‘হয় শিক্ষা না হয় অগ্রগতি’

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১১:১৭

এই ছবিটির শুট হয় এই মাসের ১২ তারিখ। একবার তাদের এক শুট করার বিশেষ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার কারনে , তাদের সম্মান রক্ষার্থে স্বদিচ্ছায় ভ্যালেন্টাইনস ডে এর জন্য, অর্থাৎ ১৪ই ফেব্রুয়ারি (এই বছর) এর জন্য শুট করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত উনারা উনাদের কথা রাখেননি, আর বাদ-ই দিলাম আমার সম্মান। শুট এর ৩৭ ঘণ্টার পরও অর্থাৎ ১৪ তারিখ সকাল ১০.৩০ টার মধ্যেও যখন কোন ছবি আসেনি, তখন তাদের সাথে যোগাযোগ করলে, উনারা জানান, ছবি প্রসেস করতে সময় লাগে, তাই ছবি এখনো রেডি না এবং উনারা আশা করছেন হয়তো সেই দিন এর কোন এক সময়ে ছবি একটা দিতে পারবেন। আমি অবাক হলাম এইটা ভেবে যে, উনারা কি ঐদিন অর্থাৎ ১৪ তারিখই আবিষ্কার করেছেন অন্তত একটা ছবি প্রসেস করতে ৩৭ ঘণ্টা সময় লাগে? উনারা কি শুট এর আগেও বা শুট করার মাঝে বা শুট করার প্ল্যানিং এর সময় ও কি বোঝেন নি যে ৩৭/৩০ ঘণ্টা তাদের জন্য স্বল্প সময় একটা ছবি প্রসেস করতে এবং এরসাথে আমাকেও ব্যাপারটি অবগত করানো যে, যে কারণে শুট করা হচ্ছে, সময় স্বল্পতার কারণে ঐদিনের মধ্যে ছবি ডেলিভার/রিলিজ/পোস্ট দেয়া সম্ভব নয়। উনারা যে কাজটি কথা অনুযায়ী করতে পারছেন না বা দিচ্ছেন না, তাও আমাদের জানানোর প্রয়োজনীয়তা মনে করেননি।
 
আমি যখন ১৪তারিখ বেলা ১১ টায় জানতে পারলাম যে, শুধুমাত্র ১৪ তারিখের জন্য তোলা ছবি এখনো রেডি না, আমি কনফিউজড হয়ে আবারো কনফার্ম হওয়ার জন্য জিজ্ঞেস করলাম,“আমি ভেবেছিলাম শুটটি ভ্যালেন্টাইনস ডে এর জন্য করা।” উনারা উত্তর দিলেন, “জী আপু, ভ্যালেন্টাইনস ডে এর জন্যই করা, যেহেতু আমরা আপনার ছবি প্রসেস শেষ করতে পারিনি, তাই আমাদের পেইজ এ অন্য ছবি আপলোড দিয়েছি।” উত্তরে আমি কি বলবো আমার জানা ছিল না, তবে মনে মনে উত্তর খুঁজছি, উনাদের পেইজ এ কার ছবি আপলোড করবেন আর না করবেন তা তো আমার বিজনেস না, আমাকে বলার কারণ কি? ভাগ্য ভালো যে উনারা বলেননি, “ না আপু, শুট টি আগামী বছরের ভ্যালেন্টাইনস ডে এর জন্য তোলা।” হাহাহাহা ...

মিথ্যা বলবো না, এই ধরনের অপেশাদার আচরণ আমি গ্রহণ করতে পারিনা, দুঃখ পেয়েছি বটে । মন টা খারাপ লেগেছিল যে ১২ তারিখ আমি অনেক অসুস্থ ছিলাম কিন্তু আমি শুট বাতিল করিনি, ব্যাপারটি ওরা-ও জানতো। শুধু ১২ তারিখ কেন আমি ৯ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত টানা অসুস্থ থাকলেও আমার কথা দেয়া অনুযায়ী আমার সব কাজই চলে, শুধু চলেনি দেশে থাকা সত্ত্বেও কোন উৎসব উদযাপন। 
কারণ, কথা আর কারও বিশ্বাস ভাঙ্গতে আমি রাজি নই।

যাইহোক, সেই দিন সারাদিন ও সারা সন্ধ্যা শেষে অর্থাৎ ১৪তারিখ রাত ১১.৪০ টায় আমার কাছে ছবি একটা পাঠানো হয়। যেই উপলক্ষে শুট করা সেই সময়ে ছবি না পাওয়ার কারণে আমি আর ছবিটি আজকের আগে আর কোথাও ব্যবহার করিনি। আমি তার প্রতিউত্তরে কোন যোগাযোগ/ বার্তা ও দেইনি। কেননা, ব্যাপারটি আমার প্রতি ও আমার সময়ের প্রতি অসম্মানজনক লেগেছে।

উনারা যদি কাজটি সময়মতো না করার পিছনে কোন বিশেষ কারণ ও থাকে আজ পর্যন্ত কোন সৌজন্যমুলক/ দুঃখিত সূচক কোন যোগাযোগ/ বার্তা ও আসেনি উনাদের পক্ষ থেকে।

ইস্যুটা হয়তো ছোট হতে পারে কিন্তু পেশাদারিত্ব সঠিকভাবে হ্যানডেল করাটা মুখ্য।

এতো দিন পর এই বিষয়ে কথা বলার কারণ হচ্ছে, দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। যেহেতু কপিরাইটস ফটোগ্রাফারের থাকে, সুতরাং আমি জানি ছবিগুলো এখন অথবা ভবিষ্যৎ এ ব্যবহার হবে, সেখানে আমার নাম ও টাইটেল থাকুক আর না-ই থাকুক। তা আমি শেয়ার করি বা না-ই করি কিন্ত যেকোনো অভিজ্ঞতা তো আপনার জীবনে কিছু না কিছু নিয়েই আসে , ‘হয় শিক্ষা না হয় অগ্রগতি’।

( মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি’র ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত