খাঁটি হিরের টুকরো গুলো গহীন পাহাড়ের নিচেই লুকিয়ে থাকে

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:৫৬

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সময় সভাপতি ও সম্পাদক পদের মনোনয়নপত্র কেনার সাহস করিনি, ঐ দুটি সুপার চেয়ারকে সম্মান করে। নিজেকে প্রশ্ন করেছি, আমি কি এই মুহুর্তে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক হিসেবে যোগ্য? অবশ্যই না! তাই মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করিনি, মাত্র ৩ হাজার টাকা দাম থাকা সত্ত্বেও। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেলো কেন্দ্রীয় কমিটিতে যার নূন্যতম সদস্যপদ পাবারও যোগ্যতা নেই, সেও জাতে ওঠার জন্য এক বা একাধিক নমিনেশন ফরম কিনেছে।

হতাশার চূড়ান্ত রূপ দেখলাম, যখন আপা ৩২৩ জনের সবাইকে গণভবনে ডাকলেন সাক্ষাৎকার নিতে। সারাজীবনেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে যার একবার দেখার সুযোগ হতো না, সেও আপার সামনে একই কক্ষে বসে নিজের পরিচয় আর প্রত্যাশার কথা জানানোর সুযোগ পেলো। আরও হতাশ হলাম, যখন শুনলাম কেন্দ্রীয় ‘সুপার ২’ পদে এদের প্রত্যেককেই আমলে নিয়ে সবার বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে ৩ থেকে ৪ বার ভেরিফিকেশন করানো হলো। 

যাদের জয় বাংলা স্লোগান দেবার যোগ্যতা নেই, তারাও এখন চাপাবাজী করে বলে, ‘সম্মেলনের পর আমার বাড়িতে ৩ থেকে ৪ বার করে গিয়েছে গোয়েন্দারা, খুব ‘হট কেন্ডিডেট’ ছিলাম কেন্দ্রীয় কিমিটিতে 'প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি' পদে।’ শুধুমাত্র নমিনেশন ফরম কেনার কারনে নাকি আপার অফিস থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অনেকের পদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে! তার মানে বিষয়টা কি দাঁড়ালো? এদের আসল উদ্দেশ্য ছিলো সেন্ট্রাল কমিটিতে জাস্ট একটা পদ, সভাপতি ও সম্পাদক পদে মনোনয়ন ফরম কেনা ছিলো স্রেফ চাপাবাজী। সব সময় যোগ্যরা সামনে এসে বলবে না, আমি যোগ্য, সব সময় তারা মনোনয়ন ফরম কিনবে না, আনুষ্ঠানিকভাবে বলবে না, আমাকে পদ দিন! 

আমি প্রিয় নেত্রীর কাছে আবেদন জানাবো, শুধুমাত্র ৩২৩ জন কেন, এর বাইরেও যারা প্রকৃত যোগ্য নেতা, তাদের খুঁজে বের করা হোক আমাদের চৌকস গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দিয়ে। খাঁটি হিরের টুকরো গুলো কিন্তু গহীন পাহাড়ের নিচেই লুকিয়ে থাকে, তাদেরকে খুঁজে বের করা হোক। পঁচা কয়লারা যাতে নিজেদের আর হিরা বলে দাবী করার সাহস না পায়

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের থেকে ৩০০ আসনে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৪০২৩ জন। সেই পুরনো বোতলে নতুন কাসুন্দি! একটু আলোচনায় আসতে চাওয়া, কপালে থাকলে আবার গণভবনের নিমন্ত্রণে আপার দেখাও জুটে যেতে পারে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, পার্টি অফিসে যার গায়ের সাথে ধাক্কা লাগে সেও কোনো না কোনো আসনে এমপি হতে চায়! এই মানুষগুলোর কি একটু আক্কেল বলতে কিছু নেই? সবার পেছনে যদি নেত্রী ৫ মিনিট করেও সময় দেন, কতো সময় তার নষ্ট হবে! দেড়মাস পর নির্বাচন, দেশের এই পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কি এতো সময় আছে? এই ঝামেলা মেটানোর! অনেক বিরক্তি আর অভিমান নিয়ে কথাগুলো লিখলাম। কেউ যদি দুঃখ পান, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। বঙ্গবন্ধুর এই দলটাকে অনেক ভালোবাসি। দলের প্রশ্নে কাউকে ছাড় দিতে পারিনা, নিজেকেও ওভারইস্টিমেট করতে জানিনা। আগামী নির্বাচনে আশাকরি ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে দেখতে পাবো। 

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় হোক নৌকার, জয় হোক শেখ হাসিনার।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

লেখকদের নামঃ