ানক আগুন। 

বাংলাদেশে করোনা রোগের উদ্বেগ কাজ করছে বলেই সরকারের আহবানে আঠারো কোটি নাগরিক স্বেচ্ছা গৃহবন্দির ডাকে সাড়া দিয়েছেন। না হলে এতো লোককে দিনের পর দিন জোর করে ঘরে আটকে রাখা কি কখনো সম্ভব হতো? তাই যে উদ্বেগের মূলে যথেষ্ট সংশয়ের কারণ রয়েছে। যা নিরাপদ থাকার উপায় সন্ধান করতে মানুষকে প্রণোদিত করে। তা মোটেই ক্ষতিকর নয়। মনে রাখতে হবে, সব উদ্বেগই মন্দ নয়। সব ভয় অকারণ নয় যে, এখনই তাড়াতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রামী বাঙালি হিসেবে বিশ্বখ্যাত। এদেশের মানুষ প্রাকৃতিক নানারকম বিপদাপদ মোকাবেলা করে টিকে থাকায় অভ্যস্ত। অন্যদেশের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের জীবাণূ প্রতিরোধের শক্তি দশগুণ বেশি। বাংলাদেশে এখন অবধি যা ঘটেছে, তাতে রোগে আক্রান্ত হওয়ার চাইতে, দীর্ঘ লকডাউনের ফল কী হবে? সেটা মানুষকে বেশি ভাবাচ্ছে। এটা অকারণ উদ্বেগ নয়। যারা লকডাউনের ফলে কর্মহীন, সেই দরিদ্র মানুষের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। তাই তাদের জন্য সরকার যে আর্থিক প্রনোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছে, তাদের কাছে সে বিষয়ে প্রচার প্রয়োজন। যারা কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরেছেন, তাদের অনেকেই হয়তো এখনও জানেন না তারা কী পেতে পারেন, বা অনুদানগুলো পাওয়ার উপায় কী। তাদের উদ্বেগ দূর করার উপায়, তাদের চাহিদা বুঝে সহায়তার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা তাদের জানানো দরকার। দরিদ্র মানুষ সরকারি সহায়তায় অভ্যস্ত। তাই তারা দাবি জানাতেও অভ্যস্ত। কিন্তু জনসংখ্যার একটা বড় অংশ মধ্যবিক্ত। তারা লজ্জায় কিছু চায় না। শত অভাবেও দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে থাকে। তাদের কথাও ভাবতে হবে। যারা ছোটখাটো পণ্য উৎপাদন করেন, ফেরি করেন, টং দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করেন, বাজার বন্ধ থাকলে তারা একদম অসহায়। এসব মানুষের অনাহারের দশা এখনই হয়তো নয়। কিন্তু পুঁজি, সঞ্চয় ফুরোলে তারা নতুন করে ঋণ পাবেন কীনা, জানা নেই। মহাজন টাকা দিতে রাজি হবে কীনা? বিক্রি করার জন্য ধারে জিনিস কিনতে পারবেন কীনা? আদৌ কবে আবার ক্রেতা ফিরে পাবেন, তারা জানেন না। এই অনিশ্চয়তা মনের মধ্যে এক রকম উদ্বেগ তৈরি করেছে। যা স্বাভাবিক। সঙ্কটের কল্পনায় উদ্বেগ খারাপ নয়। পরীক্ষা নিয়ে ভয় থাকে বলেই ছাত্ররা পড়াশোনা করে। রোজগারের অনিশ্চয়তার কথা ভেবেই সঞ্চয়, বা অধিক আয়ের চেষ্টা করে মানুষ। সংগ্রামী বাঙালি ভালো করেই জানে, প্রতিকূলতায় সকলকে একজোট হয়ে দাঁড়াতে হয়। ফসল মার খেলে কৃষক বিপদগ্রস্ত হন। কারখানা উঠে গেলে শ্রমিক বিপন্ন হন। প্রশ্ন কঠিন হলে ছাত্র বিপাকে পড়ে। তবুও যাদের উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তারা বিশেষভাবে আক্রান্ত হন, ছিটকে যান। এসব মানুষ সাধারণত তারাই, যারা আগে থেকেই বেসামাল হয়ে রয়েছেন। এর কারণ যেমন বাইরে, তেমনি ভেতরেও। 

তাই মহামারির ক্ষতি এড়াতে যা কিছু করা দরকার, তার মধ্যে বেশি রাখতে হয় মনের জোর। চাঙ্গা রাখতে হয় মনোবল। বাংলাদেশের করোনাযুদ্ধে মনোবল চাঙ্গা রাখতে অক্সিজেন জোগাচ্ছেন প্রযুক্তিবান্ধব রাস্ট্রনায়ক, ভয়-ডরহীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি করোনাযুদ্ধে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ঢাকায় বসে সারাদেশের মানুষের সঙ্গে সরাসরি ডিজিটাল সংযুক্ত হয়ে সার্বক্ষণিক পাশে থেকে করোনাযুদ্ধের পরিস্থিতি নিজেই মনিটরিং করছেন। ভয়, আতঙ্কের এই দু:সময়ে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ভার্চুয়াল পাশে পেয়ে দেশবাসী অভিভূত ও প্রেরণাদীপ্ত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক করোনাযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছেন সশস্ত্রবাহিনী, পুলিশ, চিকিৎসক, নার্স, তরুণ প্রজন্মসহ সর্বস্তরের সাহসী জনতা। প্রধানমন্ত্রীর কারণেই এই মহামারীকালে নানান ক্ষেত্রে দ্রæত সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের মতো বাংলাদেশের করোনাযুদ্ধ সঠিক পথেই এগিয়ে চলেছে। যা সত্যিই প্রশংসার ও গৌরবের। এ মুহুর্তে সবাই ঘরে থাকলে, সতর্ক হলে বাংলাদেশ উতরে যাবে করোনা বিপদ। আগের  মতোই ভরে উঠবে অফিস। কর্মমুখর হবে মানুষ। বাড়বে কোলাহল ও ব্যস্ততা। খুলে যাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধুরা আবার আড্ডা দিতে পারবেন। শুধু কাটতে দিন এই মেঘ। কেটে যাবে অচিরেই আতংক-উদ্বেগ। উড়ে যাবে করোনার কালো মেঘের দুর্দিন। বাংলাদেশে ফিরে আসবে আবার সোনালী সুদিন। 

শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

লেখকদের নামঃ