উচ্চশিক্ষিত বেকারদের হতাশার দায়ভার কার?

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০১৯, ১৬:১৩

কেস স্টাডি-০১
চট্টগ্রাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তারেক হোসাইন ২০১৪ সালে পড়াশোনা শেষ করেন। সরকারি চাকরির আশায় তিনি গত ৯ নভেম্বর, ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব তত্ত্বাবধায়ক পদে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই আবেদনের লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হয় ২০১৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে। প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময়ে যখন প্রবেশপত্র হাতে পেলেন তখন সরকারি চাকরির আবেদনের যোগ্যতা হারিয়ে তিনি একটা বেসরকারি কোম্পানির কম্পিউটার অপারেটরের চাকরিতে যোগদান করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মশিউর রহমান। গত ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে রাষ্ট্রয়াত্ব রূপালি ব্যাংকের অফিসার পদে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু প্রায় সাড়ে তিন বছর পর গত ২১ জুলাই, ২০১৯ তারিখে লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছে। যদিও সেই প্রবেশপত্রে এখনো পরীক্ষা কোন তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। এমতাবস্থায়, সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রিতায় তারা দুজনই পুরোপুরি হতাশ। 
 
কেস স্টাডি-০২
রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নেজাম উদ্দিন। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে তার বসবাস। সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি গ্রামের বেসরকারি মাদ্রাসায় খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেন। প্রত্যাশানুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেণী কিংবা দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিতে সুবিধা করতে না পারায়, হাল না ছেড়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদেও আবেদন শুরু করেন। গত ১৯ এপ্রিল, ২০১৯ তারিখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে রাজধানী ঢাকায় যান। ওইদিন শুক্রবার সকালে পরীক্ষা দিয়ে রাতে হোটেল ভাড়া করে পরদিন শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ বেতারের কম্পিউটার অপারেটর কাম ডাটা প্রসেসর পদের পরীক্ষা দিতে বসেন। শনিবার অফিস থেকে ছুটি নিলেও টানা দুইদিন পরীক্ষা দিয়ে ঢাকার রাস্তার যানজট মাড়িয়ে রবিবার রাঙ্গুনিয়া পৌঁছাতে তার দুপুর গড়িয়ে যায়। এতে তার দুইদিনই অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু নেজাম সাহেব মুশকিলে পড়ে গেলেন যখন সোমবার জানতে পারলেন। পরের শনিবার আবারও ভূমি মন্ত্রণালয়ের আরেকটি নিয়োগ পরীক্ষা দিবেন তিনি। এবার তো অফিস তাকে আর ছুটি দিবেন না। তার উপর রাঙ্গুনিয়া থেকে ঢাকায় একদিন থাকা-খাওয়া ও যাতায়াত মিলিয়ে ন্যূনতম চার হাজার টাকা লাগে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পুরো মাসের বেতন সমতুল্য খরচের ভাবনায় তার কপালে ভাঁজ পড়ে। অতএব, তিনি সেই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
 
কেস স্টাডি-০৩
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জসিম উদ্দীন। একাডেমিক ফলাফলে এসএসসি-এইচএসসিতে দুটো জিপিএ-৫ এর পাশাপাশি অনার্সে সিজিপিএ-৩.২৮ এবং মাস্টার্সে সিজিপিএ-৩.৪২ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রাখেন। কিন্তু সরকারি চাকরির ভাইভা বোর্ড থেকে ক্রমাগত প্রত্যাখ্যাত হয়ে ঢুঁ মারলেন কয়েকটা কর্পোরেট হাউজসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এনজিওতে। কিন্তু সেখানকার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের প্যাটার্ন এবং প্রায়োগিক কাজের দক্ষতার পরীক্ষায় তিনি পেরে উঠছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পড়াশোনার সাথে কর্মক্ষেত্রে এসবের কোনই মিল খুঁজে পাচ্ছেন না। এখন পাঁচ বছরের একাডেমিক পড়াশোনা ও ইত্যোকার ভালো ফলাফলকে তার বৃথা সময়ের অপচয় মনে হচ্ছে। শেষমেশ উপায় না পেয়ে কোচিং সেন্টারে ক্লাস এবং টিউশন করিয়ে দিনাতিপাত করছেন। যেহেতু প্রতিযোগিতামূলক কোন চাকরির পরীক্ষাতে একাডেমিক পড়াশোনা ন্যূনতম কাজেই আসছে না, তারচেয়ে ঢের প্রথম বর্ষ থেকে অন্যান্য সরকারি চাকরি কিংবা বিসিএস সম্পর্কিত পড়াশোনায় মনযোগী হওয়াকেই তিনি এখন শ্রেয়তর ভাবছেন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহেদ হোসাইন, চট্টগ্রামের একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা কয়েকটি পদে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও চাকরি নামক সোনার হরিণের দেখা পায়নি। তার অভিযোগ-ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের কারণেই তিনি বারবার ভাইভা বোর্ড থেকে খালি হাতে ফিরে আসছেন। তিনি এও জানান যে, সেখানে নিয়োগের শর্তাবলিতে ফ্রেশ (সদ্য পাশ করা) ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে অভিজ্ঞতার শর্ত জুড়ে দিয়ে অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ প্রার্থী হওয়ায় সুবাদে ৪র্থ-৩য় শ্রেণীর কর্মচারী থেকে অফিসার পদে নিয়োগ পেয়ে যাচ্ছেন। এমনকি তাদের অধিকাংশেরই পড়াশোনা সর্বোচ্চ এসএসসি কিংবা এইচএসসি হলেও তারা চাকরির ফাঁকে-ফাঁকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী (পাস কোর্স) পাশ করে ওসব উচ্চতর পদে নিয়োগের সুবিধা নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, ওই রকম স্বায়ত্বশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে পৌষ্য কোটা কিংবা অফিসের বড়কর্তাদের ম্যানেজ করে ধোঁয়াশার মাঝেও অনেক চাকরি ভাগিয়ে নিচ্ছেন অভ্যন্তরীণ প্রার্থীরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পড়াশোনা শেষ করে বের হওয়া কিংবা দীর্ঘদিন ধরে চাকরির পেছনে ছুঁটে চলা বেকারদের হতাশা দীর্ঘতর হতেই থাকে।
 
উপরের দৃশ্যপটগুলো আমাদের বর্তমান চাকরির বাজারে দেশের উচ্চশিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের সামগ্রিক প্রতিচ্ছবি। প্রায় সব বেকারই এসব অভিন্ন অভিজ্ঞতার শিকার। প্রতিবছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে লক্ষ-লক্ষ ছেলে-মেয়ে বের হচ্ছে। কিন্তু তারা প্রত্যাশানুযায়ী চাকরি পাচ্ছে না। অথচ প্রায়শই গণমাধ্যমে খবর বের হয়-লোকবল সঙ্কটের কারণে অমুক সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, অমুক দপ্তরের অর্ধেক পদই খালি, জনবল সঙ্কটে ধুকছে অমুক প্রতিষ্ঠান ইত্যদি। চাকরি প্রত্যাশী অনেক ছেলে-মেয়ের সাথেই আমার ব্যক্তিগত আলাপ হয়। তাদের অভিজ্ঞতা শুনে এবং ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে যেটুকু জানতে পারলাম তাতে মনে হয়েছে-এর নেপথ্যে চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিহীন শিক্ষাব্যবস্থা, নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, ঢাকা কেন্দ্রীক নিয়োগ পরীক্ষা, উচ্চমূল্যের আবেদন ফরম, একাডেমিক পড়াশোনার সাথে চাকরির পরীক্ষার ভিন্নতা, পুরনো ধাঁচের সিলেবাস, অভিজ্ঞতার অজুহাতে অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের সুবিধা প্রদান এবং সর্বোপরি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রভৃতি বিষয় মোটাদাগে নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। আবার অনেকক্ষেত্রে সরকারি শূণ্য পদগুলো নিয়মিতভাবে পূরণ না হওয়ায় যোগ্যতা থাকার পরও অনেকে বহুমাত্রিক প্রতিযোগিতায় টিকতেও পারছেন না। বিপরীতে, কর্মসংস্থানের জন্য বেসরকারি খাতের মোটামুটিভাবে বিকাশ হলেও চাকরির নিরাপত্তাহীনতা, পদোন্নতির সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব, অবসরকালীন সুবিধা, অন্যান্য সুযোগের বৈষম্যসহ নানাবিধ কারণে অনেক ছেলে-মেয়েরা এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে তুলনামূলক অনাগ্রহী। সেইসাথে বেসরকারি কোম্পানিগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারীদের অনভিজ্ঞতার অজুহাতে বেতন ধরা হয় গড়ে মাত্র ১৫-১৮ হাজার টাকা। যা বর্তমান সময়ের চাহিদার তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। ফলে সরকারী চাকরির প্রতি যেমন ঝোঁক বাড়ছে তেমনি ক্রমাগত বিসিএস একটা ‘ক্রেজ’ (একমাত্র সাধনা-উন্মত্ততা)-এ পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি, ৪০তম বিসিএসে আবেদনকারী সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ১২ হাজার। যা মালদ্বীপ, ব্রুনাই, আইসল্যান্ডের মত দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। বিষয়টা আপাতদৃষ্টিতে হাস্যকর মনে হলেও ভবিষ্যত তরুণ প্রজন্মের জন্য হতাশার ও গ্লানিকর। 
 
অন্যদিকে বড় বড় বেসরকারি ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন-আমাদের কোম্পানিতে লাখ টাকা বেতনে বিদেশ থেকে কর্মী এনে অর্থাৎ দেশীয় কর্মীদের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি বেতন দিয়ে কাজ করাতে হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে পাশ করা গ্র্যাজুয়েটদের দুই লাইন ইংরেজি লিখতে দিলে, কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন প্র্যাকটিক্যাল কাজ দিলে কিংবা বিদেশীদের সাথে একটা মিটিংয়ের জন্য একটা প্রস্তাবনা তৈরি করতে বললে তাদের শরীরে ঘাম ধরে যায়। তাহলে এদের বেতন দিয়ে রেখে আমার প্রতিষ্ঠানের লাভটা কী? বেসরকারি খাতে কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষিতদের চাহিদা বেশি। যে কারণে প্রচলিত ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের বেসরকারি খাতে চাকরি পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। 
 
উপরোল্লেখিত পরস্পর বিপরীতমুখী চিত্রগুলো আরেকটু পরিষ্কার করতে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার পরিসংখ্যানে দৃষ্টি দেওয়া যাক।  বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী দ্যা ইকোনমিস্টের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক বিশেষ প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার। আরেক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের হার ৩২ শতাংশ এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের হার ৪৪ শতাংশ। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, বিআইজিডি এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী চার হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণীদের উপর একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে দেখা যায়, মাত্র ২৪ শতাংশ তরুণ এবং ১০ শতাংশ তরুণীর কম্পিউটার দক্ষতা রয়েছে। মাত্র ২১ শতাংশ তরুণ এবং ১৪ শতাংশ তরুণী ইংরেজিতে দক্ষতা রয়েছে। আর কারিগরি প্রশিক্ষণ পেয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ তরুণ-তরুণী। এতে বোঝা যায়- আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া উচ্চশিক্ষিতরা কেবল পাশ করে সার্টিফিকেট নিয়ে বের হচ্ছেন ঠিকই কিন্তু তারা কর্মক্ষেত্রের বহুমুখী চ্যালেঞ্জ বিষয়ে কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই প্রবেশ করছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের স্নাতকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আর চাকরির বাজারের চাহিদার মধ্যে বিশাল ফারাক থাকায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গত এক দশকে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়লেও শিক্ষার গুণগত মান বাড়েনি। আবার শ্রমবাজার ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের মধ্যে সমন্বয় না থাকা অর্থাৎ ইউনিভার্সিটি-ইন্ডাস্ট্রি কোলাবোরেশনের অভাবে ছেলে-মেয়েদের কর্মক্ষেত্রের উপযোগী দক্ষতাগুলো বাড়ছে না। 
 
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর সর্বশেষ প্রকাশিত ২০১৭ সালের ৪৪তম বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৩৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ২ হাজার ১২৬ জন। এছাড়া আরো শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর পাস করে বের হচ্ছে প্রায় লাখ খানেক ছেলে-মেয়ে। পাশাপাশি দেশের ৩৭ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৩২ লক্ষ ৫ হাজার ১৬৯ জন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ লাখ ২৮ হাজার ৫৪৬ জন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৩৪৬ জন এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে ৮৭ হাজার ১৪৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছেন। কিন্তু এই বিশাল উচ্চশিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার বাস্তবধর্মী কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। দেশীয় ও বিশ্ববাজারের চাহিদা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিতদের কারিগরি ও সৃজনশীল কাজ করার মতো দক্ষতা কম। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের মান বৈশ্বিক মানদন্ডের সঙ্গে তুলনীয় হওয়ার কথা থাকলেও দেশের শিক্ষাকে বাজার উপযোগী নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই সহজেই বলা চলে-উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে এই মুহূর্তে কর্মক্ষেত্রের চাহিদানুযায়ী দক্ষতা অর্জনের পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে দেশের লাখো তরুণ-তরুণী ভয়াবহ হতাশায় নিমজ্জিত হবে। 
 
লেখক: ফ্রিল্যান্সার লেখক ও সাংবাদিক
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

লেখকদের নামঃ