মিয়ানমারে দণ্ডিত দুই রয়টার্স সাংবাদিকের আপিলের রায় আজ

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:১৮

সাহস ডেস্ক

মিয়ানমারে দাফতরিক গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের দায়ে দণ্ডিত দুই রয়টার্স সাংবাদিকের আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আজ শুক্রবার। দুই সাংবাদিকের আইনজীবীকে উদ্ধৃত করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ কথা জানিয়েছে। নিম্ন আদালতের রায়ে ৭ বছরের সাজা ঘোষণার পর নভেম্বরের শুরুতে দ্রই রয়টার্স সাংবাদিকের আইনজীবীর পক্ষ থেকে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়েছিল।

গত বছরের ডিসেম্বরে সন্ধ্যায় পুলিশ সদস্যদের আমন্ত্রণে এক রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন মিয়ানমারে কর্মরত রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ও। পরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দাফতরিক গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার দেখায়। রাখাইনের ইন দিন গ্রামে সেনা অভিযানের সময় রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার ওপর অনুসন্ধান চালাতে গিয়েই মামলার কবলে পড়েন তারা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের বিরুদ্ধে সাত বছর করে কারাদণ্ড ঘোষণা করে ইয়াঙ্গুনের একটি জেলা আদালত। নভেম্বরের শুরুতে ইয়াঙ্গুনের হাইকোর্টে দুই সাংবাদিকের পক্ষে আপিল করেন তাদের আইনজীবীরা। ডিসেম্বরে শেষ হয় আপিল শুনানি। আর শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) দেওয়া হচ্ছে রায়।

দুই রয়টার্স সাংবাদিকের আইনজীবী থান জ অং বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) এএফপিকে বলেন, ‘আমরা তাদের মুক্তির আশা করছি।’ শুক্রবার ওই দুই সাংবাদিককে আদালতে হাজির করা হবে না বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিক কিয়াও সোয়ে ও’র স্ত্রী শিত সু উয়িন জানিয়েছেন, তিনি আদালতে উপস্থিত থাকার কথা ভাবছেন। রায়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। সু উয়িন বলেন, ‘রায় শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমি। তারা দুইজন মুক্তি পাবে বলেই আমার বিশ্বাস।’

২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। তবে শুরু থেকে ও পর্যন্ত এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।

জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ইন দিন গ্রামে সংঘটিত এক গণহত্যার চিত্র তুলে এনেছিলেন রয়টার্সের দণ্ডিত দুই সাংবাদিক। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ১০ রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হয়। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ওই ঘটনার দায়ে সেনা-সদস্যদের সাজা দিলেও দাফতরিক গোপনীয়তা আইনে রয়টার্স সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তাদের মুক্তির দাবিতে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে আন্তর্জাতিক চাপ। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেনসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারাও রয়টার্স সাংবাদিকদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত