৪৪ বছর পর ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২২, ১৭:২৪

৪৪ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত প্রমত্তা মধুমতি নদীর ইতনা এলাকায় এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার (১৩ নভেম্বর) বিকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি অনুষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে দুই জেলার (নড়াইল ও গোপালগঞ্জ) হাজারও মানুষ ভিড় করেন নদীপাড়ে। এছাড়া নদীতে ট্রলারযোগেও বিভিন্ন পেশার মানুষ উপভোগ করেন এ প্রতিযোগিতা। এ উপলক্ষে মেলাও বসেছিল নদীপাড়ে। হরেক রকম দোকানসহ বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির বেচাকেনা জমে উঠে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় করেন এখানে।

আয়োজকেরা জানান, সুবিশাল প্রমত্তা মধুমতি নদীর একপ্রান্তে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়ন। অন্যপ্রান্তে গোপালগঞ্জের রাতইল ইউনিয়নের চরভাটপাড়াসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম। দুই জেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত এই মধুমতি নদীতেই ৪৪ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো নৌকাবাইচ।

স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ বছর পর এমন আয়োজনে খুশি তারা। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অপসংস্কৃতি রুখতে নৌকাবাইচের পাশাপাশি সব ধরণের গ্রামীণ খেলাধুলা চর্চা বাড়াতে হবে। তাহলে তরুণ ও যুবসমাজ মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্ম থেকে দূরে থাকবে। তাছাড়া ফেসবুক, ইউটিউব, মোবাইল গেমস, আকাশসংস্কৃতিসহ নানা ধরণের অপচর্চা কমে আসবে।

ইতনা এলাকার বকুল মুন্সী বলেন, ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এখানে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলেও উদ্যোক্তার অভাবে দীর্ঘ ৪৪ বছর এ ধরণের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এবার ইতনা এলাকার বিশিষ্টজন ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেনের পৃষ্ঠপোষকতায় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন থেকে প্রতিবছর আমরা নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আশা করছি।

ইতনা নৌকাবাইচ উদযাপন কমিটির উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তে আমরা মিলনমেলার আয়োজন করেছি। দুই জেলার মানুষ ব্যাপক আনন্দ-উৎসব করেছেন। এখন থেকে প্রতিবছর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চাই। জনগণকে নির্মল আনন্দ দিতে চাই।

প্রতিযোগিতায় মাগুরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুর জেলার পাঁচটি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রায় দুই কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার কালু ফকিরের নৌকা, দ্বিতীয় হয়েছে মাগুরার কালিশংকরপুরের কবির হোসেনের নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে মাদারীপুরের বাহের আলীর নৌকা। প্রথম বিজয়ী নৌকাকে ফ্রিজ, দ্বিতীয় পুরস্কার ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন এবং তৃতীয় বিজয়ীকে ২৪ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত