ভ্যাক্সিন নিয়ে ৩ দফা দাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২১, ১৮:৩৪

সাহস ডেস্ক

গণটিকার অব্যবস্থাপনা ও ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রতারণা বন্ধ, প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী, অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ ও দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি গ্রহণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

৮ আগস্ট (রবিবার) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে দুপুর ১টায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সদস্য রেজোয়ান হক মুক্ত, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগর সংসদের সদস্য বিএম জুবায়ের প্রধান।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে যারা বসেন তাদের মাথায় মগজের বদলে সিমেন্ট রয়েছে। তা না হলে চরম অব্যাবস্থাপনার মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালিত হত না। আমরা দেখলাম যে প্রক্রিয়ায় একদিনের নোটিশে গ্রাম থেকে শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসা হল সে প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে সরকার করোনা মোকাবেলায় লকডাউন ঘোষণা করলেও গার্মেন্টস মালিকদের অনুরোধে শ্রমিকদের কথা বিবেচনা না করেই গার্মেন্টস কারখানা গুলো খুলে দিয়ে প্রমান করলো এ সরকার মুনাফাখোর ব্যবসায়ী স্বার্থ তাবেদারে ব্যস্ত। সরকার শত শত কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দিলেও প্রণোদনার অর্থ সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কাছে পৌছানোর আগেই বিভিন্ন আমলা চেয়ারম্যান মেম্বাররা ভোগ করার ঘটনা নতুন নয়। আমরা গতকাল দেখলাম টিকা দেয়ার সামর্থ ছিল ১০০ জন মানুষ কে কিন্তু সেখানে ১০০০ জন মানুষকে জড়ো করে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরো বাড়ানো হয়েছে যা চূড়ান্ত অব্যাবস্থাপনার স্বাক্ষ্য দেয়। এছাড়াও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের টিকা দেয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে।’

সভাপতি বক্তব্যে মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘গণটিকার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে সরকার। পরিকল্পনা ছাড়া স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি প্রদর্শন করে গণউৎসবে পরিণত করে সাধারণ মানুষ কে করোনার ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে করোনার টিকা বাণিজ্যের ঘটনাও ঘটেছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা। প্রতিনিয়ত আমাদের হৃদয়বিদারক সংবাদ এবং চিত্র দেখতে হচ্ছে। অথচ সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এমন পরিস্থিতি এড়ানো যেত। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে সরকার পর্যাপ্ত সময় পেয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। সরকার অক্সিজেন সেবা নিশ্চিত, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা এবং দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে পারত। কিন্তু সরকার সে পথে না হেঁটে করোনা মোকাবেলায় মানুষের হার্ড ইমিউনিটির উপর ভরসা রাখতে চাইল। আজ বাংলাদেশের জনগণ সরকারের এই উদাসীনতার খেসারত দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে তাকে পুঁজি করে সরকার দলীয় সংগঠন সমূহ নিদিষ্ট পরিমান টাকার বিনিময়ে রোগীর নিকট অক্সিজেন নিয়ে বাণিজ্য করছে। আমরা দাবি করেছিলাম সকল শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদানের মাধ্যমে সুস্পষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিলো ১৮ উর্দ্ধ বয়সের সকল শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০,০০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়েছে যা অতি নগণ্য। অনতিবিলম্বে জনস্বার্থ বিবেচনায় গণটিকার অব্যবস্থাপনা ও ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রতারণা বন্ধ, প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোড ম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’

সাহস২৪.কম/সজল/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত