জেনে নিন মুঘলদের সঙ্গে যুদ্ধ করা ‘বারো ভূঁইয়া’দের কথা

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:৩৯

সাহস ডেস্ক

মুঘল সম্রাট আকবর ও জাহাঙ্গীরের আমলে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল শাসন করতেন বেশ কয়েকজন জমিদার বা ভূস্বামী৷ এই রকম বারো জন এমন শাসক ছিলেন, যাঁদেরকে বোঝানো হতো ‘বারো ভূঁইয়া’ বলে। বাংলায় পাঠান কর্‌রানী বংশের রাজত্ব দূর্বল হয়ে পড়লে তখন বেশ কিছু অঞ্চলে জমিদার একেবারে স্বাধীন রাজার মতো রাজত্ব করতে থাকেন। এরা দিল্লির বাদশার বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি ছিলেন না৷ সম্রাট আকবর ১৫৭৫ সালে বাংলা দখল করার পর এই সকল জমিদার ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোগল সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধও করেন।

‘বারো ভুঁইয়া’ নামে পরিচিত এই সকল জমিদাররা হলেন:
ঈসা খাঁ – খিজিরপুর বা কত্রাভূ, প্রতাপাদিত্য – যশোর বা চ্যাণ্ডিকান, চাঁদ রায়, কেদার রায় – শ্রীপুর বা বিক্রমপুর, কন্দর্প রায় ও রামচন্দ্ররায় – বাক‌্লা বা চন্দ্রদ্বীপ, লক্ষ্মণমাণিক্য – ভুলুয়া, কুন্দরাম রায় ভূষণা বা ফতেহাবাদ, ফজল গাজী – ভাওয়াল ও চাঁদপ্রতাপ, হামীর মল্ল বা বীর হাম্বীর – বিষ্ণুপুর, কংসনারায়ন – তাহিরপুর, রামকৃষ্ণ – সাতৈর বা সান্তোল, পীতম্বর ও নীলম্বর – পুঁটিয়া, এবং ঈশা খাঁ লোহানী ও উসমান খাঁ লোহানীঃ – উড়িষ্যা ও হিজলী।

তবে অনেকেই মনে করেন, বারো ভূঁইয়া শব্দটি নির্ভুলভাবে বারোজন ভূঁইয়া বা প্রধানকে বোঝায় না; বহু সংখ্যক বুঝাতে এ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। হিন্দুদের কাছে বারো সংখ্যাটি ছিল পবিত্র। কোন কোন ক্ষেত্রে বারো সংখ্যাটি ব্যবহৃত হয়েছিল তা খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে পন্ডিতগণ ধর্মশাস্ত্রের কাহিনীগুলি পরীক্ষা করেন। তারা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য যারা যুদ্ধ করেছিলেন তাদের বোঝাতে বারো ভূঁইয়া শব্দটি ব্যবহার করেন।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের মুক্তিকামী যোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল বারোর চেয়ে অনেক বেশি। পরবর্তীকালে অবশ্য এ মতবাদ সংশোধন করে বলা হয় যে, যাঁরা মুগলদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন শুধু তাঁরাই বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিত। তাহলেও মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াইকারীদের সংখ্যা ছিল বারোর অধিক। ফলে এ দলও বারো ভূঁইয়াদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ হন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত