রোজ গার্ডেনের নাম হচ্ছে ‘ঢাকা নগর জাদুঘর’

প্রকাশ | ৩১ আগস্ট ২০১৮, ১২:০৩

অনলাইন ডেস্ক

পুরান ঢাকার ঋষিকেশ রোডে ঐতিহাসিক ভবন রোজ গার্ডেনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে রূপান্তর করা হবে জাদুঘরে। এর নাম রাখা হচ্ছে ‘ঢাকা নগর জাদুঘর’। প্রধানমন্ত্রী নিজেই নির্বাচন করেছেন এই নাম।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রোজ গার্ডেনকে সংরক্ষণ ও জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য ইতিহাসবিদ, রাজনীতিবিদ ও গবেষকদের পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে পুরো কাজ শেষ করতে লেগে যাবে একবছর।

দুই মাসের মধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের হাতে রোজ গার্ডেনের দায়িত্ব অর্পণের পরপরই এর কাজ শুরু হবে জানিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে অনুযায়ী এ ভবনকে নগর জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এই জাদুঘর হবে হবে মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকার ঐতিহ্য, আমাদের সভ্যতা ও নদীর ক্রমবিকাশ, মানুষের জীবনযাত্রার বিকাশ, পাশাপাশি রাজনীতির ধারা; সব মিলিয়ে অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হবে এটি।

আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, ইতিহাসের বিচারে মহানগরী ঢাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এর দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এটি শুধু বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তারও আগের হাজার বছরের ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাসের অনেক কিছুই আমরা হয়তো সুনির্দিষ্টভাবে ধারণ করতে পারিনি। রোজ গার্ডেন একটি ঐতিহাসিক ভবন। এখানে যেমন ব্যক্তির ইতিহাস রয়েছে, তেমন দেশেরও ইতিহাস আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যে দলটি নেতৃত্ব দিয়েছিল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই দল ও ব্যাক্তির স্মৃতিবিজড়িত এই রোজ গার্ডেন। আওয়ামী লীগের গোড়াপত্তন হয়েছে এই ভবনে। এখান থেকেই আওয়ামী লীগের যাত্রা শুরু। এমন একটি ঐতিহ্যবাহী ভবনকে রক্ষা ও ইতিহাসকে ধারণ করার জন্যই এটি কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সূত্র জানায়, ঢাকা নগর জাদুঘরে ঢুকতে টিকিট লাগবে। তবে প্রবেশমূল্য এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। জাদুঘর পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে জনবল। সেখানে সংরক্ষণের জন্য রাজধানীর যেকোনও নিদর্শন সংগ্রহের লক্ষ্যে চালানো হবে প্রচারণা, পত্রিকায় দেওয়া হবে বিজ্ঞাপন। প্রয়োজনে নিদর্শন কেনার ইচ্ছে আছে সরকারের।

২০১৮ সালের ৮ আগস্ট ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন’ অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বর্তমান মালিকদের কাছ থেকে রোজ গার্ডেন কিনে নেয় সরকার। পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত বাড়িটি কিনতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ ২ হাজার ৯০০ টাকা।

প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেনের দায়িত্বভার সরকার গ্রহণ না করলে একসময় হয়তো এটি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ সংরক্ষণের অভাবে এমন ঐতিহাসিক অনেক নিদর্শনই ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে।