বিদেশী শাড়ির দৌরাত্ম্যে ভালো নেই টাঙ্গাইলের তাঁতীরা

উৎসবে নারীদের পোশাক মানেই শাড়ি। আর শাড়ির অন্যতম আকর্ষণ টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।

টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাইরেও পৌঁছে গেছে। কিন্ত বর্তমানে বিদেশী শাড়ির দৌরাত্ব্যে কঠিন সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের তাঁতীরা। বিশেষ করে ভারতীয় শাড়ির বাজারে সহজলভ্যতা ও থ্রি পিসের প্রতি নারীদের আগ্রহের ফলে টাঙ্গাইল তাঁত শাড়ির বাজার কিছুটা কমতির দিকে। ফলে হতাশার ছায়া পুরো তাঁত শিল্পের সাথে সংশিষ্টদের।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধুলটিয়া, বাজিতপুর, সুরুজ, বার্থা, বামনকুশিয়া, তারটিয়া, ও দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল, চন্ডি, নলুয়া, দেওজান, নলশোঁধা, বিষ্ণুপুর, মঙ্গলহোড়, কালিহাতী উপজেলার বল্লা-রামপুর ঘুরে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁত পল্লীগুলোতে হতাশার চিত্র দেখা যায়। উচ্চমূল্য দিয়ে সুতা ক্রয় ও প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেশি হলেও ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শাড়ি বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। সংসারে বাড়তি আয় যোগ করতে কাজ করছেন পরিবারের মহিলারাও। তবে বেচাকেনা তেমন না হওয়ায় দুশ্চিন্তা আর হতাশা পিছু ছাড়ছে না তাঁত মালিকদের। 

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর থেকে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের চন্ডীতে কাজ করতে আসা তাঁত শ্রমিক শাহীন আলম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁত শিল্পে কাজ করছি। এখন অনেক তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে আমাদের কর্মসংস্থান কম। তাঁত শাড়ীর দামও কমে গেছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ধুলুটিয়া গ্রামের তাঁত মালিক সুরুজ মিঞা জানান, বর্তমানে শাড়িতে পয়সা কম, তার পরেও ব্যবসাটা ধইরা রাখছি। সুতার দাম আর কর্মচারীর মুজুরিতে মিলে হিসাব করে দেখা যায় শাড়ির লাভ কম। একটা শাড়ি তৈরী করতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগে। একটা শাড়ী তৈরী করতে ২ হাজার থেকে ২২ শো টাকা খরচ হলে আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। শাড়ি প্রতি লাভ থাকে ২ থেকে ৩ শত টাকা মাত্র।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড বেসিক সেন্টার টাঙ্গাইলের লিয়াজো অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা জানি টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। শুধু বিদেশী শাড়ি নয়, মানুষের পোশাক, বিশেষ করে থ্রি পিস ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় শাড়ির উপর প্রভাব পড়েছে। সম্প্রতি একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। যার মাধ্যমে তাঁত মালিকদের স্বল্প সুদে ঋন দেয়া যাবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ